ad720-90

ল্যাপটপ নাকি ডেস্কটপ? কোনটি কিনলে ভাল হবে?


মানুষের মনে দ্বিধার শেষ নেই, বিশেষ করে কোন কিছু কিনতে গেলে। আর আপনার যদি বাজেটের মধ্যে চলতে হয় তাহলে তো প্রতিটি জিনিসই অনেক চিন্তা ভাবনা করে কিনতে হয়। বর্তমান সময়ে একটা পার্সোনাল কম্পিউটার অনেকটা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে, হোক সেটা লেখাপড়া, কাজকর্ম কিংবা শুধুই বিনোদনের জন্য। এক সময়কার ঢাউস আকৃতির কম্পিউটারের প্রচলন আর এখন না থাকলেও পিসির অনেক রকমফের বের হয়েছে। পাশাপাশি, কে কোনটা কিনবে সেটা নিয়ে কনফিউশনও বেড়েছে।

অনেকেরই সবচেয়ে বড় সমস্যা সৃষ্টি হয় ল্যাপটপ আর ডেস্কটপের মধ্যে কোনটা কিনবেন সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে। উভয় প্রকার কম্পিউটারেরই আলাদা কিছু সুবিধা আছে। তাই সম্ভব হলে দুটোই কেনা যেতে পারে। কিন্তু আপনার যদি বাজেটের কারণে দুইটা থেকে যে কোন একটা বাছাই করতে হয় তাহলে আপনার জন্যই এই পোস্ট।

উদ্দেশ্য এবং প্রয়োজনীয়তা

প্রথমেই বিবেচনা করতে হবে আপনি কোন কাজে পিসি ব্যবহার করবেন এবং আপনার বাজেট কত। বাজেটের কথাটা এ কারণে আসছে যে, একই বাজেটে আপনি ল্যাপটপের চেয়ে অনেক ভালো পারফরমেন্সের ডেস্কটপ পেতে পারেন। আবার ল্যাপটপে পাবেন সহজেই যেখানে খুশি বহন করার সুবিধা। আর আপনি কী ধরনের ব্যবহারকারী সেটা বিবেচনা করা উচিত এ কারণে যে, সেই অধিক পারফরমেন্সের মেশিনটি আদৌ আপনার কাজে লাগবে কি না, নাকি আপনার একটি বহনযোগ্য গড়পড়তা কার্যক্ষমতার কম্পিউটারই যথেষ্ট!

কার্যক্ষমতা

ল্যাপটপ তুলনামূলক ছোট আকারের হওয়ায় এর পরিপূর্ণ কাঠামো এবং যন্ত্রাংশ একত্রিত করতে নির্মাতাদের বাড়তি খরচ হয়। এ কারণে ল্যাপটপের দাম ডেস্কটপের চেয়ে একটু বেশিই হয়। অর্থাৎ আপনি একই বাজেটে যে ধরনের ল্যাপটপ পাবেন তার চেয়ে বেশ শক্তিশালী ডেস্কটপ সেই দামে কিনতে পারবেন। স্পেসিফিকেশনে তাদের মাঝে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য থেকে যায়। একই ক্লক-স্পিড, জেনারেশন ও সিরিজের ডেস্কটপ এবং ল্যাপটপ প্রসেসরের পারফরমেন্সও এক হয় না। ল্যাপটপের প্রসেসরকে ব্যাটারি-বান্ধব করে বানানো হয়, আর ডেস্কটপ প্রসেসরের ক্ষেত্রে পারফরমেন্স চিন্তা করার সুযোগ বেশি থাকে। আবার ডেস্কটপে কুলিং সিস্টেমও ভালো থাকে বলে ওভারক্লক করে পারফরমেন্স বুস্ট করা যায়। গ্রাফিক্স কার্ডের ক্ষেত্রেও একই বিষয় খাটে। ভালো পারফরমেন্সের ল্যাপটপ পিসিও পাবেন তবে সেক্ষেত্রে আপনাকে অনেক টাকা গুনতে হবে। তাই আপনার যদি পারফরমেন্স বিবেচ্য বিষয় হয়, তাহলে যেকোনো বাজেটে ডেস্কটপ পিসিই সুস্পষ্টভাবে জয়ী হবে।

যন্ত্রাংশ সংযোজন এবং মেরামত

ডেস্কটপকে তুলনামূলক সহজে আপনার প্রয়োজনমত কাস্টমাইজ করে নিতে পারবেন। আপনার যে ধরনের ও মানের যন্ত্রাংশ দরকার সেরকম যন্ত্রাংশ দিয়েই আপনার পিসি তৈরি করতে পারবেন। সুবিধামত পার্টস আপগ্রেড করতে পারাটা ডেস্কটপের অন্যতম বড় সুবিধা। সময়ের সাথে ও প্রয়োজনমত আপনার পিসির প্রায় প্রতিটি ক্ষুদ্র অংশ আপনি চেঞ্জ ও আপগ্রেড করতে পারবেন। ল্যাপটপে এই সুযোগ খুবই সীমিত। ল্যাপটপে বড়জোর র‍্যাম আর স্টোরেজ আপগ্রেড করতে পারবেন। ফলে ল্যাপটপ কেনার ক্ষেত্রে শুরুতেই আপনাকে ফিউচারপ্রুফ করে কেনা উচিত। বাজেট বায়ারদের জন্য এটা বড় একটা সমস্যা। এক্ষেত্রেও ডেস্কটপই বিজয়ী।

সহজে বহন করার সুবিধা

আজকাল কম্পিউটারের কাজকর্ম শুধু আপনার অফিসে বা বাসায়ই সীমাবদ্ধ নেই। আপনি কোথাও বেড়াতে গেলে কিংবা ট্রাফিক জ্যামে বসেও হয়তো আপনার প্রেজেন্টেশনটা ফাইনাল করতে চাচ্ছেন- সেক্ষেত্রে কিন্তু একটা পোর্টেবল ডিভাইসই লাগবে। তাছাড়া যাদেরকে সারাদিনই হাল্কা কিছু কাজ করতে হয় তারা অনেক সময় শুয়ে/বসে কাজ করতে চান। সেক্ষেত্রে ল্যাপটপই আপনাকে এই সুবিধা দিতে পারে। পাশাপাশি পাওয়ার ব্যাকআপ ও লোডশেডিংয়ের কথা চিন্তা করলেও ল্যাপটপই বিজয়ী। আপনার যদি একটি বহনযোগ্য কম্পিউটার দরকার হয়, তাহলে ল্যাপটপের কোনো বিকল্প নেই।

ব্যবহার করতে সুবিধা

সুন্দর ডিজাইন, কম্প্যাক্ট বডি, ইন্টিগ্রেটেড ওয়েবক্যাম কিংবা ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর সহ ছোট একটা কমপ্লিট প্যাকেজ হিসেবে ল্যাপটপই সেরা। তাছাড়া আধুনিক ল্যাপটপগুলোতে থাকা টাচস্ক্রিন আপনাকে সহজে ও দ্রুত কাজ করার সুবিধা দিবে। এসব হয়তো আপনি আলাদা কম্পোনেন্ট ব্যবহার করে ডেস্কটপেও পাবেন, কিন্তু এই সিমপ্লিসিটি আপনি ল্যাপটপ ছাড়া পাবেন না। তাছাড়া ক্লাসে নিয়ে যাওয়া কিংবা অফিস মিটিংয়ে একটা নোটবুক (ল্যাপটপ) পিসির বিকল্প নেই। তাই এক্ষেত্রে জিতবে ল্যাপটপ।

গেম খেলা ও ভারী কাজ করা

এ কথাটি না বললেই নয় যে, যারা গেমিং পছন্দ করেন কিংবা নিয়মিত গেম খেলেন তাদের জন্যও ডেস্কটপ পিসি অধিক সুবিধাজনক। আজকাল গেমিংয়ের জন্য বিশেষভাবে তৈরি অনেক ল্যাপটপ পাওয়া গেলেও সত্যি কথা বলতে গেলে ডেস্কটপের পারফরমেন্সকে পেছনে ফেলার মত ল্যাপটপ কমই পাবেন। তাই গেমাররা কিংবা হেভি গ্রাফিক্স নিয়ে যারা কাজ করেন তারা ডেস্কটপকেই অগ্রাধিকার দিতে পারেন।

তাহলে ডেস্কটপ নাকি ল্যাপটপ? কোনটি কিনব?

সবকিছু বিবেচনা করে উপসংহার টানতে গেলে এটাই বলতে হয় যে, আপনি যদি বেশিরভাগ সময় এক জায়গায় থেকে কাজ করেন এবং আপনি গেমিং সহ হেভি টাস্ক এর জন্য পিসি কিনতে চান, সেক্ষেত্রে ভালো মানের একটা ডেস্কটপ কিনে নিন। আর যদি আপনি মোটামুটি মানের গেমিং বা কম লোডের কাজ করেন (নেট ব্রাউজিং, মাইক্রোসফট অফিস, টুকটাক ফটোশপ, টেক্সট/কোড এডিটর) এবং পাশাপাশি পোর্টেবিলিটিও দরকার হয় তাহলে স্পেসিফিকেশন খেয়াল রেখে একটা ল্যাপটপ কিনে নিন।

আর একান্তই আপনার বাজেট সীমিত থাকলে আবার পোর্টেবল ডিভাইস চাইলে মিড রেঞ্জের নোটবুক নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপগ্রেড করার কেমন সুবিধা আছে তা দেখে নেয়া উচিত। আর সাধারণ ব্রাউজিং ও ডকুমেন্ট নিয়ে কাজ করলে এবং বহনযোগ্যতা চাইলে ৩০ হাজার টাকার আশেপাশে এন্ট্রি লেভেলের ল্যাপটপ নিতে পারেন।

For More free net Tips
CLICK HERE





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar