নিউ ইয়র্কে পণ্য সারাইয়ে দরকারি তথ্য জানাতে হবে নির্মাতাকে
‘ডিজিটাল ফেয়ার রিপেয়ার অ্যাক্ট’ নামে বৃহস্পতিবার পাশ করা ওই আইনে বলা হয়েছে, ওইএম বা অরিজিনাল ইকুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাচারার প্রতিষ্ঠানকে ওই পণ্য সারাই করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য ও রিসোর্স সরবরাহ করতে হবে। এর ফলে পণ্যের মালিক নিজেই বা তৃতীয় পক্ষীয় সারাই প্রতিষ্ঠান পণ্যগুলো সারাই করতে পারবেন।
“কেবল নির্মাতার আড়াল করে রাখা তথ্যের অভাবেই তৃতীয় পক্ষ পুরোপুরিভাবে পণ্য সারাই করতে পারে না।” – বিলে উল্লেখ রয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে অ্যাপলবিষয়ক খবরের সাইট অ্যাপল ইনসাইডার।
ঘটনাটিকে অ্যাপলের সুরক্ষিত দুর্গে বড় ধরনের ফাটল বলেই চিহ্নিত করেছেন এক প্রযুক্তি ব্লগার।
বর্তমানে “প্রিমিয়াম” পণ্যের বেলায় অনেক নির্মাতাই ওই হার্ডওয়্যার বা সফটওয়্যার প্রয়োজনে কে সারাই করতে পারবে সে বিষয়ে সীমারেখা টেনে দেয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে নির্মাতা নিজে বা তার অনুমোদিত সারাই প্রতিষ্ঠান উচ্চ মজুরীর বিনিময়ে সারাইয়ের কাজটি করে দেয়। এই রেওয়াজের শীর্ষে রয়েছে আইফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাপল।
এই একচেটিয়া রেওয়াজের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে জনমত তৈরি করে আসছে “রাইট টু রিপেয়ার” আন্দোলন। তাদের বক্তব্য হচ্ছে, ক্রেতা নিজেই যদি তার পণ্য সারাই করতে পারেন, তাহলে পণ্যের দীর্ঘস্থায়ীত্ব নিশ্চিত করা যায় যা পরিবেশবান্ধব।
নতুন এই বিলকে সে কারণেই “রাইট টু রিপেয়ার” আন্দেলনের বড় বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
“সঠিক পথ অবলম্বনের দৃষ্টিকোণ থেকে এই বিল নিউ ইয়র্কবাসী এবং দেশের বাকী অংশের জন্য এক বিশাল পদক্ষেপ।” – বলেন আইফিক্সইট-এর সিইও কাইল ওয়েইনস। প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে ক্রেতা-ব্যবহারকারীদের দেখিয়ে আসছে কোন পণ্য নিজেই কীভাবে সারাই করা যায়। প্রতিষ্ঠানটি “রাইট টু রিপেয়ার” আন্দেলনের বড় সমর্থক।
“অ্যাপল-স্যামসাংসহ বিভিন্ন নির্মাতার অসম্ভবরকম জোরদার লবিয়িংয়ের মুখেও সিনেট এই সাহসী সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ক্রেতাদের পক্ষে দাঁড়িয়েছে।” – বলেছেন কাইল।
“ওইএম প্রতিষ্ঠানগুলো সারাই বাজারের নিয়ন্ত্রন নিজেদের হাতে রাখতে চায়। অ্যাপলের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তি হিসেবে বলে যে, প্রচলিত রেওয়াজে পণ্যের মান বজায় রাখা সম্ভব হয়। তারা চায় আপনার পণ্য যেন কোনো অদক্ষ করিগরের হাতে না পড়ে। তবে, পাশ হয়ে যাওয়া বিলটিতে উল্লেখ রয়েছে, প্রচলিত রেওয়াজ আবার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে সারাইয়ের বেলায় একচেটিয়া ক্ষমতা দেয়। এর ফলে প্রকৃতপক্ষে ক্রেতাকে এটি তুলনামূলক অল্প সময়েই নতুন পণ্য ক্রয়ে উৎসাহিত করে এবং অপেক্ষাকৃত বেশি ইলেকট্রনিক বর্জ্য তৈরি হয়।”
প্রতিবেদন বলছে, নতুন এই বিলটি অ্যাপলের মতো নির্মাতাকে পণ্যের আরও বেশি তথ্য জানাতে বাধ্য করতে পারে, যেটি প্রতিষ্ঠানটি একেবারেই চায় না। এর মধ্যে কেবল হার্ডওয়্যার নয়, সফটওয়্যারবিষয়ক তথ্যও থাকতে পারে। তবে “ট্রেড সিক্রেট” এর আওতার বাইরে থাকার কথা উল্লেখ রয়েছে বিলে।
বিলটিকে আইনে রূপান্তরিত হতে হলে এর পর অঙ্গরাজ্যের অধিবেশনে পাশ হতে হবে। এরপর গভর্নর এতে স্বাক্ষর করলেই এটি আইনে পরিণত হবে। তবে, ৫১-১২ ভোটে বিলটি পাশ করায় ধরে নেওয়া যেতে পারে যে পরের ধাপগুলো পরোনো খুব একটা কঠিন হবে না।
Comments
So empty here ... leave a comment!