ad720-90

ই-কমার্সের ভ্যাট আরোপ চান না উদ্যোক্তারা


চালডালের উদ্যোক্তা জিয়া আশরাফ ও রকমারির প্রধান নির্বাহী মাহমুদুল হাসান।ই-কমার্স খাতের উদ্যোক্তারা বলছেন, ভ্যাট আরোপিত হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে হাজারো ছোট, বড় ও মাঝারি উদ্যোক্তা। ২০১৯-২০ অর্থবছরের সরকারের প্রস্তাবিত বাজেটে অনলাইনে পণ্য ও সেবা বিক্রি, অর্থাৎ ই-কমার্স খাতে সাড়ে ৭ শতাংশ হারে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) বসানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এ কারণে সম্ভাবনা ও বিকাশমান এ খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করেছেন ই-কমার্স ব্যবসায়ীরা।

ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল ওয়াহেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সঙ্গে ই-কমার্স মিলিয়ে ফেললে হবে না। দেশের নীতিনির্ধারক ও আমাদের মধ্যে একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে। এর জন্যই আমরা বারবার তাদের ই-কমার্সের ওপর ভ্যাট না বসানোর কথা বোঝাতে ব্যর্থ হচ্ছি। এবারের বাজেট প্রস্তাবনায় ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সংজ্ঞার সঙ্গে ই-কমার্সকে মিলিয়ে ফেলা হয়েছে। এর ফলেই মূলত সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।’

আবদুল ওয়াহেদ বলেন, ‘ই-কমার্স একটা নতুন খাত। কেবল একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছে। এখনই সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট বসানো হলে হাজারো উদ্যোক্তা ঝড়ে পড়বে। নতুন উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসবেন না। ই-ক্যাব আগামী তিন বছরে সারা দেশে আরও ১০ রাখ কর্মসংস্থান তৈরির লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। বর্তমানে ই-কমার্সের সঙ্গে প্রায় ৫০ হাজার উদ্যোক্তা সরাসরিভাবে জড়িত। ই-কমার্সের ওপর প্রস্তাবিত ভ্যাট তাদের সবার জন্য একটা ঝুঁকির ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে। শুধু উদ্যোক্তাদের এই খাতে এলেই চলবে না, গ্রাহকদেরও নিয়ে আসতে হবে। নতুন করে এই খাতের ওপর প্রস্তাবিত ভ্যাট উদ্যোক্তা-গ্রাহক উভয়কেই এ খাত থেকে দূরে সরিয়ে দেবে।’

রকমারি ডট কমের প্রধান নির্বাহী মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘আসলে সাড়ে ৭ শতাংশ হারে ভ্যাট নির্ধারণের ফলে দেশের অনেক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নেবে। ফলে, দেশের এই খাতের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে। সরকারের কাছে আমাদের দাবি থাকবে আগামী পাঁচ বছরে ই-কমার্সের ওপর ভ্যাট না রাখা।’

চালডাল ডটকমের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) জিয়া আশরাফ প্রথম আলোকে বলেন‌, ‘প্রস্তাবিত ভ্যাট আরোপ করা হলে অনলাইনে কেনাকাটা কমে যাবে। একজন ক্রেতা কেন বেশি টাকা দিয়ে অনলাইন থেকে কেনাকাটা করবে? আমরা এখনো ভালোভাবে দাঁড়াতেই পারিনি। আমাদের ওপর ভ্যাট বসানো হলে পথে বসতে হবে। দুই বছর আগে অনলাইনে প্রতিদিন সব মিলিয়ে ২০ থেকে ২৫ হাজার অর্ডার ছিল। এখন তা প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ হাজারের মতো। এদিকে গ্রাহকদের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। তবে ভ্যাট বসানোয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেলে তা গ্রাহকদের আর আকর্ষণ করবে না।’

সম্প্রতি ই-কমার্সের উদ্যোক্তারা একসঙ্গে ‘ই-কমার্স এন্ট্রাপ্রেনিউর্স অ্যান্ড কনজুমারস’–এর ব্যানারে ভ্যাট আরোপের ফলে এ খাতের প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেন। গত রোববার ডেইলি স্টারে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সঠিক নীতি ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে দেশে আগামী তিন বছরে ১০ লাখের বেশি তরুণের সরাসরি কর্মসংস্থান হতে পারে ডিজিটাল কমার্স খাতে। এবারের বাজেট প্রস্তাবনায় ই-কমার্সের মাধ্যমে পণ্য ও সেবার ক্রয় বিক্রয়কে বর্তমানে নির্ধারিত আলাদা সেবা কোড ‘S ০৯৯.৫০’ থেকে সরিয়ে ‘সোশ্যাল মিডিয়া ও ভার্চ্যুয়াল বিজনেস’–এ (S ০৭৯.০০) অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে এবং ভ্যাট অব্যাহতি তালিকা থেকে ‘অনলাইন পণ্য বিক্রয়’–কে বাদ দেওয়া হয়েছে। অনলাইন পণ্য ও সেবা বিক্রয়কে আলাদা সার্ভিস হিসেবে বিবেচনা ও অনলাইনে পণ্য ও সেবা বিক্রয়কে আগামী তিন বছরের জন্য ভ্যাট অব্যাহতির দাবি জানান তাঁরা।





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar