ad720-90

করোনা ভাইরাসের অ্যান্টিবডির খোঁজে চীনা বিজ্ঞানীরা


প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন এখনও তৈরি হয়নি। কিন্তু চীনের বিজ্ঞানীরা এমন কিছু অ্যান্টিবডির খোঁজ পেয়েছে যা নতুন করে করোনা ভাইরাস শরীরে ঢুকে পড়তে বাধা দেয়। অর্থাৎ শরীরে করোনা ভাইরাস বাসা বাঁধলে তার সঙ্গে লড়তে না পারলেও এই অ্যান্টিবডি শরীর কোভিড ১৯ ঢুকতে বাধা দেয়। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের একটি প্রতিবেদন থেকে এমনই জানা যাচ্ছে।

চীনের উহান শহর থেকে শুরু হওয়া এই অসুখের কোনও নির্দিষ্ট চিকিৎসা এখনও আবিষ্কার করা যায়নি। আর ইতিমধ্যেই সারা বিশ্বে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ৮৫০,০০০ ছাড়িয়েছে। আর মৃত্যু হয়েছে ৪৬ হাজারেরও বেশি মানুষের। বেইজিং-এর সিংঘুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যাং লিংকি বলছেন, এখন যে ভাবে করোনার চিকিৎসা করা হচ্ছে তার থেকে বেশি কার্যকরী একটি উপায় পাওয়া গিয়েছে। অ্যান্টিবডি দিয়ে তৈরি ওষুধের সাহায্যে এই চিকিৎসা করলে আরও বেশি তা কার্যকরী হবে। তিনি প্লাজমা চিকিৎসার কথা বলেছেন। কিন্তু রক্তের বিভাগের দ্বারা এই প্লাজমা চিকিৎসা নিয়ন্ত্রিত হয়।

গত জানুয়ারি মাসে চীনের থার্ড পিপল হাসপাতালে যে কোভিড ১৯ আক্রান্ত রোগীরা সুস্থ হয়ে ওঠেন তাঁদের রক্ত থেকে অ্যান্টিবডি নিয়ে পরীক্ষা করেন বিজ্ঞানীরা। সেই রক্ত থেকে ২০৬টি মোনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি তারা আলাদা করে এবং এগুলিকে করোনা আটকাতে শক্তিশালী প্রোটিন হিসেবে চিহ্নিত করেন। তার পরে তাঁরা আরও একটি পরীক্ষা করেন, যেখানে তাঁরা দেখেন এই অ্যান্টিবডি শরীরের কোষে ঢুকে সত্যিই করোনাকে আটকাতে পারে কি না। ২০টি অ্যান্টিবডি টেস্টের মাধ্যমে দেখা যায় তার মধ্যে চারটি অ্যান্টিবডি কোষে ভাইরাস প্রবেশে বাধা দেয়। এই চারটির মধ্যে দুটি অ্যান্টিবডি খুবই কার্যকরী বলে জানান তাঁরা।

চীনের এই বিজ্ঞানীদের দল এখন সবচেয়ে শক্তিশালী অ্যান্টিবডি চিহ্নিত করার অপেক্ষায় রয়েছে। শরীরের কোষে নতুন করোনা ভাইরাস যাতে প্রভাব না ছড়ায় তার জন্যই এই অ্যান্টিবডিকে কাজে লাগাতে চান তাঁরা। সমস্ত ঠিক হলে এই অ্যান্টিবডি বেশি করে তৈরি করে প্রথমে পশু আর তার পরে মানুষের উপরে প্রয়োগ করার কথা বলেছেন তিনি। এই বিজ্ঞানীদের দল সাইনো-ইউএস একটি বায়োটেক ফার্মের সঙ্গে এই কাজ চালাচ্ছে। জ্যাং বলছেন, অ্যান্টিবডি কতটা প্রয়োজনীয় তা ওষুধের গবেষণায় অনেক আগেই প্রমাণিত হয়েছে।

ক্যানসার, অটোইমিউন রোগ ও ইনফেকশস রোগে অ্যান্টিবডি ব্যবহার করা হয়। অ্যান্টিবডি কোনও ভ্যাকসিন নয়। তবে যাঁদের ঝুকি বেশি তাঁদের কোভিড ১৯ কে বাধা দিতে অ্যান্টিবডি দেওয়া পারে। এমনিতে একটি ওষুধের অনুমোদন পেতে ২ বছর লাগে। কিন্তু এই রোগ দ্রুত ছড়াচ্ছে। তাই বিজ্ঞানীরা বলছেন আগামীর ৬ মাসের মধ্যে মানুষের উপরেই এই ওষুধ প্রয়োগ করে দেখা হোক।

ট্রায়ালে যদি কার্যকরী হয়, চিকিৎসার সময়ে কিন্তু এর বেশ সময় লাগে। হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ বেন কাওলিং বলছেন, এই অ্যান্টিবডিকে চিকিৎসায় ব্যবহার করা যায় কি না তা ঘোষণা করার আগে কয়েকটি ধাপ পেরোতে হয়। কিন্তু এটা সত্যি ভালো খবর যে চিকিৎসার দিকটা এভাবে ভাবা হচ্ছে। এবারে টেস্ট করে দেখার পালা। আমরা ক্যান্ডিডেট বেশি পেলে স্বাভাবিক ভাবেই চিকিৎসাও উন্নত হবে।





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar