মন্ত্রী বললেন ল্যাব নষ্ট, আইইডিসিআর বলছে কখনো নষ্ট ছিলো না
নিউজ টাঙ্গাইল ডেস্ক: বিভাগের মহাপরিচালক সুধাংশু শেখর ভদ্র করোনা পজিটিভ হয়েও তার পরদিন গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সামনে গিয়েছেন এবং তাকে এ বিষয়ে শোকজ করা হয়েছে। তবে তার সম্পর্কে বলতে গিয়ে ডাক, তার ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জানিয়েছেন, ১৩ তারিখ সকালে আইইডিসিআরের ল্যাবটি নষ্ট ছিল বলে রেজাল্ট দেরিতে এসেছে। কিন্তু আইইডিসিআর পরিচালক জানিয়েছেন, কোভিড সিচুয়েশনে আইইডিসিআরের ল্যাব কখনও বন্ধ বা নষ্ট ছিল না।
বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা সাংবাদিকদের বলেন, কোভিড সিচুয়েশনে তাদের প্রতিষ্ঠানের ল্যাব কখনও বন্ধ বা নষ্ট ছিল না। যদি ১৩ তারিখে ল্যাব নষ্ট থাকে, তাহলে আমরা কী করে রিপোর্ট দিলাম বলে পাল্টা প্রশ্ন করেন অধ্যাপক সেব্রিনা ফ্লোরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডাক ও টলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার সাংবাদিকদের কাছে বলেন, আমিসহ ডিজি একই সঙ্গে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) করোনা টেস্টের জন্য নমুনা জমা দেই। ১৪ তারিখ বিকালে আমরা সেই নমুনার রেজাল্ট হাতে পাই। তাতে আমি নেগেটিভ এবং ডিজি পজিটিভ হন। তিনি বলেন, আইইডিসিআরের দেওয়া রেজাল্ট শিটে ১৩ তারিখ উল্লেখ থাকলেও আমরা কেউই ১৩ আগস্ট রিপোর্ট পাইনি। আমরা রিপোর্টটি হাতে পেয়েছি ১৪ আগস্ট বিকালে। গণভবনে অনুষ্ঠানটি ছিল ১৪ আগস্ট সকালে। ১৩ তারিখ সকালে আইইডিসিআর ল্যাবটি নষ্ট ছিল বলে রেজাল্ট দেরিতে এসেছে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
মোস্তাফা জব্বার জানান, ডাক বিভাগের ডিজির কোনও উপসর্গও ছিল না। তিনি যদি কোনও অনুমানও করতেন যে করোনা পজিটিভ হতে পারেন, তাহলে ভদ্র নিজেই ওই অনুষ্ঠানে যাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখতেন বলে আমি বিশ্বাস করি। ডিজি দিনরাত মিলিয়ে করোনাকালে অফিস করেছেন, নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্বশীলতার স্বাক্ষর রেখেছেন তিনি। তার ওপর আমার আস্থা রয়েছে। এটি আমার মন্ত্রী হিসেবে তার সম্পর্কে অভিমত।
আইইডিসিআরের রিপোর্ট বিষয়ে মন্ত্রী আরও জানান, একটি ল্যাব যেকোনও সময় নষ্ট হতেই পারে। কিন্তু সেটি মেরামতের পরপরই সঠিক রিপোর্ট দেবে এমন সিদ্ধান্তে শতভাগ নিশ্চিত হওয়া ঠিক নয়। ভুলও তো হতে পারে। আমি বলছি না যে ভদ্রকে দেওয়া আইইডিসিআরের রেজাল্ট ভুল। কিন্তু রিপোর্ট ভুল হওয়ার তো রেকর্ড আছে আইইডিসিআরের। এ জন্যই আমি তাকে আবারও অন্য কোনও প্রতিষ্ঠানে টেস্ট করাতে বলেছি বলে জানান ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
তবে রিপোর্টের তারিখ নিয়ে মন্ত্রীর দাবি নাকচ করে দেন অধ্যাপক সেব্রিনা ফ্লোরা। তিনি বলেন, প্রতিবেদনে উল্লেখিত তারিখ অনুযায়ীই রোগী রিপোর্ট পেয়ে থাকেন। আমাদের ফলাফল রিপোর্টে যে তারিখ দেওয়া হয় সেটা অটো জেনারেট করা। রিপোর্ট আপলোড করার পর সেটা অটো জেনারেট হয়। অর্থাৎ, কারও রিপোর্টে যদি ১৩ তারিখের কথা উল্লেখ থাকে তাহলে তার কাছে সেটা সেদিনই যাবে। কোনও কারণে যদি তার ইমেইল আইডি ভুল থাকে অথবা স্প্যামে গিয়ে থাকে, উনি চেক না করেন- তাহলে ভিন্ন কথা। এছাড়া সবারই রিপোর্ট সময় মতো পৌঁছায়।
প্রসঙ্গত, করোনা টেস্টে পজিটিভ হওয়ার পরও গণভবনে গিয়ে হাজির হয়ে প্রধানমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন ডাক বিভাগের মহাপরিচালক সুধাংশু শেখর ভদ্র (এস এস ভদ্র)। গত ১৪ আগস্টে জাতির জনকের ৪৫তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ স্মারক ডাকটিকিট, ডেটা কার্ড উন্মোচন ও বিশেষ খামের উদ্বোধনী কাজে গণভবনে যান তিনি।
Comments
So empty here ... leave a comment!