ad720-90

টিকটককে কিনতে আগ্রহী ওরাকল


টিকটকটিকটকের সম্ভাব্য ক্রেতা হিসেবে দৃশ্যপটে হাজির হয়েছে মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ওরাকল করপোরেশন। এর আগে টিকটকের ক্রেতা হিসেবে একাই মাঠে ছিল মাইক্রোসফট। অবশ্য টুইটারের পক্ষ থেকে টিকটককে কেনার আগ্রহ দেখানো হলেও তাদের আর্থিক সংগতি নেই। ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

ওরাকলের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে জানিয়েছে, টিকটকের মালিক প্রতিষ্ঠান চীনের বাইটড্যান্স ইনকরপোরেশনের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা করেছে ওরাকল। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটি বাইটড্যান্সে শেয়ার থাকা একাধিক বিনিয়োগকারীর সঙ্গেও কাজ করার কথা বলেছে।

গত শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টিকটকের সমর্থনে যে সম্পদ ছিল, তা যুক্তরাষ্ট্রের অনুকূলে আনতে বাইটড্যান্সকে নির্দেশ দেন। এ জন্য ৯০ দিনের সময় বেঁধে দেন তিনি। ট্রাম্প দাবি করেন, টিকটক অ্যাপটির তথ্য সংগ্রহের প্রক্রিয়া তাঁদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।

এখন পর্যন্ত টিকটককে কেনার দৌড়ে সামনে রয়েছে মাইক্রোসফট। তারা টিকটকের যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের পরিচালনার অংশ কিনে নিতে চায়।

যুক্তরাষ্ট্রের মাইক্রোসফট করপোরেশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা জনপ্রিয় সংক্ষিপ্ত ভিডিও তৈরির অ্যাপ টিকটককে বাইটড্যান্সের কাছ থেকে কিনে নেওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এ চুক্তি সম্পন্ন করে ফেলতে চায় তারা।

টিকটক কেনার জন্য চলছে দর-কষাকষি। কিন্তু মাইক্রোসফট টিকটককে কিনতে চাইছে পানির দামে। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট বলছে, মাইক্রোসফট টিকটককে কেনার জন্য যে দর হাঁকাচ্ছে, তাতে টিকটককে কেনা তাদের পক্ষে সম্ভব হবে না।

ভারতের বার্তা সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কোনো মার্কিন কোম্পানি যদি টিকটককে কিনে নিতে ব্যর্থ হয়, তবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টিকটককে নিষিদ্ধ করবেন। তিনি টিকটকের ৩০ শতাংশ মালিকানা কেনার বদলে পুরোপুরি কিনে নেওয়ার কথা বলেছেন। এ বিষয়ে তিনি মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী সত্য নাদেলার সঙ্গে আলোচনাও করেছেন।

৬ আগস্ট ট্রাম্পের সই করা নির্বাহী আদেশ অনুযায়ী, টিকটক যে তথ্য সংগ্রহ করে, তা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কাছে চলে যায় এবং তারা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের ব্যক্তিগত ও প্রতিষ্ঠানের তথ্যে নজরদারি করতে পারে। চীনা কোম্পানিগুলো যে অ্যাপ তৈরি করছে, তা জাতীয় নিরাপত্তা ও অর্থনীতির জন্য হুমকি।

ট্রাম্প বলেন, ‘টিকটক আমাদের জন্য উদ্বেগের বিষয়। আমরা এটা বন্ধ করে দেওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছি।’ এর আগে মার্কিন নিরাপত্তা কর্মকর্তারা আশঙ্কা করেন, এই অ্যাপ ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে চীন।

টিকটক কর্তৃপক্ষ শুরু থেকেই এমন আশঙ্কাকে ভিত্তিহীন বলে আসছে। তারা বলছে, এই অ্যাপ চীন সরকারের নিয়ন্ত্রিত নয় এবং তারা চীন সরকারের সঙ্গে তথ্য বিনিময় করে না।

টিকটকের মূল কোম্পানি বাইটড্যান্সের প্রধান কার্যালয় বেইজিংয়ে এবং এটি চীনে জনপ্রিয় হওয়ার পর বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। এর জনপ্রিয়তা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সমালোচনাও বেড়েছে। টিকটকের সবচেয়ে বেশি সমালোচনা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটির কয়েকজন সিনেটর এর বিরুদ্ধে তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

ভারত গত ৩০ জুন টিকটক, উইচ্যাটসহ চীনা ৫৯টি অ্যাপ বন্ধ করে দেয়। নয়াদিল্লি এসব অ্যাপকে দেশের জন্য বিপজ্জনক অভিযোগ তুলে তা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়; যদিও ১৫ জুন লাদাখে চীনের সঙ্গে সীমান্ত-সংঘর্ষে ভারতের ২০ সেনা নিহত হওয়ার পর দিল্লি ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।

গত বছরের অক্টোবরে ক্যালিফোর্নিয়ার মাউন্টেন ভিউয়ের সিলিকন ভ্যালিতে অফিস খুলেছে টিকটক। ফেসবুকের কার্যালয়ের কাছাকাছি অফিস নিয়ে ফেসবুকের কর্মীদের ভাগিয়ে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে টিকটকের নির্মাতা বাইটড্যান্সের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যে ফেসবুকের বেশ কয়েকজন কর্মী টিকটকে যোগও দিয়েছেন। ফেসবুকের চেয়েও বেশি বেতনের অফারে কর্মী নিয়োগ দিয়েছে টিকটক।





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar