ad720-90

অ্যাপে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পর্যটনকেন্দ্র


দুই তরুণ অ্যাপে তুলে ধরেছেন এক জেলার দর্শনীয় স্থান। ছবি: স্মার্ট সময়‘যে যেখানে যে অবস্থায় টিভি সেটের সামনে…’

বিনোদনমূলক ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র শুরুতে এভাবে সাদর সম্ভাষণ জানান উপস্থাপক হানিফ সংকেত। যে অ্যাপ নিয়ে এই লেখা, সেখানেও নির্মাতারা ব্যবহারকারীদের সাদর সম্ভাষণ জানিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পর্যটনকেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখার। যে যেখানে যে অবস্থায় থাকুন—সমস্যা নেই। হাতে স্মার্টফোন থাকলেই হলো।

অ্যাপটির নাম ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া এআর’। এআর মানে অগমেন্টেড রিয়েলিটি—বাস্তব দুনিয়ার সঙ্গে কম্পিউটারে তৈরি তথ্যচিত্র যোগ করে পরাবাস্তব অভিজ্ঞতা দেওয়ার প্রযুক্তি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার দর্শনীয় এলাকাগুলো ত্রিমাত্রিক এবং ইন্টার–অ্যাকটিভ উপায়ে দেখানো হয় এতে। অ্যাপটি ‘আমরাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে তৈরি হয়েছে। বানিয়েছেন দেবাশীষ সরকার ও মহিবুল হক নামের দুই তরুণ। ২৫ মার্চ দুপুরে প্রথম আলোর কার্যালয়ে কথা হলো দুজনের সঙ্গে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া এআর অ্যাপে আপাতত এই জেলার পাঁচটি পর্যটনকেন্দ্র যুক্ত করা হয়েছে। কোল্লাপাথর শহীদ সমাধিস্থল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহীদ স্মৃতিসৌধ, বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোহাম্মদ মোস্তফা কামালের সমাধি, আরিফাইল মসজিদ ও মাজার এবং কালভৈরব মন্দির। সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন নির্মাতারা

সমতলে স্থানগুলো

অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের জন্য গুগল প্লেস্টোরে পাওয়া যাচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া এআর (ঠিকানা bit.ly/bbariaar)। নামিয়ে ইনস্টল করার পর শুরুতেই ব্যবহারবিধি দেখাবে। পর্যটনকেন্দ্রগুলো ত্রিমাত্রিক আকারে দেখার জন্য সমতল কোনো বস্তু দরকার। বইয়ের প্রচ্ছদ হতে পারে, ভিজিটিং কার্ড হতে পারে, এক ফালি কাগজ হলেও সমস্যা নেই। শুধু মাথায় রাখতে হবে, সেখানে যেন পর্যাপ্ত আলো থাকে। এরপর অ্যাপ চালু করে ওপর থেকে সোজাসুজি সেই সমতলে ক্যামেরা তাক করতে হবে। অনেকটা ৯০ ডিগ্রি কোণে বলা যায়।

পর্দায় চারদিকে হলুদ রঙের দাগ দেখাবে। সমতল বস্তুটি সে দাগের মধ্যে রাখবেন। পর্দার ওপর দিকের লম্বা বার সবুজ হয়ে গেলে বুঝবেন সবকিছু ঠিকঠাক আছে। এরপর ছবি তোলার শাটার বোতাম চাপলেই পর্দায় ভেসে উঠবে কোল্লাপাথর শহীদ সমাধিস্থলের ত্রিমাত্রিক চিত্র। চাইলে স্মার্টফোন ঘুরিয়ে–ফিরিয়ে চারদিকটা দেখে নিতে পারবেন। ফোন কাছে নিয়ে গেলে সমাধিস্থল বড় আকারে দেখাবে। দূরে নিয়ে গেলে ছোট হয়ে যাবে। আবার সেই সমতল বস্তু, মনে করুন একটি বই, ঘুরিয়ে–ফিরিয়েও পর্দায় পর্যটনকেন্দ্রগুলোর চারদিক দেখে নেওয়া যাবে। আর সেটাই অগমেন্টেড রিয়েলিটির কেরামতি।

পাঁচটি সমাধিস্থলের তালিকা পর্দার ওপরের দিকে পাবেন। যেটি দেখতে চান, সে আইকনে ট্যাপ করতে হবে। সঙ্গে সংক্ষিপ্ত ধারাবর্ণনাও যুক্ত করা হয়েছে। আবার লেখা আকারেও সে বিবরণ পাওয়া যাবে। আরেকটি মজার সুবিধা হলো পর্যটনকেন্দ্রগুলো রাত বা দিনের বিভিন্ন সময়ে কেমন দেখায়, স্লাইডার টেনে তা-ও দেখা যাবে। রাতের বেলায় যেমন আলো জ্বেলে দেখানো হয়।

পর্যটনের প্রসারে

দেবাশীষ আর মহিবুল বেশ সময় নিয়ে অ্যাপের বিভিন্ন সুবিধা দেখালেন। জানালেন, বছর দেড়েক হলো তাঁরা বাগবাইট স্টুডিও নামের একটি স্টার্টআপ শুরু করেছেন। দেবাশীষ প্রধান নির্বাহী, সঙ্গে লিড ডেভেলপার হিসেবে কাজ করেন। প্রোগ্রামিংয়ের দিকটা দেখেন মহিবুল। একই সঙ্গে ইউজার ইন্টারফেস (ইউআই) নকশাকার। তাঁদের সঙ্গে থ্রিডি আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করছেন মাহমুদা ফেরদৌস। অগমেন্টেড রিয়েলিটি-নির্ভর গেম তৈরিতেই আগ্রহ বেশি।

পর্যটন নিয়ে কাজ কেন? দেবাশীষ বললেন, ‘আমরা মূলত গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী কাজ করে থাকি। এবার চেয়েছিলাম ব্যবহারকারীদের জন্য কিছু করতে। দেশের পর্যটন খাত নিয়ে এমন কাজ আগে হয়নি। সে জন্যই এটাতে আমাদের এত আগ্রহ।’ মহিবুল যোগ করলেন, ‘ইচ্ছা আছে ধীরে ধীরে দেশের অন্যান্য জেলার দর্শনীয় স্থানগুলোও এক অ্যাপের আওতায় আনার।’





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar