ad720-90

৬০০ কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা গ্রামীণফোনের


লাস্টনিউজবিডি,০৪ অক্টোবর,নিউজ ডেস্ক: দেশের শীর্ষ মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন তাদের ধারাবাহিক কর্মী ছাঁটাইয়ের অংশ হিসেবে এবার ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেছে। এবার সিডিসি (কমন ডেলিভারি সেন্টার) প্রকল্পের মাধ্যমে কর্মী ছাঁটাই পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গ্রামীণফোনের টেকনোলজি বিভাগের অন্তত ৬০০ কর্মীকে ইউরোপের প্রতিষ্ঠান এরিকসন বা নকিয়ার কাছে বিক্রি করে দেয়া হবে বলা জানা গেছে। চলতি অক্টোবর মাসেই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হবে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর জিপির টাউন হলে মিটিং ডেকে এ বিষয়ে পূর্বাভাস দিয়েছেন গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাইকেল ফোলি এবং চিফ টেকনোলজি অফিসার (সিটিও) রাদে কোভাসেভিচ। তারা বলেন, আগামী দিনের টেকনোলজির সঙ্গে আপনারা ক্যাপাবল হবেন না।

তাহলে এই টেকনোলজির বিভাগের মানুষ এরিকসন বা নকিয়াতে গিয়ে কীভাবে ক্যাপাবল হবে? টাউন হলে তাৎক্ষণিক প্রশ্ন করা হলে তারা সঠিক জবাব দিতে পারেননি।

টাউন হলে সিইও এবং সিটিও কর্মীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন, আমরা আপনাদের কোনো চায়নিজ কোম্পানিতে পাঠাব না। আপনারা ইউরোপের কোম্পানিতে কাজ করার সুযোগ পাবেন। সেখানে বড় পদ পাবেন এবং নতুন কোম্পানিতে গেলে সেখানে এক বছরের মধ্যে চাকরি যাওয়ার সুযোগ নেই।

তবে গ্রামীণফোনে কর্মরত আইনজীবীরা বলেন, কোনো আইনেই পাবলিক বা প্রাইভেট কোম্পানি থেকে কর্মী ট্রান্সফারের কোনো বিধান নেই। এখানে যা করার চেষ্টা করা হচ্ছে তা মনগড়া এবং আইনবহির্ভূত।

জানা গেছে, ২০১২ সালেও গ্রামীণফোনে সাড়ে ৫ হাজার কর্মী ছিল। যত বছর গড়িয়েছে প্রতিষ্ঠানের আয় বেড়েছে। ঠিক উল্টো দিকে গত পাঁচ বছরে ৩ হাজারের বেশি কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে নিয়মিত কর্মী আছে ২ হাজার ৪০০ জন। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ৫৩ জন কর্মী চলে যাওয়ার ব্যাপারে ইতিমধ্যেই চুক্তি করেছে গ্রামীণফোন।

বর্তমানে গ্রামীণফোনে দুটি এমপ্লয়ি ইউনিয়ন রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষ রয়েছে টেকনোলজি বিভাগে। এ বিভাগে রয়েছেন ৬৫৪ জন কর্মী। ইউনিয়ন নেতারা বলছেন, রবি আজিয়াটার মতো গ্রামীণফোনের ইউনিয়ন নির্মূল করে দেয়ার জন্য গভীর ষড়যন্ত্রে নেমেছে গ্রামীণফোন।

সিডিসি (কমন ডেলিভারি সেন্টার) প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ৬০০ মানুষের চাকরি চলে যাবে এবং বেশিরভাগ মানুষকে সরিয়ে দেয়া হবে টেকনোলজি টিম থেকে। এর ফলে গ্রামীণফোনের কর্মী এক চতুর্থাংশ কমে আসবে এবং ইউনিয়নও বন্ধ করে দেয়া যাবে।

কর্মীরা বলছেন, ইউনিয়ন থাকার কারণে ছাঁটাই করতে পারছে না। তাই ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে অপারেটরটি। টেকনোলজির এই টিম সবচেয়ে শক্তিশালী। তাদের বাদ দিলেই ইউনিয়ন বন্ধ হয়ে যাবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে গ্রামীণফোনের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, গ্রামীণফোন একসময় একটি মোবাইল ব্যাংকিং কোম্পানি করতে চেয়েছিল; কিন্তু পারেনি। টাওয়ার কোম্পানি করতে চেয়েছিল; কিন্তু পারেনি। ই-কমার্স কোম্পানি করতে চেয়েছিল; কিন্তু পারেনি। নতুন কিছু করতে গিয়ে অপারেটরটি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে এই কর্মী রেখে নতুন কিছু করার সুযোগ হচ্ছে না।

এদিকে গ্রামীণফোনের নতুন এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার জন্য শুক্রবার জিপির সব কর্মীর নিয়ে মহাসম্মেলনের ডাক দিয়েছে কর্মীরা। সেখানে এই প্রকল্পের প্রতিবাদ জানানো হবে এবং ভবিষ্যৎ করণীয় নির্ধারণ করা হবে।

এ ব্যাপারে জানতে গ্রামীণফোনের হেড অব কমিউনিকেশন সৈয়দ তালাত কামালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সিডিসি (কমন ডেলিভারি সেন্টার) প্রকল্পের কথা স্বীকার করেন। তবে তিনি বলেন, এটা একাবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। আলাপ হচ্ছে। কোনো কিছুই ফাইনাল হয়নি। এটা যদি বিজনেস সেন্স হয় তাহলে বিবেচনা করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। সূত্র-যুগান্তর।

Print Friendly, PDF & Email





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar