ad720-90

‘এমপিদের মন-মানসিকতার পরিবর্তন করতে বললেন জয়’


লাস্টনিউজবিডি, ১০জুলাই: সবকিছু ডিজিটালাইজড করায় সরকারের দুর্নীতির সুযোগ ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে সংসদ সদস্যদের মন-মানসিকতার পরিবর্তন করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেছেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে আমরা কিন্তু আসলেই দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ বানাতে পারি। সবকিছু ডিজিটালাইজড হলে দুর্নীতির সুযোগ থাকে না। বিশেষ করে সরকারের দুর্নীতি।

বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ : সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান বক্তা হিসেবে এসব কথা বলেন তিনি।

সরকার এরইমধ্যে ই-গভর্মেন্ট সেবা চালু করেছে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সঙ্গে একযোগে বাংলাদেশেও ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক সেবা চালু হবে। এ সময় দেশে টেলিকমিউনিকেশন সেক্টরে নতুন নীতিমালা করার ঘোষণা দেন তিনি।

জয় বলেন, গ্লোবালাইজেশনের যুগে আমরা নিজেদের আলাদা করে রাখতে পারি না। আমাদের অর্থনীতিকে আরও ওপেন করতে হবে। আমাদের নিজেদের মাইন্ডসেট একটু চেঞ্জ করতে হবে। পরিবর্তন আনতে হবে। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ায় বিদেশিরা ব্যবসা করতে পারে। তাতে তাদের অর্থনীতির লাভ হয় । আমাদেরও কিন্তু সেদিকে যেতে হবে। সরকার কিন্তু সম্পূর্ণ তা পারে না। সরকারের সবকিছু সিস্টেম লস হয়। প্রাইভেট সেক্টরে কিন্তু তা হয় না। এ জন্য আমাদের নীতিমালা ও আইনের পরিবর্তন প্রয়োজন।

প্রধানমন্ত্রীপুত্র বলেন, আমাদের দেশের টেলিকম সেক্টরে বাইরের অনেক কোম্পানি আসতে চায়। বাংলাদেশে ইনভেস্ট করতে চায়। তবে আমাদের অনেকের মধ্যে একটি ধারণা রয়ে গেছে যে, বিদেশি কোম্পানি এসে খালি নিয়ে যায়। আজকে যদি বিদেশি কোম্পানি বাংলাদেশে না আসতো, আমরা থ্রিজি, ফোরজি বাস্তবায়ন করতে পারতাম না। তারা কিন্তু শুধু দেশ থেকে নিয়ে চলে যায় না। তারা কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে।

সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ্যে জয় বলেন, বাংলাদেশের ডিজিটালাইজেশনের ১০ বছর হয়েছে। আপনাদের হয়তো একটু জানা উচিত যে, অগ্রগতি কী, আমাদের দেশে এখন কী কী আছে? কী কী সুযোগ সুবিধা আছে? কী কী করা যায়? কী কী সম্ভব? আপনার নতুন নতুন আইন করবেন। পলিসি করবেন। তাই একটু জানাতে চাই। ২০০৮ সালে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন প্রকাশ করি, তখন বাংলাদেশের ডিজিটাল বলতে তো কিছুই ছিল না। তখন যদি কোনো সরকারি কাগজের প্রয়োজন হতো, অফিসে অফিসে যেতে হতো অথবা অফিসে গিয়ে বসে থাকতে হতো। ফরমের জন্য বসে থাকতে হতো।

তিনি বলেন, ছাত্রছাত্রীদের যদি কোনো ইউনিভার্সিটিতে এডমিশন নিতে হতো, সে অন্য শহরে গিয়ে ফর্ম নিয়ে আসতে হতো, ফর্ম ফিলাপ করে আবার জমা দিতে হতো। আজকে এসব আপনার মোবাইলে পাওয়া যায়। আমরা যে ১০ বছরে এসব করতে পেরেছি, তা খুব কম দেশেই হয়েছে। অন্যান্য দেশ প্রায় ৩০ বছর এটা করতে পেরেছে।

গত ১০ বছরে ১ লাখ ২০ হাজার ফাইবার কিলো বসানো হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যন্ত আমরা ফাইবার নিয়ে গেছি।

সংসদ সদস্যদের অনুরোধ করে তিনি বলেন, আপনারা যখন বিভিন্ন ডিজিটাল প্রজেক্ট দেখতে যাবেন বা অনুমতি দেবেন তখন একটু মনে রাখবেন- আগে যেভাবে হয়েছে, সেভাবেই যে করতে হবে, তা নয়। নতুন ডিজিটাল পদ্ধতিতে যাতে হয়, সেটা একটু নজর রাখবেন।

প্রশাসনকে ই-ফাইলিংয়েরও তাগিদ দেন তিনি। বলেন, তাতে আমাদের, আপনাদের, দেশের সময় বাঁচবে। দেশের এফিশিয়েন্সি বাড়বে। এতে আমাদের অর্থনীতির ওপর একটা ডিরেক্ট প্রভাব পড়ে। সব থেকে বড় সুবিধা হচ্ছে আমাদের দেশের মানুষের জীবনকে আরও সহজ করা।

আওয়ামী লীগ সরকারের স্বপ্ন হচ্ছে দেশের উন্নয়ন করা জানিয়ে জয় বলেন, দেশের মানুষ আমাদের ভোট দিয়েছে দেশের পরিবর্তন আনার জন্য। আমাদের দেশে প্রায় দেড় হাজারের মতো সরকারি সেবা আছে। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ১২০০ ডিজিটালাইজড হয়েছে।

তিনি বলেন, আপনাদের কাছে আমি একটু অনুরোধ করবো যে, আমাদের নিজেদের একটু মাইন্ডসেট চেঞ্জ করা। তরুণ প্রজন্ম এবং এদের মধ্যে সবসময় একটা জেনারেশন গ্যাপ। আমি একটু অনুরোধ করবো নিজেদে আগের সেই চিন্তাধারাগুলো ছেড়ে দিয়ে, সিঙ্গাপুর-মালয়েশিয়ার উদাহরণ সামনে আনা।

তিন দিনব্যাপী কর্মশালায় সব সংসদ সদস্যদের ডিজিটাল সিকিউরিটি এবং সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টসহ নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।

জয় বলেন, ‘সরকার এরইমধ্যে ই-গভর্মেন্ট সেবা চালু করেছে। সরকারি বিভিন্ন সেবা ডিজিটালাইজড করার মাধ্যমে দুর্নীতির সুযোগ কমে আসছে।’ তিনি জানান, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সঙ্গে একযোগে বাংলাদেশেও ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক সেবা চালু হবে। এ সময় দেশে টেলিকমিউনিকেশন সেক্টরে নতুন নীতিমালা করার ঘোষণা দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশকে দ্রুত অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সোপানে নিয়ে যেতে দেশের পুরনো আইন-কানুনে পরিবর্তন আনার পাশাপাশি মানসিকতায়ও পরিবর্তন আনতে হবে। কাউকে অনুকরণ করে নয়, নিত্য নতুন উদ্ভাবনের মধ্যদিয়েই ডিজিটাল বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে নিজেদের আত্মপরিচয় তুলে ধরবে।’
তরুণ রাজনীতিবিদ জয় বলেন, ‘তরুণ প্রজন্মকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করলে তারাই বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরবে।’ সে লক্ষ্যে তরুণ প্রজন্মের জন্য যথাযথ শিক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, ‘আধুনিক এবং যুগোপযোগী শিক্ষায় তরুণদের গড়ে তুলতে হবে। যাতে বিশ্বের প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশে আমাদের তরুণরা নিজেদের জায়গা করে নিতে পারে।’
লাস্টনিউজবিডি/ওবায়দুর

Print Friendly, PDF & Email





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar