ad720-90

সাপে কাটলে তাৎক্ষণিক যা করবেন


ডিএমপি নিউজঃ সাপের কামড়ের  ঘটনাগুলো সাধারনত মে থেকে অক্টবর মাসে হয়ে থাকে। কারন এই সময় বৃষ্টি হয়, চারিদিকে পানি হয়। সাপ সাধারনত পানিতে থাকতে চায় না। তাই শুকনো জায়গার জন্য বাসা-বাড়িতে আসে। সেখানে কোন ভাবে মানুষের সাথে কন্টাক হলে, সাপ নিজেকে threatened মনে করলে তখন কামড় দেয়।

সাপে কামড়ালেই যে বিষক্রিয়া হয়, এমন ভাবার কোনও কারণ নেই। কারণ এমন কিছু সাপ আছে যাদের বিষ নেই। সাপে কামড়ানো চিকিৎসার ক্ষেত্রে কি সাপে কামড়েছে সেটা জানা থাকলে চিকিৎসার সুবিধা হয়। কয়েকটি লক্ষণ দেখলেই বুঝতে পারবেন সাপে কামড়ানো ব্যক্তির বিষক্রিয়া হয়েছে কি না। সাপে কামড়ালে এই লক্ষণগুলি থাকবে-

দুচোখের পাতা বন্ধ হয়ে আসবে, কামড়ের স্থানে প্রচুর জ্বালা যন্ত্রণা হবে, সব কিছু ঝাপসা দেখবে রোগী, ঢোক গিলতে অসুবিধা হবে, গলা বন্ধ হয়ে আসবে ও শরীর ফুলে ওঠবে।

সাপে কাটলে করণীয়
* আক্রান্ত ব্যক্তিকে আশ্বস্ত করতে হবে। বেশিরভাগ কবলিত মনে করেন মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী। তাই জরুরিভিত্তিতে তাকে সাহস দেয়া ও প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে যথাযথ স্থানে/হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠালে রোগী বিশ্বাস ও সাহস ফিরে পাবে।
* দংশিত স্থান কিছুতেই কাটাছেড়া করা উচিত নয়। কেবল ভেজা কাপড় দিয়ে কিংবা জীবাণুনাশক লোশন দিয়ে ক্ষতস্থান মুছে দিতে হবে।
* দংশনকৃত স্থান থেকে ভিতরের দিকে সাথে সাথে গামছা বা কাপড় দিয়ে কেবল একটি গিঁট (পায়ে দংশন করলে রানে, হাতে দংশন করলে কনুইয়ের উপরে) এমনভাবে দিতে হবে যেন খুব আটসাঁট বা ঢিলে কোনটাই না হয় (একটি আঙুল একটু চেষ্টায় ভেতরে যেতে পারে)।
* সাপে কাটার স্থান বেশি নড়াচড়া করা যাবে না। কারণ মাংসপেশী সংকোচন করলে বিষ দ্রুত শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।
* রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠাতে হবে। স্থানান্তরের সময় আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাঁটতে দেয়া যাবে না। রোগীকে কঁাধে, খাটিয়ায় বা দোলনায় করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
* সম্ভব হলে সাপের প্রজাতি ও বিষধর কিনা তা নিরূপণের জন্য সাথে নিতে হবে। সাপ পরিবহনে খেয়াল রাখতে হবে, সাপটি মৃত নাকি মরে যাওয়ার ভান করে আছে।
* জরুরি কোনো উপসর্গ না থাকলে বিষদাতের চিহ্ন পরীক্ষার জন্য দংশিত স্থান পরীক্ষা করতে হবে। বিষ দাঁতের দাগ প্রায় আধা ইঞ্চি ফাকে দুটি খোচা দেয়ার চিহ্ন হিসাবে অথবা কেবল আচড়ের দাগ হিসেবে দেখা যেতে পারে। দুটো বিষদাঁতের চিহ্ন পরিষ্কারভাবে থাকলে খুব সম্ভবত সাপটি বিষধর, তবু বিষদাঁতের চিহ্ন না থাকলে যে সাপটি বিষধর নয় তা বলা যাবে না।
* কামড়ানো স্থানে চামড়ার রঙের পরিবর্তন, কালচে হওয়া, ফুলে যাওয়া, ফোসকা পড়া, পচন ধরা ইত্যাদি হতে পারে। আবার কোনো পরিবর্তন নাও থাকতে পারে। প্রাথমিক চিকিৎসার ফলেও স্থানীয় পরিবর্তন হতে পারে।

সাপে কাটলে কখনো করা উচিত নয়
আমাদের দেশে অনেক ক্ষতিকর প্রাথমিক চিকিৎসা প্রচলিত যা ওঝা ও সর্প-চিকিৎসকরা দিয়ে থাকেন। এ থেকে অনেক সময় রক্তপাত, ধনুষ্টংকার ও পঁচনসহ অন্যান্য অসুবিধা হয়।
* দংশিত স্থান ধারালো ছুরি দিয়ে কেটে রক্তক্ষরণ করানো।
* একাধিক স্থানে খুব শক্ত করে গিঁট দেয়া।
* কার্বলিক এসিডজাতীয় রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে দংশিত জায়গা পোড়ানো।
* গাছ-গাছড়ার রস দিয়ে প্রলেপ দেয়া।
* বমি করানোর জন্য বিভিন্ন পদ্ধতির ব্যবহার।
* কানের ভেতর বা চোখের ভেতর কিছু ঢেলে দেয়া।

প্রতিরোধের চেষ্টা

* বেশিরভাগ সর্পদংশন করে থাকে পায়ে। কাজেই সাপ থাকতে পারে এমন জায়গায় হাটার সময় বিশেষ সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। জুতা, লাইট ইত্যাদি সঙ্গে রাখতে হবে।
* সাপ সামনে পড়ে গেলে ধীর-স্থির হয়ে দাড়িয়ে থাকা উচিত। সাপ প্ররোচনা ছাড়া কাটে করে না। (শুধু সাপ নয় পৃথিবীতে কোনো প্রাণীই অনর্থক ক্ষতি করে না)
* দুর্ভাগ্যবশত যদি সাপ কামড় দিয়ে থাকে, শান্ত থেকে কারো সাহায্য নিতে হবে। সর্পদংশনের পর কখনো দৌড়ানো উচিত নয়। এতে বিষ দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।

 

 

 

 





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar