ad720-90

জীবাণু দিয়ে ম‌্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি আবিষ্কার


মশার কামড়ে ম্যালেরিয়া সৃষ্টি হয়। ছবি: রয়টার্সযুক্তরাজ্য ও কেনিয়ার গবেষকেরা সম্প্রতি এক ধরনের জীবাণুর খোঁজ পেয়েছেন, যা মশাকে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হতে পুরোপুরি রক্ষা করে। গবেষকেরা দাবি করছেন, তাঁদের এ আবিষ্কার ম্যালেরিয়া রোগ নিয়ন্ত্রণে ‘অমিত সম্ভাবনা’ তৈরি করেছে।

‘নেচার কমিউনিকেশনস’ সাময়িকীতে এই গবেষণা বিষয়ক নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।

সংক্রমিত মশার কামড়ে ম্যালেরিয়া ছড়িয়ে পড়ে, তাই তাদের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করা গেলে মানুষকে রক্ষা করা যেতে পারে।

বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ম্যালেরিয়া ঠেকানোর এ জীবাণুর নাম মাইক্রোস্পরিডিয়া এমবি। কেনিয়ার লেক ভিক্টোরিয়া উপকূলে মশা নিয়ে গবেষণা করার সময় এটি আবিষ্কার করেছেন গবেষকেরা। এটি পোকামাকড়ের অন্ত্র ও জননকেন্দ্রে বাস করে।

গবেষকরা মাইক্রোস্পরিডিয়া বহনকারী একটি মশাও খুঁজে পাননি, যা ম্যালেরিয়া পরজীবী বহন করছিল।পরীক্ষাগারেও প্রমাণ পাওয়া গেছে, ওই জীবাণু মশাকে ম্যালেরিয়া পরজীবী থেকে সুরক্ষা দেয়।

গবেষকেরা বলেন, মাইক্রোস্পরিডিয়াসগুলো ছত্রাক বা তাদের সঙ্গে অন্তত নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত এবং বেশির ভাগ পরজীবী। তবে এই নতুন প্রজাতিটি মশার জন্য উপকারী হতে পারে এবং অধ্যয়নরত প্রায় ৫ শতাংশ পোকামাকড়ের মধ্যে এটি প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া যায়।

কেনিয়ার ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার অব ইনসেকটস ফিজিওলজি অ্যান্ড ইকোলজির গবেষক জেরেমি হেরেন বিবিসিকে বলেন, ‘আমাদের এখন পর্যন্ত যে তথ্য রয়েছে, তা শতভাগ ম্যালেরিয়া ঠেকানোর কথা বলে। এটি ম্যালেরিয়া ঠেকানোর মোক্ষম হাতিয়ার। এর কর্মকাণ্ড অবাক করে দেবে I আমি মনে করি, মানুষ একে একটি সত্যিকারের বড় সাফল্য বলে মনে করবে।’

প্রতিবছর ম্যালেরিয়ায় চার লাখের বেশি লোক মারা যায়। তাদের বেশির ভাগই পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু। মশারি ও মশানাশক স্প্রের ব্যবহার বাড়লেও সম্প্রতি মশার উৎপাত বেড়েছে। তাই ম্যালেরিয়া ঠেকাতে নতুন সরঞ্জামের প্রয়াজনীয়তার বিষয়ে সবাই একমত।

গবেষকেরা বলছেন, তাঁদের বিস্তারিত আরও গবেষণা করতে হবে। তবে মাইক্রোস্পরিডিয়া এমবি মশার প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে পারে, সুতরাং এটি সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম হবে। এ জীবাণুর উপস্থিতি ম্যালেরিয়ার পরজীবীর জন্য দীর্ঘস্থায়ী প্রতিকূল পরিবেশ তৈরি করতে পারে বলে এ প্রতিরেোধ ব্যবস্থা টেকসই হবে।

ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে কোনো অঞ্চলের কমপক্ষে ৪০ শতাংশ মশাকে মাইক্রোস্পরিডিয়া দিয়ে সংক্রমিত করতে হবে। গবেষকেরা তাঁদের পরীক্ষা করা মশা উন্মুক্ত করার পরিকল্পনা করছেন। তাঁরা বলছেন, জীবাণুটি প্রাপ্তবয়স্ক মশার মধ্যে দেওয়া যেতে পারে এবং স্ত্রী মশা থেকে তার বংশেও এটি চলে যাবে। কাজেই সংক্রমিত মশার সংখ্যা বাড়ানোর জন্য গবেষকরা কৌশল অনুসন্ধান করছেন।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, কীভাবে জীবাণুটি ছড়ায়, তা বুঝতে হবে। তাই তারা কেনিয়ায় আরও পরীক্ষা করার পরিকল্পনা করেছেন। তাঁদের এ পদ্ধতি ঘিরে কোনো বিতর্ক নেই। কারণ, প্রজাতিটি এর মধ্যে বুনো মশার মধ্যে পাওয়া গেছে এবং তাঁরা নতুন কিছু যুক্ত করছেন না। তাঁরা মশা মেরে ফেলছেন না বলে পরিবেশের বাস্তুসংস্থানের ওপরও প্রভাব পড়বে না।





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar