ad720-90

কোভিড-১৯ লড়াইয়ে কতোটা সফল হবে কনট্যাক্ট ট্রেসিং?


বিশ্বে এখনও প্রায় ১৮০ কোটি ব্যক্তি স্মার্টফোনের আওতার বাইরে এবং এরা কনট্যাক্ট ট্রেসিং প্রযুক্তির সুবিধা পাবেন না।

বিশ্বের স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের সম্পর্কে অনুমিত এ হিসাবটি জানিয়েছে বাজার বিশ্লেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যানালিস। ক্যানালিসের হিসাবের ওপর ভিত্তি করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন তাদের প্রতিবেদনে বলছে, গোপনতা এবং যথেষ্ট মানুষ সেবাটি ব্যবহার করবেন কিনা– এই দুই বিষয়ে উদ্বেগ থাকার পাশাপাশি স্মার্টফোন ব্যবহারকারী নন এমন মানুষের উদ্যোগটি থেকে বাদ পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। 

অনেকে তর্ক জুড়ে দিতে পারেন, যে ব্লুটুথ সক্ষমতার উপর নির্ভর করে উদ্যোগটি তৈরি হয়েছে, তা শুধু স্মার্টফোনে সীমাবদ্ধ নয়। কিন্তু এক্ষেত্রেও সমস্যা রয়েছে। শুধু ব্লটুথ হলেই চলছে না, প্রয়োজন পড়বে জনস্বাস্থ্য অ্যাপের। আর ওই অ্যাপগুলো গুগল ও অ্যাপলের অপরেটিং সিস্টেমচালিত ফোনে ডাউনলোড করে নিতে হবে। ফলে স্মার্টফোন হাতে নেওয়া ছাড়া বিকল্প কোনো পথ খোলা থাকছে না।

“আমার মনে হয়, এটি অনেকটাই ডিজিটাল বিভক্তির লাইন টেনে দিচ্ছে” – বলেছেন ক্যানালিস বিশ্লেষক ভিনসেন্ট থিয়েলকে। তিনি আরও জানিয়েছেন, লাতিন আমেরিকা, ভারত এবং আফ্রিকার মতো অঞ্চলগুলোর অনেক মানুষ এই ‘কনট্যাক্ট ট্রেসিং’ উদ্যোগের বিশ্বব্যাপী সাফল্য পিছিয়ে দিতে পারেন।

মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসের আয়োজক সংগঠন জিএসএম অ্যাসোসিয়েশন তো আরও রক্ষণশীল হিসাব দিয়েছে। সংস্থাটি বলছে, বিশ্বের মাত্র ৪৯ শতাংশ মানুষ মোবাইল ডিভাইসের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। হিসাবে চারশ’ কোটিরও কম মানুষ এভাবে ইন্টারনেটের নাগাল পাচ্ছেন। আর ২০১৯ সালের হিসাব অনুসারে, বিশ্বের ৫২০ কোটি মানুষ বিভিন্ন ধরনের মোবাইল ডিভাইস রয়েছে।         

এক কথায়, এটি একটি প্রতিবন্ধকতা যা কিছু অঞ্চল ও জনসংখ্যায় সামঞ্জস্যহীনভাবে প্রভাব ফেলবে। জিএসএম অ্যাসোসিয়েশনের এর দেওয়া তথ্য অনুসারে, উত্তর আমেরিকায় প্রায় ৮৩ শতাংশ, ইউরোপে ৭৬ শতাংশ, বৃহত্তর চীনে ৭২ শতাংশ, এশিয়ার বাদবাকি অঞ্চলগুলোতে ৬২ শতাংশ এবং আফ্রিকার সাব-সাহারান অঞ্চলে ৪৫ শতাংশ স্মার্টফোন ব্যবহারকারী রয়েছে।

বিভিন্ন অঞ্চলে স্মার্টফোন ব্যবহার ও ব্যবহারের ধরনের কারণেও প্রভাবিত হবে অ্যাপল ও গুগলের উদ্যোগটি। গোপনতাকে সুরক্ষিত করতে অ্যাপল ও গুগল জানিয়েছে, ফোনে ‘কনট্যাক্ট ট্রেসিং’ প্রযুক্তি চলার জন্য স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর অনুমতির প্রয়োজন পড়বে। এতে করে ডিজিটাল বিষয়ে পারদর্শী এখনও হয়ে উঠেনি এমন দেশগুলোতে বাড়তি প্রতিবন্ধকতা তৈরি হবে। “কনট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের একটি সীমাবদ্ধা হচ্ছে প্ল্যাটফর্মটি অপ্ট-ইন, এবং এর জন্য বাড়তি যে প্রচেষ্টা প্রয়োজন সেটির কারণে যোগাযাগ শনাক্ত করা না-ও হতে পারে”। – বলেছেন বিশ্লেষক থিয়েলকে।

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্মার্টফোন বাজার ভারত, দেশটির সরকার নিজ দেশে কনট্যাক্ট ট্রেসিং অ্যাপ এনেছে। কিন্তু এখনও প্রায় অর্ধেক ভারতীয় নাগরিক অনলাইনে আসতে পারেননি এবং দেশটির অধিকাংশ মানুষই স্মার্টফোন ব্যবহার করেন না।

সীমাবদ্ধতা থাকলেও অ্যাপল ও গুগল নিজ নিজ পরিধেয় প্রযুক্তিতে ‘কনট্যাক্ট ট্রেসিং’ প্রযুক্তি সংযুক্ত করে এর পরিসর বাড়াতে পারে বলেও মন্তব্য করেছেন থিয়েলকে।

“অ্যাপল ও গুগলের নিজস্ব সম্পদ কাজে লাগিয়ে কোভিড-১৯ লড়াইয়ে নামার ব্যাপারটি দীর্ঘমেয়াদে ফলপ্রসু হবে, এবং, করোনাভাইরাস মহামারী শেষে মেডিক্যাল কমিউনিটির সঙ্গে প্রতিষ্ঠান দুটির সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে”। – বলেছেন থিয়েলকে।





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar