ad720-90

জেডাই বাতিল, একাধিক প্রতিষ্ঠান পাবে নতুন চুক্তি


শুধু অর্থমূল্যের জন্য নয়, সম্মানের দিক থেকেও চুক্তিটি অনেক বড় মাপের। অ্যামাজন ও মাইক্রোসফট অনেক বছর ধরে সরকার ও অন্যান্য ব্যবসায়কে বুঝিয়েছে যে তাদের ডেটা সেন্টারে কম্পিউটিংয়ের কাজ সরিয়ে নিলে ভালো হবে। এ চুক্তিটি সেটারই বড় এক উদাহরণ।

উল্লেখ্য, হাজার কোটি ডলার মূল্যের ১০ বছর মেয়াদী ক্লাউড কম্পিউটিং চুক্তিটির পুরো নাম ছিল ‘জয়েন্ট এন্টারপ্রাইজ ডিফেন্স ইনফাস্ট্রাকচার’, সংক্ষেপে জেডাই। নিজেদের সব কম্পিউটার নেটওয়ার্ককে একটি ক্লাউড সিস্টেমের অধীনে নিয়ে আসার লক্ষ্যেই বিশাল উদ্যোগ নিয়েছিল মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। কার্যাদেশ পাওয়া প্রতিষ্ঠানটির কাজ হতো ওই উদ্যোগের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা।

চুক্তি অনুসারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিশ্লেষণ ও সেনাবাহিনীর গোপন তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হতো মাইক্রোসফটকে। এটি সম্পন্ন হলে যুদ্ধক্ষেত্র থেকেই গুরুত্বপূর্ণ ডেটা ও ক্লাউডে প্রবেশাধিকার পাবে মার্কিন সেনাবাহিনী।

চুক্তি পাওয়ার দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে ছিল সিয়াটল-ভিত্তিক অ্যামাজন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সবাইকে অবাক করে দিয়েই ২০১৯ সালে চুক্তি জিতে নিয়েছিল মাইক্রোসফট। বার্নস্টিনের জ্যেষ্ঠ গবেষণা বিশ্লেষক মার্ক মোয়ের্ডলার জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠানটি ক্লাউড দৌড়ে অ্যামাজনের পরে এসেছিল এবং প্রতিযোগিতায় পাল্লা দেওয়ার চেষ্টায় শামিল ছিল। জেডাই চুক্তিটি ছিল মাইক্রোসফটের জন্য “বড় অর্জন”।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন চুক্তিটি মাইক্রোসফটকে দিয়েছিল। ট্রাম্প আর বেজোসের সম্পর্ক ভালো ছিল না আগে থেকেই। ট্রাম্প চুক্তিটি অ্যামাজনকে না দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ তুলেছিল অ্যামাজন। পরে মামলা-ই ঠুকে দিয়েছিল এ নিয়ে। এতে চুক্তিটিও আটকে গিয়েছিল।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত প্রভাব ফেলেছে শেয়ার বাজারেও। রেকর্ড উচ্চ দর নিয়ে শেয়ারবাজারে দিন পার করেছে প্রতিষ্ঠান দুটি। দিনশেষে অ্যামাজনের শেয়ার দর ৪.৭ শতাংশ বেশি ছিল।

ওয়েডবুশ সিকিউরিটিজের বিশ্লেষক মাইকেল প্যাকটারের মতে, আর্থিকভাবে তেমন লাভ হতো না প্রতিষ্ঠান দুটির। এর মূল লাভটিই হলো ক্লাউডের নিরাপত্তার ব্যাপারটি উপস্থাপন করা।

অন্যদিকে, মোয়ের্ডলার মনে করছেন, চুক্তি বাতিল এবং নতুন চুক্তিতে মাইক্রোসফটের লাভ হবে। কারণ ওয়াশিংটনে ভিত্তিক এ প্রতিষ্ঠানটি আইনি লড়াই চলাকালে ২ বছর সময় পেয়েছে প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করার। “যদি এখন অন্য কোনো প্রতিযোগী থেকে থাকে, মাইক্রোসফট ভালো অবস্থান থেকে সেদিকে এগোবে।”

সেপ্টেম্বরে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় চুক্তিটি পুনর্মূল্যায়ন করে জানিয়েছিল, মাইক্রোসফটই সেরা প্রস্তাব জমা দিয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসন একজন সেবাদাতাকে চুক্তি দিতে চাইলেও বাইডেন প্রশাসন তা চাইছে না। তারা চাইছে, একাধিক প্রতিষ্ঠানের হাতে চুক্তি তুলে দিতে। এই পদক্ষেপের ফলে মার্কিন সামরিক বাহিনী প্রযুক্তিগতভাবে ব্যক্তি-মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছাকাছি চলে আসবে।

ওরাকল, অ্যালফাবেটের গুগল এবং আইবিএমের মতো ক্লাউড কম্পিউটিং প্রতিষ্ঠান ফেডারেল সরকারের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী বলে জানিয়েছে মঙ্গলবার। তবে, নিলামে অংশ নেবে কি না তা পরিষ্কার করেনি প্রতিষ্ঠানগুলো। ধারণা করা হচ্ছে, ২০২২ সালের এপ্রিল নাগাদ নতুন ‘জয়েন্ট ওয়ারফাইটার ক্লাউড ক্যাপাবিলিটি’ (জেডব্লিউসিসি) এর প্রথম বিজয়ী নির্ধারণ করবে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তা জন শার্মান জানিয়েছেন, তিনি প্রত্যাশা করছেন মাইক্রোসফট এবং অ্যামাজন দুই প্রতিষ্ঠানই ক্লাউড চুক্তিটি জিতে নেবে। প্রয়োজনটা খুব জরুরি বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।

মাইক্রোসফট এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “ডিওডি নতুন কাজের জন্য অংশীদার নির্বাচনেও তারা সফল হবে” বলে আশাবাদী।

অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেস (এডব্লিউএস) জানিয়েছে, তারা পেন্টাগনের চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত।

রিপাবলিকান সিনেটর চাক গ্রাসলে-ও পেন্টাগনের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।

আরও খবর:

জেডাই প্রকল্পে ট্রাস্পের সম্ভাব্য পক্ষপাত খতিয়ে দেখা হবে
 

মাইক্রোসফটের পেন্টাগন চুক্তি আটকানোর চেষ্টায় অ্যামাজন
 

পেন্টাগনের হাজার কোটি ডলারের চুক্তিতে অ্যামাজনের ‘চ্যালেঞ্জ’
 

পেন্টাগন ইতিহাসে বৃহত্তম চুক্তি মাইক্রোসফটের
 

পেন্টাগনের জেডাই: পুনঃমূল্যায়নেও চুক্তি মাইক্রোসফটের
 





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar