প্রাক্তন সঙ্গিনীকে পঙ্গু করতে বিটকয়েনে লোক ভাড়া!
সাবেক সঙ্গিনীকে পিটিয়ে শারীরিকভাবে অক্ষম করে ফেলতে এবং মুখে এসিড ছুড়তে ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমে লোক ভাড়া করেছিলেন এক ব্যক্তি। এ কাজের জন্য ১২ হাজার ডলার দিয়েছিলেন তিনি বিটকয়েনের মাধ্যমে।
কিন্তু পুলিশ টের পেয়ে যাওয়ায় তা আর সম্ভব হয়নি।
বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি বর্তমানে গৃহবন্দী অবস্থায় রয়েছেন। ইতালিয়ান কর্তৃপক্ষ এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অপরাধ এজেন্সি খুঁজে বের করেছে তাকে। আক্রমণের ঝুঁকিতে থাকা নারীরও কোনো ক্ষতি হয়নি। এদিকে, আক্রমণের জন্য যাকে অর্থ দেওয়া হয়েছিল, তাকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
“গোটা ঘটনাটিকে আধুনিক রোমাঞ্চ প্লট বলা যায়।” – এক বিবৃতিতে জানিয়েছে ইতালির ‘পোস্টাল অ্যান্ড কমিউনিকেশন পুলিশ’।
পুলিশের বরাতে জানা গেছে, অভিযুক্ত ব্যক্তির বসবাস লমবার্ডি এলাকার দক্ষিণাঞ্চলে, বয়স ৪০ বছর, পেশায় আইটি বিশেষজ্ঞ। ২০২০ সালের জুলাইয়ে সঙ্গিনীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় তার। এর কয়েক মাস পরে ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমে একজনকে খুঁজে বের করেন সঙ্গিনীর মুখে এসিড ছুড়ে মারা এবং পিটিয়ে শিরদাঁড়া ভেঙে পক্ষাঘাতগ্রস্থ করে ফেলার জন্য।
পুলিশ বলছে, আক্রমণকারীকে গোটা অর্থ কয়েক ভাগে দেন তিনি। প্রথম চার ধাপে অর্থ দেওয়ার পরও সঙ্গিনীর সঙ্গে যোগাযোগ থামাননি ওই ব্যক্তি। উল্টো এ সময়টিতে তাকে ফুল এবং বার্তা পাঠিয়েছেন।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানাতে লেখা রয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি গোটা আক্রমণটিকে ছিনতাইয়ের রূপ দিতে চেয়েছিলেন।
প্রায় দুই বছর ওই নারীর সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন অভিযুক্ত ব্যক্তি। বিবিসি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, সাবেক সঙ্গিনীর বাসার ঠিকানা এবং ফেইসবুক প্রোফাইল আক্রমণকারীকে দিয়েছেন তিনি।
ইতালিয়ান কর্তৃপক্ষ বলছে, ফেব্রুয়ারিতে অন্য এক ইউরোপিয়ান দেশের পুলিশের হাতে আসে আক্রমণকারীকে পাঠানো বার্তা। পরে এ বিষয়ে ইতালীয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে ওই দেশের পুলিশ।
আক্রমণকারী নিয়োগ দিতে গোপনতা নির্ভর সফটওয়্যার টর নেটওয়ার্ক ব্যবহার করেছিলেন অভিযুক্ত ব্যক্তি।
ইউরোপিয়ান অপরাধ দমন এজেন্সি ‘ইউরোপোল’ বলছে, “জরুরি এবং জটিল এক ক্রিপ্টো বিশ্লেষণের মাধ্যমে” ইতালিনির্ভর বিটকয়েন সেবাদাতাকে “খুঁজে বের করা এবং পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়।” পরে ওই ক্রিপ্টো-কারেন্সি সেবাদাতার কাছ থেকে বিস্তারিত আরও তথ্য জানতে পারে ইতালিয়ান পুলিশ।
ইতালির গণমাধ্যম বলছে, অভিযুক্তের মিলানে অবস্থিত বাড়িতে ফেব্রুয়ারির শেষে তল্লাশি চালায় পুলিশ। ওই সময় অবশ্য অভিযুক্ত ব্যক্তি দাবি করেন, তিনি আক্রমণকারীকে আক্রমণ করতে মানা করেছেন।
অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ‘চরম মাত্রার হয়রানি এবং ব্যক্তিগত আঘাত চেষ্টা’র অভিযোগ আনা হয়েছে।
Comments
So empty here ... leave a comment!