ad720-90

ভাইরাসের মেইলে ভাইরাস


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নামে এ রকম ভুয়া মেইল ছড়াতে পারে সাইবার দুর্বৃত্তরা। ছবি: প্রুফপ্রিন্টের সৌজন্যেকরোনাভাইরাস ও এর প্রতিকার নিয়ে ভুয়া মেইল পাঠাতে পারে সাইবার দুর্বৃত্তরা। সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা সতর্ক করে বলেছেন, করোনা–সম্পর্কিত ই–মেইলভিত্তিক স্ক্যাম বা প্রতারণামূলক মেইল বেড়েছে। গত কয়েক বছরে এত বাজে ই–মেইল স্ক্যাম আর ঘটেনি। ব্যক্তির পাশাপাশি শিল্প খাত, যেমন: আকাশ ও সড়ক যোগাযোগ, উৎপাদন, পর্যটন, স্বাস্থ্য ও বিমা খাতকে লক্ষ্য করেও ই–মেইলে প্রতারণা করছে দুর্বৃত্তরা। এসব প্রতারণামূলক মেইল ইংরেজি, ফ্রেঞ্চ, ইতালিয়ান, জাপানি ও তুর্কি ভাষায় লেখা হচ্ছে। সম্প্রতি বিবিসি এ ধরনের ৫টি মেইলের কথা জানিয়েছে।

করোনাপ্রতিরোধী মেইল: করোনা নিরাময়ের দাবি করে প্রতারণামূলক মেইল পাঠাতে পারে সাইবার দুর্বৃত্তরা। এতে ক্লিক করতেই ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হয়ে যেতে পারে। সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান প্রুফপ্রিন্ট গত ফেব্রুয়ারি মাসে এ ধরনের মেইল পাওয়া কথা জানায়। এতে রহস্যময় একজন চিকিৎসক করোনার ওষুধ আবিষ্কার করেছেন বলে দাবি করা হয়। এ মেইলের কয়েক রকম সংস্করণ তৈরি করে ব্যবহারকারীর কাছে পাঠানো হয়। এতে কেউ উৎসাহ দেখিয়ে ক্লিক করলে একটি ওয়েবপেজে নিয়ে লগইন করতে বলে। এভাবেই ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেয় সাইবার দুর্বৃত্তরা।

ট্যাক্স ফেরত মেইল: সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান মাইমকাস্ট কয়েক সপ্তাহ আগে এ ধরনের প্রতারণামূলক মেইল শনাক্ত করে। এ মেইলে ট্যাক্স ফেরতসংক্রান্ত নানা সুবিধার কথা বলা হয়। ক্লিক করলে ভুয়া সরকারি পেজে নিয়ে যায় এবং আর্থিক তথ্য ও ট্যাক্সের তথ্য দিতে বলা হয়। এতে ফান্ডের জন্য ঢুকতে গেলেই সর্বনাশ ঘটতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নকল মেইল: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) ওয়েবপেজ নকল করে অনেক ভুয়া ই-মেইল ক্যাম্পেইন চালায় সাইবার দুর্বৃত্তরা। এতে দাবি করা হয়, তাদের পাঠানো তথ্য মেইল প্রাপক কীভাবে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করতে পারবেন,তা বলা আছে। এতে বলা হয়, অল্প ব্যবস্থার মধ্যেই করোনা প্রতিরোধ করা যায়। তবে প্রুফপ্রিন্ট বলছে, এ ধরনের ভুয়া মেইলে কোনো দরকারি পরামর্শ থাকে না। এতে এজেন্ট টেসলা কিলগারের মতো ক্ষতিকর প্রোগ্রাম থাকে। এটি ইনস্টল হয়ে গেলে অনলাইনে ব্যবহারকারী কী কী লেখেন, তা পুরোটাই টের পায় সাইবার দুর্বৃত্তরা।

আতঙ্ক ধরানো মেইল: সাইবার দুর্বৃত্তরা করোনা নিয়ে মানুষের আতঙ্ককে কাজে লাগিয়ে মেইল করতে পারে। এমনই একধরনের মেইল শনাক্ত করেছে কোফেন্স নামের একটি সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান। তাদের দাবি, সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) নাম করে ভুয়া মেইল পাঠায়। এ মেইলে করোনা নিয়ে নানা ভীতিকর কথা বলা হয়। এরপর এটি মাইক্রোসফটের লগইন পেজে নিয়ে যায়। কেউ ই–মেইল ও পাসওয়ার্ড দিলে তা হাতিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা।

সাহায্য চেয়ে মেইল: সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ক্যাসপারস্কির তথ্য অনুযায়ী, করোনার পরিস্থিতি নিয়ে প্রতারণামূলক বিভিন্ন মেইল পাঠাতে পারে দুর্বৃত্তরা। কোনো মেইলে ওষুধ উৎপাদনের জন্য অর্থ সাহায্য চাওয়া হয়, আবার কোনোটিতে মৃত্যুশয্যাশায়ী কারও নাম করে অর্থ চাওয়া হয়। এসব অর্থ বিটকয়েনে পরিশোধ করতে বলা হয়। ক্যাসপারস্কি ইতিমধ্যে ৫১৩ ধরনের প্রতারণামূলক মেইল শনাক্ত করেছে। এ ধরনের প্রতিটি মেইলে, ভাইরাস, ম্যালওয়্যার বা ক্ষতিকর প্রোগ্রাম যুক্ত করে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, করোনাভাইরাস নিয়ে অনলাইনে আতঙ্কিত হবে না। কারও ভুয়া মেইলের খপ্পরে পড়ে নিজের তথ্য দেবেন না। অনলাইনে অর্থ পরিশোধে সবচেয়ে বেশি সতর্ক থাকতে হবে। অপরিচিত উৎস থেকে আসা মেইলের লিংকে ক্লিক করবেন না বা কোনো প্রলোভনে ভুলবেন না। মেইলের উৎস, প্রেরকের দিকে ভালোভাবে খেয়াল রাখুন।





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar