নীতিমালা হচ্ছে ফাইবার অপটিক ক্যাবল রক্ষায় ‘রাস্তা কাটার’
লাস্টনিউজবিডি,১৬ মে: বিভিন্ন প্রয়োজনে ঢাকাসহ সারাদেশে রাস্তা কাটা হয়। কোনও নিয়ম বা নীতিমালা না মেনে রাস্তা কাটা এবং ভূগর্ভস্থ কাজের ফলে টেলিযোগাযোগ খাতের বিভিন্ন অবকাঠামোসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ কাটা পড়ে। ফলে প্রায়ই দেখা যায় সংশ্লিষ্ট এলাকায় মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক সমস্যা।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ইন্টারনেট ব্যবহারে সমস্যা দেখা দেয়। ফাইবার অপটিক ক্যাবল দামি এবং গুরুত্বপূর্ণ হওয়া সত্বেও কেবল নীতিমালা না থাকার কারণে বার বার কাটা পড়ে। এসব কারণে ফাইবার অপটিক ক্যাবলকে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সম্পদের মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে। যেখানে সেখানে রাস্তা কাটায় এটা যেন নষ্ট না হয় সেজন্য একটি নীতিমালা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।
জানা যায়, সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর নিজ নিজ প্রয়োজনে রাস্তা কাটা হলেও ফাইবার অপটিক ক্যাবলকে কোনও গুরুত্বই দেওয়া হয় না। দিনে দিনে এই হার বাড়তে থাকায় টেলিযোগাযোগ খাতের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এসব সমস্যা রীতিমতো হুমকির পর্যায়ে চলে যাচ্ছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলো আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়লেও ক্যাবল কাটার দায় কেউ নিচ্ছে না। ক্যাবল কাটা পড়ায় টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তির সেবার জন্য তা বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এসব কারণে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা তৈরি করছে। কমিশনের ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন্স বিভাগ প্রণয়নকৃত খসড়া নীতিমালার শিরোনাম ‘জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হিসেবে অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক সুরক্ষার জন্য ভূগর্ভস্থকাজের অনুমোদন সংক্রান্ত নীতিমালা’। যদিও নীতিমালা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় নীতিমালা প্রণয়নের কাজে সহযোগিতা করছে।
জানা গেছে, নীতিমালার সংজ্ঞায় তিনটি পক্ষ থাকছে। একটি হলো প্রত্যাশী সংস্থা- যারা প্রয়োজনে ভূগর্ভস্থ কাজের বা রাস্তা কাটার অনুমোদন চেয়েছে। অনুমোদনকারী সংস্থা হিসেবে থাকছে যারা এই কাজের জন্য অনুমোদন দেওয়ার এখতিয়ার রাখেন। যেমন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিফতর, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ। আর অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপনকারী সংস্থা হিসেবে থাকছে ক্যাবল প্রতিস্থাপনকারী বা রক্ষণাবেক্ষণকারী সংস্থা তথা বিটিআরসি থেকে লাইসেন্সধারী অপারেটরগুলো। খসড়া নতিমালায় বলা হয়েছে, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করবে এবং তাদের অনুমোদন না নিয়ে কেউ রাস্তা কাটা বা খুঁড়তে পারবে না।
সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়ার পরও ফাইবার অপটিক ক্যাবল কেটে গেলে সেবা প্রত্যাশী সংস্থা ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবে বলে খসড়া নীতিমালায় উল্লেখ রয়েছে। এসব দেখা এবং তদারকির জন্য কেন্দ্রীয় মনিটরিং সিস্টেম প্রতিষ্ঠার জন্যও নীতিমালায় বলা হয়েছে।
জানতে চাইলে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘নীতিমালা হওয়া খুবই প্রয়োজন। সব কিছুরই একটা নিয়ম থাকতে হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘ফাইবার অপটিক ক্যাবল একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সাম্প্রতিককালে অতীতের তুলনায় অনেক বেশি হারে রাস্তা কাটা হয়। অতীতে কদাচিত হতো। উন্নয়নমূলক কাজ করতে গেলেই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। বিষয়টি আমাদের ভাবনায় ফেলেছে।’ এখন আমরা ফাইবার ছাড়া চলতে পারি না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘বিষয়টি (যেনতেনভাবে রাস্তা কাটা) সংশ্লিষ্টদের নজরে এসেছে। এটা রাষ্ট্রীয় একটি বিষয়। ফাইবার অপটিক ক্যাবলকে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ঘোষণা করে সাবধানতার সঙ্গে রাস্তা কাটার কথা আমরা বলেছি।’
মন্ত্রী জানান, ‘ফাইবার অপটিক ক্যাবলের পুরো ম্যাপ আছে। রাস্তা কাটার সময় ম্যাপ দেখলেই তো হয়। সুতরাং নীতিমালা হলে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ তা মেনে চলবেন। সব পক্ষ সব কিছু মেনে চললে আর ক্যাবল কাটা পড়বে না।’
এ বিষয়ে দেশে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিএবির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হক বলেন, ‘ক্যাবল কাটা পড়লে সেবা বাধাগ্রস্ত হয়। নীতিমালা থাকা উচিত। সেই সঙ্গে যে ক্যাবল বিছানো হয়েছে তার ম্যাপও থাকা প্রয়োজন। তাহলে রাস্তা কাটার সময় কোনও সমস্যা হবে না।’ তিনি সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে ফাইবার অপটিক ক্যাবল বিষয়ে একটি ডাটাবেজ তৈরির আহ্বান জানান।
খসড়া নীতিমালায় ফাইবার অপটিক ক্যাবল নেটওয়ার্ককে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হিসেবে ঘোষণা করে পরিপত্র জারি করা সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, গত বছর প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সভাপতিত্বে ডিএনসিসির এক বৈঠকে ফাইবার অপটিক ক্যাবলকে জাতীয় সম্পদ ও জরুরি সেবা উপাদান হিসেবে ঘোষণা করে এ সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত হয়।
অন্যদিকে মোবাইল ফোন ও এনটিটিএন অপারেটরগুলোর হিসাব অনুসারে, রাজধানীতেই প্রতি মাসে গড়ে অর্ধশত বা এর চেয়ে বেশিবার ফাইবার অপটিক ক্যাবল কাটা পড়ে। সারাদেশে এর পরিমাণ শতাধিক বলে জানা গেছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের একটা সড়ক খনন সেল রয়েছে। বিভিন্ন সেবা সংস্থার আবেদনের প্রেক্ষিতে ওই সেলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ও কাজের ধরন অনুযায়ী সময় দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে রাস্তা কাটার কারণে যে ক্ষতি হয়েছে সেকারণে খননকারী সংস্থা সেই ক্ষতিপূরণ দেয়। এক্ষেত্রে যদি কোনও ফাইবার অপটিক ক্যাবলসহ সরকারের অন্য কোনও সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের কোনও লাইনের ক্ষতি হয় তাহলে সড়ক খনন নীতিমালা অনুযায়ী খননকারী সংস্থাকে ওই ক্ষতিপূরণ দিতে হয়।’
ডিএসসিসির নগর পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলাম বলেছেন, ‘একজন নগর পরিকল্পনাবিদ হিসেবে আমি বলতে পারি হঠাৎ করে যত্রতত্র খোঁড়াখুঁড়ি করা উচিত না। নির্ধারিত পরিকল্পনা মাফিক খনন করা হলে জনগণের ভোগান্তি হবে না, সরকারের সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোও ক্ষতি হবে না।’
লাস্টনিউজবিডি/এসএস
- নীতিমালা হচ্ছে ফাইবার অপটিক ক্যাবল রক্ষায় ‘রাস্তা কাটার’
- টিভি দেখা যাবে ক্যাবল ছাড়াই
- প্রধানমন্ত্রী নেতৃত্বে ডিজিটাল শিল্প বিপ্লব যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ: মোস্তাফা জব্বার
- হোয়াটসঅ্যাপে ‘মিসড কল’ দিয়ে গোপন তথ্য চুরি!
- হঠাৎ উধাও ফেইসবুক গ্রুপ, অ্যাডমিনদের অ্যাকাউন্ট
- ফের ফেসবুক-ম্যাসেঞ্জার বন্ধ!
সর্বশেষ সংবাদ
- জম্মু-কাশ্মীরে অভিযান, ভারতীয় সেনাসহ নিহত ৪
- নীতিমালা হচ্ছে ফাইবার অপটিক ক্যাবল রক্ষায় ‘রাস্তা কাটার’
- সৌদি আরব গ্রিন কার্ড চালু করছে
- শক্তি বাড়াতে রোহিঙ্গাদের অধিক সন্তান
- সাইবার নিরাপত্তায় যুক্তরাষ্ট্রে জরুরি অবস্থা জারি
- নাইজারে জঙ্গি হামলায় ১৭ সেনা নিহত
- ‘বন্দুকযুদ্ধে’ এক যুবক নিহত
- টিভি দেখা যাবে ক্যাবল ছাড়াই
- ইরাকের দূতাবাস থেকে কর্মী সরিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
- আগুন দিয়েছে নিজের ক্ষেতে, আপনার পাঞ্জাবিতে দেয়নি: খাদ্যমন্ত্রীকে হুইপ
- কারাগারে লেখক ইমতিয়াজ মাহমুদ
- রোগীদের অসস্মতি স্বত্ত্বেও শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত ডাক্তার
Comments
So empty here ... leave a comment!