ad720-90

শেষ হয়ে যাচ্ছে উভচরেরা!


ছবি: এএফপিপ্রাণঘাতী ব্যাধি সাফ করে দিচ্ছে বিশ্বের সব উভচর প্রাণী। রোগের মরণথাবায় এর মধ্যে প্রায় ৯০ প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার চিলির সান্তিয়াগোতে প্রাণীর স্বাস্থ্যবিষয়ক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এ তথ্য প্রকাশ করে এসব উভচর প্রাণীর অস্তিত্ব–সংকটের বিষয়ে সতর্ক করা হয়। একজন মার্কিন জীববিজ্ঞানী এ বিষয়ে ছিলেন সোচ্চার। এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘জলজ প্রাণীর স্বাস্থ্য’।
কাইট্রিডিওমাইকোসিস রোগটি সৃষ্টি হয় ব্যাট্রাকোকাইট্রিয়াম ডেনড্রোবাটিডিস নামক একধরনের ছত্রাক থেকে। ব্যাঙ, ব্যাঙাচিসহ অন্যান্য উভচর প্রাণীর ত্বকে সংক্রমণ ছড়ায় এই ছত্রাক। উভচরেরা ত্বকের মাধ্যমে শ্বাস নেয়, শরীরের পানির স্তর নিয়ন্ত্রণে রাখে। কাজেই সেই ত্বক যখন আক্রান্ত হয়, তখন তারা ধীরে ধীরে হৃদ্‌যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যায়।

গত মার্চে ছত্রাকের বিধ্বংসী প্রভাব নিয়ে একটি গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। এই প্রবন্ধের অপর লেখক জোনাথন কোলবি দুঃখ করে বলেন, বন্য প্রাণীর মধ্যে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়া রোগের ক্ষেত্রে এটাই প্রথম। তিনি জানান, ‘রোগটি বিশ্বের ৬০টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে, এটিই চিন্তার বিষয়।’ গত পাঁচ বছরে মারাত্মক সংক্রামক রোগটির কারণে বিলুপ্ত হয়েছে ৯০ প্রজাতির প্রাণী, ঝুঁকিতে রয়েছে আরও প্রায় ৫০০ প্রজাতি।

প্রাণী বাণিজ্যবিষয়ক নিয়ম এবং বিমানবন্দরে যথাযথ নজরদারি না থাকায় ছত্রাকটি সারা বিশ্বে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই বন্য প্রাণী আমদানি করার কারণে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ফাঙ্গাস সংক্রমণ ঠেকানোর কোনো উপায় নেই। বিশ্বের প্রায় ৪০ জন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞের সঙ্গে গবেষণা করা কোলবি বলেন, ‘এই সমস্যার একমাত্র সমাধান হতে পারে বিধিনিষেধ আরোপ। বিশ্বায়ন মানুষের জন্য কল্যাণকর হলেও প্রাণীদের ওপর তা প্রাণঘাতী প্রভাব ফেলছে।’ শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই প্রতিবছর পাঁচ কোটি উভচর প্রাণী নানা উপায়ে প্রবেশ করে।

লাতিন আমেরিকা আর অস্ট্রেলিয়ার দেশগুলো এখন সবচেয়ে ঝুঁকির মুখে। এশিয়ার সঙ্গে পশু বাণিজ্যে এগিয়ে রয়েছে এই অঞ্চলগুলো। ছত্রাকটির উৎপত্তি ও বিস্তারের প্রধান ঘাঁটি হিসেবে এশিয়াকে দোষারোপ করা হচ্ছে। বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস জেনেটিক মিউটেশনের মধ্য দিয়ে ছত্রাকটি আরও ভয়ংকর রূপ ধারণ করতে পারে।

জলজ পরিবেশের সুরক্ষায় প্রধান ভূমিকা পালন করে উভচরেরা। ম্যালেরিয়া আর জিকা ভাইরাসের বাহক মশা খেয়ে তারা মানুষের যথেষ্ট উপকার করছে।





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar