ad720-90

সাইবার অপরাধ রোধে ’সাইবার থ্রেট  ডিটেকশন এন্ড রেসপন্স” প্রকল্পের কাজ শুরু


আলীমুজ্জামান হারুন,৭অক্টোবর ঢাকা:  সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার রোধ, দেশের ভাবমূর্তি রক্ষা, সকল পর্নোসাইট বন্ধ করা, সর্বোপরি সাইবার অপরাধ রোধকল্পে সরকার ’সাইবার  থ্রেট ডিটেকশন এন্ড রেসপন্স” নামের প্রকল্পটির কাজ এগিয়ে চলছে । ইতোমধ্যেই এই প্রকল্পের পিডি ড‘টের পরিচালক প্রকৌশলী   আলহাজ্ব রফিকুল মতিনসহ ৪ সদস্যের একটি টিম যুক্তরাস্ট্র সফর করে ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা ফিরেছেন ।  প্রকল্পটির কাজের মেয়াদ  মে ১৮ থেকে বৃদ্ধি করে মে ১৯ করা হয়েছে।  প্রকল্পটির কাজ পেয়েছে  দেশীয় প্রতিষ্ঠান টেকভেলী সলিউশন লি: । প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রায় দেড়‘শ কোটি টাকা ব্যয় হবে । স্পেনে তৈরি এসব ডিভাইস সরবরাহ করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি কোম্পানি। এই প্রযুক্তি কিওয়ার্ড পদ্ধতিতে ফিল্টারিং ও ব্লক করার কাজ করবে। এ প্রক্রিয়ায় ফেসবুক বা টুইটারের মতো মাধ্যমে লেখা বা চিহ্নিত কনটেন্টগুলোর হুমকি বিবেচনায় নিয়ে তা অপসারণ বা ব্লক করা হবে।

সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, দেশের স্বার্থে এই প্রকল্পটি বাংলাদেশে একটি সময়োপযোগী প্রকল্প । সিঙ্গাপুরেও এই  প্রকল্পটি অনেক আগে থেকেই চালু আছে ।

জানা গেছে, ১৮ মাসের মধ্য প্রকল্পের কাজ শেষ করে বিটিআরসিকে বুঝিয়ে দেয়া হবে। প্রকল্পের কাজ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তর (ডট ) এর কর্মকর্তারা থাকবেন। এই প্রকল্পের পিডি‘র দায়িত্ব পেয়েছেন ড‘টের পরিচালক আলহাজ্ব রফিকুল মতিন । টেকনিক্যাল বিষয়ে তাঁর ভাল অভিঞ্জতা ,দক্ষতা এবং সৎ কর্মকর্তা হিসাবে সুনাম থাকায় সরকার তাকে এই প্রকল্পের পিডি করেছে বলে বিটিসিএলের এক উর্ধতন কর্মকর্তা জানান।

ফেইসবুকে ভূয়া আইডি খুলে সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার, দেশে বসে ফেইসবুক বা কোন অন-লাইনে সরকার বিরোধী অপপ্রচার সহ সব ধরনের সাইবার অপরাধ রোধে এই মেশিন কার্যকর ভূমিকা রাখবে। বর্তমানে কোন অন-লাইন বন্ধে ২৮ টি আইআইজি এবং ৩ টি নিক্স একচেঞ্জকে অনুরোধ করতে হয়।

এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বিটিআরসি এক মিনিটেই বন্ধ করে দিতে পারবে। পারবে ভূয়া ফেইসবুক আইডি বন্ধ করতে । এমনকি সরকার যদি চায় সকল অন-লাইনের টেক্স এই মেশিনের ভিতর দিয়ে ফিল্টার হয়ে প্রকাশ হবে। চাইলে ১৮ বছরের নীচে কেউ পর্নো সাইটে প্রবেশ করতে পারবেনা। যদি  কেউ  ‍ঢুকতে চাঁয়  তবে তার ভোটার আইডি আইডি নাস্বার  দিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন।

জানা গেছে ২৮ টি আইআইজি এবং ৩ টি নিক্স একচেঞ্জে এই ইকুয়েপমেন্ট বসানো হবে। যার সম্পূর্ন নিয়ন্ত্রন থাকবে বিটিআরসি‘র হাতে । বর্তমানে ডট থেকে ১৯ জন কর্মকর্তা এই প্রকল্পের সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে ।

এ ধরনের একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে ব্রিটিশ সরকারও । বিষেশ করে পর্নো ছবি দেখার ওপর এমন কঠোরতাই আরোপ করতে যাচ্ছে ব্রিটিশ সরকারও। ওয়েবসাইটে পর্নো দেখা ব্যক্তির তথ্য সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক করবে তারা। অনলাইন পর্নোগ্রাফি ব্যবহারের জন্য দেশটির সরকার বয়স যাচাইয়ের পদক্ষেপও হাতে নিয়েছে। এর অর্থ হলো, বয়স যাচাইয়ের জন্য ব্যবহারকারীকে নিজের মোবাইল ফোন ও পাসপোর্টের বিবরণ জানাতে হবে। মোবাইল ফোন ও পাসপোর্টের বিবরণের সঙ্গে বয়স মিলে গেলেই অনলাইনে পর্নো ছবি দেখতে পারবেন ওই ব্যবহারকারী।

এতে করে ব্যবহারকারীর সব তথ্য থেকে যাবে ওই ওয়েবসাইট কর্তৃপক্ষ ও সরকারে কাছে। এর আগে ক্রেডিট কার্ডের তথ্য দেয়ার মাধ্যমে অনলাইনে বয়স যাচাই করা হতো। কিন্তু কিশোর-তরুণেরা বড়দের বা অন্য সদস্যের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে পর্নো দেখে। এ বিষয়টি রোধ করতেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।

ব্রিটিশ আইন অনুসারে, ১৮ বছরের কম বয়সী কোনও ব্যক্তির জন্য এ ধরনের ছবি ধারণ কিংবা প্রেরণ- উভয়ই অবৈধ। এমনকি নিজের ছবিও। ২০১৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত সেক্সটিংয়ে জড়িত ৪ হাজারের বেশি শিশুকে শনাক্ত করেছে ব্রিটিশ পুলিশ। এদের বেশিরভাগের বয়সই ১৩ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে। বারবার বিভিন্ন সতর্কতা সত্ত্বেও ঠেকানো যাচ্ছে না এই ক্ষতিকর সংস্কৃতি।

ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের শুরুর দিকে এ সংক্রান্ত ডিজিটাল ইকোনমি অ্যাক্ট পার্লামেন্টে পাস হয়েছে। দেশটির ডিজিটাল ইকোনমি মন্ত্রী ম্যাট হ্যানককের তত্ত্বাবধানে ব্রিটিশ বোর্ড অব ফিল্ম ক্ল্যাসিফিকেশন নামের একটি নিয়ন্ত্রণ সংস্থা কিছু কিছু পর্নো সাইট ব্লক করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়া ১৮ বছরের নিচের কাউকে পর্নো দেখতে অনলাইনে বাধা দেয়া হচ্ছে। আর নতুন ওই নিয়ম বাধ্যতামূলকভাবে জারি হবে আগামী বছরের এপ্রিল থেকে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন এই নিয়মকে দেশটির ন্যাশনাল সোসাইটি ফর দ্য প্রিভেনশন অব ক্রুয়েলটি টু চিলড্রেন (এনএসপিসিসি) স্বাগত জানিয়েছে। সংগঠনটি দাবি করে আসছিল, পর্নো ছবি কোমলমতি তরুণদের ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতেও একই ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।

তবে এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। তারা বলছে, পর্নো সাইটে বয়স যাচাইয়ের জন্য ব্যবহারকারীকে নিজের মোবাইল ফোন ও পাসপোর্টের বিবরণ জানাতে হবে- এটা ভালো। কিন্তু একই সঙ্গে ব্যবহারকারীর যাবতীয় তথ্য থেকে যাচ্ছে ওই ওয়েবসাইটের ডেটাবেসে। কোনো কারণে হ্যাকাররা ওই তথ্য চুরি করলে ব্যবহারকারীদের সমূহ বিপদ হতে পারে।

প্রসঙ্গত, ব্রিটেনে শিশুদের মধ্যে যৌনতা বেড়ে যাওয়া নিয়ে অনেকদিন ধরে উদ্বেগ দেখিয়ে আসছিল দেশটির সরকার ও অভিভাবকরা। শিশুদের এই যৌনতা ছড়িয়ে পড়ার জন্য বিশ্লেষকরা সবচেয়ে বেশি দায়ী করছেন সামাজিকমাধ্যমকে। প্রথমে এই মাধ্যমেই তারা যৌন আচরণে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। তবে পারিবারিক শিক্ষাকেও গুরুত্ব দিয়েছেন তারা। পরিবারের মধ্য থেকে শিশু সঠিক শিক্ষা না পেলে তার চরিত্রের বিকাশ সম্ভব নয় বলে মনে করছেন তারা। এছাড়া শিশুকে অবাধে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে দেয়াও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে।

দেশটির বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা জানান, অনলাইনে পর্নোগ্রাফি অবাধ হওয়ায় স্কুলের গণ্ডি পেরোনোর আগেই শিক্ষার্থীরা ভয়াবহ এই নেশায় আক্রান্ত হচ্ছে। এ বিষয়ে এক জরিপ প্রতিবেদনে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের এমন আচরণ সম্পর্কে জানেন দুই-তৃতীয়াংশ বা শতকরা প্রায় ৬২ ভাগ শিক্ষক। দেড় হাজারেরও বেশি শিক্ষকের ওপর ওই জরিপ চালানো হয়েছে।

ব্রিটিশ আইন অনুসারে, ১৮ বছরের কম বয়সী কোনও ব্যক্তির জন্য এ ধরনের ছবি ধারণ কিংবা প্রেরণ- উভয়ই অবৈধ। এমনকি নিজের ছবিও। ২০১৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত সেক্সটিংয়ে জড়িত ৪ হাজারের বেশি শিশুকে শনাক্ত করেছে ব্রিটিশ পুলিশ। এদের বেশিরভাগের বয়সই ১৩ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে। বারবার বিভিন্ন সতর্কতা সত্ত্বেও ঠেকানো যাচ্ছে না এই ক্ষতিকর সংস্কৃতি।

ইন্টারনেটের এই অবাধ দুনিয়ায় চাইলেই এখন অনেক কিছু হাতের মুঠোয় পাওয়া যায়। ব্রাউজিং শেষে আপনি সব মুছেও ফেলতে পারবেন। কেউ জানতে পারবে না কিছু। কিন্তু এটাই শেষ নয়, পর্নো ছবি দেখাতে ওয়েবসাইটে ঢুকলে সেই সাইটই চিনে রাখবে আপনাকে। কম্পিউটার বা মোবাইল থেকে হিস্ট্রি মুছে ফেললেও ওই সাইটের নজরদারি এড়ানো যাবে না। এতে চাইলে যেকোনো সময় আপনার নাম, পরিচয়ও প্রকাশ করা যাবে।

Print Friendly, PDF & Email





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar