ad720-90

টাওয়ার স্থাপনের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে: মোস্তাফা জব্বার


লাস্টনিউজবিডি,১৮ মে: ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, সারাবিশ্বে টাওয়ারের র‌্যাডিয়েশনের সর্বনিম্ন মান ২ দশমিক ৭ হাজার, সেখানে আমাদের টাওয়ারগুলোর বিকিরণের মান দশমিক ৫ বা দশমিক ৬ । তিনি বলেন, ফাইভ-জি চালু এবং টাওয়ার স্থাপনের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, যখন লাউয়াছড়াতে টেলিটকের টাওয়ার তৈরিতে বাধা দেওয়া হয়, তখন বিটিআরসির কাছে জানতে চেয়েছি আমাকে প্রকৃত চিত্র দেখান, যে আমরা সত্যিকার অর্থে যে প্রযুক্তির সম্প্রসারণ করছি তাতে মানুষ বা বণ্যপ্রাণি কিংবা পরিবেশের কোনো ক্ষতি হয় কি-না?

‘বিটিআরসি আমাকে স্পস্ট দেখিয়েছে, যেখানে পৃথিবীতে র‌্যাডিয়েশন মিনিমাম স্ট্যান্ডার্ড ২ দশমিক ৭ হাজার, সেখানে আমাদের টাওয়ারগুলোর বিকিরণের অবস্থা দশমিক ৫ বা দশমিক ৬ এর উপরে যায় না। অথচ আমাদের ঠেকানো হয় যেন আমরা প্রযুক্তির প্রসার ঘটাতে না পারি।’

বিভ্রান্তি না ছড়ানোর জন্য আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাদের মেনুফেস্টোতে বলা আছে, আমরা ২০২১-২৩ সালের সালে ফাইভ-জির যাত্রা শুরু করবো।

আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস উপলক্ষে শনিবার (১৮ মে) ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন মন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস বক্তব্য রাখেন। এছাড়া রবি, হুয়াওয়ে, নোকিয়া এবং আইএসপিএবি’র পক্ষ থেকে প্রবন্ধ উপস্তাপন করা হয়।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমরা এমন একটা সময়ে দাঁড়িয়ে আছি, যারা অপারেটর আছে তাদের বোধ হয় দিনক্ষণ গুণতে হবে কোন দিন ভয়েস কলের দিন শেষ হয়ে যায়। অর্থাৎ মানুষ ভয়েস কল না করে ডাটা দিয়ে কল করবে। এটি পরিপূর্ণরূপে আইওটি নির্ভর প্রযুক্তিতে সারাবিশ্বে বিকশিত হবে, তার প্রস্তুতি গ্রহণ করার জন্য আমাদের অপারেটরদের বিশাল একটি বিষয় হিসেবে কাজ করবে।

‘ফাইভ-জির আবির্ভাবের পরে প্রচলিত ব্রডব্যান্ডের প্রয়োজনীয়তা থাকবে বা তারা কি ব্যবসা করার প্রয়োজনীয়তা খুঁজে পাবে? ফাইভ-জি নির্ভর যে প্রযুক্তির যুগে পৌঁছেছি এর সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবোটিক সোসাইটি, বক্ল চেইনের কথা বলি। এগুলো বলার বড় প্ল্যাটফর্ম চতুর্থ শিল্প বিপ্লব।’

টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব যে সব দেশে এক রকম হবে তা কিন্তু নয়। শিল্পোন্নত দেশে মানুষ ছাড়া কাজ করার জন্য চ্যালেঞ্জ প্রযুক্তির, আর আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ মানবসম্পদকে ব্যবহার করা। প্রযুক্তি ব্যবহার করে যেন আমরা শিল্পোন্নত দেশের পর্যায়ে পৌঁছাতে পারি। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের মাধ্যমে সেই মান অর্জন করতে পারবো।

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য ফাইভ-জি নিয়ে সম্প্রতি কিছু কিছু বিভ্রান্তি ছড়াতে দেখেছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, অনেক ক্ষেত্রে বলার চেষ্টা করা হয়েছে- আমি যদি মোবাইল ফোন ব্যবহার করি তাহলে নাকি আমার স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়, আমি যদি টাওয়ার বসাই সেখানে নাকি বন-জঙ্গল ধংস হয়ে যায়, পাখির ডিম নাকি ফুটতে পারে না। যদি ফাইভ-জি আনি তাহলে পাখি সব মরে যাবে। অনুষ্ঠান মঞ্চে মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ অন্যরা‘এই ধরনের বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে- বিভ্রান্তিগুলোর পাশাপাশি তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করবেন যে এগুলো আসলে প্রযুক্তিকে ঠেকিয়ে রাখার এক ধরনের অপচেষ্টা।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক মোবাইল অপারেটরদের সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

পলক বলেন, দেশে ১৫ কোটি সিম ও ১০ কোটি গ্রাহকের প্রথম এবং প্রধান অভিযোগ হচ্ছে, কোয়ালিটি অব সার্ভিস। অপারেটরদের বিরুদ্ধে একটাই অভিযোগ। যদিও তারা অনেক কাজ করেছেন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য। কিন্তু যখন কলড্রপ হয়, ফোরজি থ্রিজিতে নেমে যায়, থ্রিজি টুজিতে নেমে যায় তখন আমাদের গ্রাহকদের বিরূপ মন্তব্য সরকারকে শুনতে হয়।

‘আমার প্রস্তাব থাকবে, বিটিআরসির মাধ্যমে প্রতিবছর থার্ড পার্টি থেকে একটি আইটি অডিট হওয়া প্রয়োজন লাইসেন্সধারীদের জন্য। তখন আমরা আসল চিত্রটা বুঝতে পারবো কোথায়, কার দোষ। এমএনও (অপারেটর) বলছে বিটিআরসি আমাদের কথা শুনছে না, বিটিআরসি বলছে আমরা বলছি সেটা মানছে না; এটার জন্য একটা থার্ড পার্টি আইটি অডিট হওয়া প্রয়োজন ‘

বিটিআরসি চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক বলেন, মান নিয়ে কোনো কম্প্রেমাইজ করতে চাই না। কিন্তু হয়ে যায়। এ ব্যাপারে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি- মান নির্ধারণের ব্যাপারে কোনো কম্প্রোমাইজ করা হবে না। ২০২১ সালের মধ্যে আমরা ফাইভ-জি দিতে পারবো বলে আশা রাখি।

Print Friendly, PDF & Email





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar