ad720-90

যেন ভ্রমণের ট্রেলার


বেড়ানোর সময় অনেক ভিডিও করা হয়। পরে সম্পাদনা করে দারুণ এক ভিডিওচিত্র বানিয়ে ফেলা সম্ভব। ছবি: সংগৃহীতখেলা শেষে যেমন হাইলাইটস দেখায়, তিন মিনিটে তিন ঘণ্টার ম্যাচের সারসংক্ষেপ—তেমন চুম্বক অংশ চায় সবাই। ফেসবুকে বসে বসে বন্ধুরা আপনার ভ্রমণের এক হাজার একটা ছবি দেখবে, এতটা আশা করা ঠিক না। আর সে কারণেই হয়তো কোথাও থেকে বেড়িয়ে আসার পর ধারণ করা ছোট ছোট সব ফুটেজের সঙ্গে ছবি জুড়ে দিয়ে ভ্রমণের ভিডিও তৈরির চল দেখা যাচ্ছে এখন। যেন পুরো ভ্রমণের ট্রেলার।

আমার নিজের অভিজ্ঞতা বলা যাক। দেশের ৫৭ জেলা ঘোরা হয়ে গেছে। কোথাও গেলে আগে শুধু ছবি তোলা হতো। এখন সঙ্গে ছোট ছোট ভিডিও ধারণ করি। ডিজিটাল ক্যামেরায় সবচেয়ে ভালো হয়। তবে স্মার্টফোনেও কাজটা সারা হয়। মোটামুটি সব ফোনেই এখন কমপক্ষে এইচডি (৭২০ পি) রেজল্যুশনের ভিডিও ধারণের সুবিধা থাকে। ভ্রমণ শেষে বাসায় ফিরলে সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়ত ছবি-ভিডিও দেখতে। বন্ধুরাও জানতে চাইত অনেক কিছু—জায়গাটা কেমন? কী কী আছে? তারা গেলে থাকবে কই? এমন নানা প্রশ্ন। অনেকে আছেন ঘুরতে যেতে পারেন না, ভিডিওগুলো দেখেই তাঁদের প্রশান্তি (কিংবা আফসোস)।

কোথাও গেলে অনেক ছবি, অনেক ভিডিও করা হয়। সব তো আর দেখানো সম্ভব হয় না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সব দেওয়া হয় না। সে কারণেই সব ভিডিও ক্লিপ থেকে নির্বাচিত অংশ এবং প্রয়োজনে স্থিরচিত্র ও শব্দ যোগ করে ভিডিও বানানো শুরু করি। এতে পুরো জায়গাটা সম্পর্কে একটা ধারণা দেওয়া যায়। আমার নিজেরও দেখা হলো, আবার অন্যদের দেখার সুযোগ করেও দেওয়া হলো।

আনন্দ যেন মাটি না হয়

আমি সব সময় মাথায় রেখেছি ক্যামেরার চোখে দেখতে গিয়ে আমার ভ্রমণের আনন্দটা যেন মাটি না হয়। এ জন্য আমার পদ্ধতিটা হলো, যাওয়ার সময় আমি দেখতে দেখতে যাই, চারপাশটা উপভোগ করি। চোখে ফ্রেম সাজাই। ফেরার পথে ভিডিও করি। এভাবে আমি অসংখ্য ভিডিও করেছি। মানুষ দেখেছে। বাহবা দিয়েছে। আমার ভিডিও দেখে অনেকে ঘুরতেও গিয়েছেন সেসব জায়গায়।

ফেসবুক-ইউটিউব এখন অনেক শক্তিশালী মাধ্যম। নতুন কোথাও ঘুরতে গিয়ে সেখানকার ভিডিও জোড়া লাগিয়ে সুন্দর একটা প্রামাণ্যচিত্র বানিয়ে আপলোড করলে দেশ-বিদেশে যে যেখানেই থাকুন, দেখতে পারেন সেসব ভিডিও। জানতে পারেন অনেক কিছু। দেশের বাইরেও নিজের দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখানো যায়।

যেভাবে বানাবেন

ডিএসএলআর ক্যামেরা, হ্যান্ডিক্যাম, ডিজিটাল ক্যামেরা কিংবা স্মার্টফোন দিয়ে ভিডিও ধারণ করতে পারেন। ভিডিওর জন্য সেরা ক্যামেরার স্মার্টফোনের মধ্যে আইফোন, পিক্সেল, গ্যালাক্সি ও ওয়ানপ্লাসের সর্বশেষ মডেলগুলো আছে। তবে এখন মোটামুটি মানের যেকোনো স্মার্টফোনেই দারুণ ভিডিও করা যায় যায়। ভিডিও কেমন হবে, সেটা আপনার সৃজনশীলতার ওপর নির্ভর করে।

আর আলাদা ক্যামেরায় তো ভিডিও ভালো হবেই। ক্যামেরা কিনতে চাইলে সনির চলমান আলফা ফেস্টিভ্যালের কথা মাথায় রাখতে পারেন। সনি-‍র‌্যাংগসের উপব্যবস্থাপক (বিপণন) মোহাইমিনুল এছাহাক বলেন, ‘দ্বিতীয়বারের মতো শুরু হয়েছে আলফা ফেস্টিভ্যাল। ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত আলোকচিত্রীদের নিয়ে ১৮টি কর্মশালার আয়োজন থাকছে। আর ক্যামেরার সঙ্গে তো ছাড় ও উপহার থাকছেই। এবারের উৎসবে জি-মাস্টার সিরিজের ২৪ মিলিমিটার এফ ১.৪ অ্যাপারচারের আলফা লেন্স বাজারে এনেছি, দাম পড়বে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৯০০ টাকা।’

উৎসবের সময়ে ৪৩ হাজার ৯০০ টাকার সনি আলফা ৫১০০ মডেলের মিররলেস ক্যামেরা পাওয়া যাবে ৩৪ হাজার ৯০০ টাকায়। আলফা ৬০০০ মডেলের ক্যামেরা পাওয়া যাচ্ছে ৪০ হাজার ৯০০ টাকায়, আগে দাম ছিল ৪৮ হাজার ৯০০ টাকা। ৭৯ হাজার ৯০০ টাকায় আলফা ৬৩০০, ১ লাখ ৭ হাজার টাকায় আলফা ৬৫০০, ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকায় আলফা সেভেন এআর মার্ক টু, ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকায় আলফা সেভেন এআর মার্ক থ্রি এবং ১ লাখ ৯৫ হাজার টাকায় আলফা সেভেন মার্ক থ্রি পাওয়া যাবে। আবার ই-মাউন্ট লেন্সগুলোতেও ছাড় চলছে।

এর বাইরে ব্যবহারকারীদের মধ্যে ক্যানন ও নাইকনের ক্যামেরাগুলোও বেশ জনপ্রিয়।

সম্পাদনা-পর্ব

কাজটা মোটেও কঠিন না। নতুনদের জন্য ব্যবহারবান্ধব অনেক অ্যাপ এখন বিনা মূল্যেই পাওয়া যায়। কম্পিউটারের জন্যও এমন সফটওয়্যার আছে।

ধাপ ১: অ্যাপ নামিয়ে নিন

উইন্ডোজ টেন অপারেটিং সিস্টেমে মুভি মেকার ১০ নামিয়ে নিতে পারেন (ঠিকানা: bit.ly/2P9bzTf)। ম্যাকওএস, আইফোন বা আইপ্যাডে আইমুভি (ঠিকানা: www.apple.com/imovie) যথেষ্ট। অ্যান্ড্রয়েডের ফিলমোরা গো (ঠিকানা: bit.ly/2E75HIW), ভিভা ভিডিও (ঠিকানা: bit.ly/2RqVQAR) কিংবা অ্যাডোবি প্রিমিয়ার ক্লিপ (ঠিকানা: bit.ly/2RmVhId) ইনস্টল করে নিন। অ্যাপগুলোর নকশা, মানে ইউজার ইন্টারফেস আলাদা হতে পারে, তবে কাজের ধরন এক।

ধাপ ২: ফাইল ইমপোর্ট করুন

মেমোরি কার্ড থেকে ছবি ও ভিডিও ক্লিপ নামিয়ে নিন। কম্পিউটারে প্রথমে ফাইলগুলো ডেটা কেব্‌ল দিয়ে হার্ডডিস্কে নিয়ে নিতে হবে। এরপর সফটওয়্যারে ইমপোর্ট করতে হবে।

ধাপ ৩: দৃশ্যগুলো সাজিয়ে নিন

পুরো ভিডিওতে আপনাকে একটা গল্প বলতে হবে। সে গল্পের অংশগুলো, মানে ফুটেজগুলোর কোনটি আগে, কোনটি পরে, তা সাজিয়ে নিন। অপ্রয়োজনীয় অংশ কেটে (ট্রিম) ফেলুন।

ধাপ ৪: লেখা-আবহ যোগ করুন

আবহ বা ইফেক্ট যোগ করতে পারেন। আবার কোথাও সাবটাইটেল বা লেখা যোগ করতে হতে পারে।

ধাপ ৫: অডিও সম্পাদনা

ভিডিও ধারণের সময় অনেক সময় ভালো শব্দ ধারণ সম্ভব হয় না। সে ক্ষেত্রে আলাদা করে অডিও যোগ করলে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে। আবার নিজের কণ্ঠও রেকর্ড করে যোগ করে দিতে পারেন। পুরো কাজে সন্তুষ্ট হলে সংরক্ষণ করুন।

 





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar