ad720-90

তরুণ উদ্যোক্তাদের এগিয়ে নিতে চায় ইয়াং বাংলা-মাইক্রোসফট


দেশের তরুণ উদ্যোক্তাদের এগিয়ে নিতে কাজ করে যেতে চায় ইয়াং বাংলা ও মাইক্রোসফট।। ছবি: সংগৃহীতদেশের তরুণ উদ্যোক্তাদের এগিয়ে নিতে কাজ করে যেতে চায় ইয়াং বাংলা ও মাইক্রোসফট। এর অংশ হিসেবে শুরু হয় মাইক্রোসফট-ইয়াং বাংলা ইন্টার্ন সামিট ২০১৮। চার দিনব্যাপী সামিটের শেষ দিনে গতকাল শনিবার দেশের শীর্ষ পাঁচ স্টার্ট আপ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় সামিটে যোগ দেওয়া ইন্টার্নদের। বিজয়ী প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি ভালো আইডিয়া দেওয়া প্রতিটি দলকে ইয়াং বাংলার প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে দেওয়া হবে।

তরুণদের উদ্ভাবনী ভাবনার বিকাশের সুযোগ করে দিয়ে উদ্যোক্তা তৈরির লক্ষ্যে ৩ অক্টোবর ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে শুরু হয় এ সামিট। পুরস্কার বিতরণের আগে জানানো হয়, বিজয়ী দলগুলোর পাশাপাশি সামিটে অংশ নেওয়া সব দলকে নিয়ে কাজ করবে ইয়াং বাংলা। তাদের স্টার্ট আপ আইডিয়াগুলোর সঙ্গে অন্য মন্ত্রণালয়, এনজিও বা প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করার জন্য ইয়াং বাংলা চেষ্টা কর যাবে। তাই ইয়াং বাংলার সঙ্গে নিজেদের আইডিয়াগুলো নিয়ে যুক্ত থাকতে হবে।

সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক বলেন, ‘ইয়াং বাংলার স্লোগান কানেক্টিং দ্য ডটস। তরুণদের লবিস্ট হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে ইয়াং বাংলা। বর্তমান প্রজন্মের চিন্তাভাবনা ও আইডিয়ার সঙ্গে দেশের নীতিনির্ধারকদের সেতুবন্ধ তৈরির উদ্দেশ্যে কাজ করে যাবে প্রতিষ্ঠানটি। আমরা যখন তরুণ ছিলাম, তখন মাইক্রোসফট ছিল আমাদের কাছে বর্তমান সময়ের ফেসবুক-টুইটারের মতোই জনপ্রিয়। ইয়াং বাংলার পাশে মাইক্রোসফটের নাম দেখে ভালো লাগছে। ইয়াং বাংলার মাধ্যমে দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের সঙ্গে মাইক্রোসফটের মতো একটি ব্রান্ডকে যুক্ত করতে পেরেছি আমরা।’

এ সময় রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক আরও বলেন, ‘আমরা কাউকে পেছনে ফেলে যেতে চাই না। আমাদের প্রধানমন্ত্রী সব সময় বলেন, “সবাইকে নিয়ে উন্নয়ন চাই, কাউকে পেছনে ফেলে যেতে চাই না।” আমার ভালো লাগছে, প্রধানমন্ত্রীর চিন্তার সঙ্গে বর্তমান প্রজন্মের চিন্তা মিলে যাচ্ছে। তারা সকলে হাতে হাত ধরে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কাজ করছে। আশা করছি তরুণেরা এভাবেই ইয়াং বাংলার সঙ্গে থাকবে।’

মাইক্রোসফটের কান্ট্রি ডিরেক্টর সোনিয়া বশির কবির বলেন, ‘আমাদের ৫০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা ১০০ ক্যাম্পাস অ্যাম্বাসেডর এখন মাইক্রোসফট ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়ে যাচ্ছেন।’ দেশের ৭ জেলায় ইয়াং বাংলার সহায়তায় প্রতিষ্ঠিত মাইক্রোসফটের ল্যাবগুলোর প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘এই ল্যাবগুলোতে কাজ করে অনেকে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন দেখে ভালো লাগছে। ল্যাবগুলো দুর্দান্ত কাজ করছে।’

তরুণদের বৃহত্তম প্ল্যাটফর্ম ইয়াং বাংলার উদ্যোগে ও মাইক্রোসফটের সহায়তায় আয়োজিত ‘স্টার্ট আপ’ ইন্টার্ন সামিটে অংশ নিতে আবেদন করেন ১ হাজারের বেশি উদ্যোক্তা। সারা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রেজিস্ট্রেশন করে ৩২৪টি গ্রুপ। এর থেকে বাছাই করা ২৫০টি গ্রুপ সামিটে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। সামিটে অংশ নেওয়া দলগুলোর মধ্য থেকে শীর্ষ ১০ দলকে বাছাই করা হয় ৫ অক্টোবর। এরপর তাদের সঙ্গে মার্চ মাসে সিলেক্ট করা শীর্ষ ১০ দল একত্রে তাদের আইডিয়া পিচ করে। এই ২ দলের মধ্য থেকে শীর্ষ ৫ দলকে প্রদান করা হয় অ্যাওয়ার্ড। বিজয়ী দলগুলো হলো: গরুর ডাক্তার, ফিন্যান্স উইজার্ড, ব্লেজ ওয়ারিয়ার্স, বিএসএল ও মাইক্রো বিটস।

তরুণদের উদ্ভাবনী ভাবনার বিকাশের সুযোগ করে দিয়ে উদ্যোক্তা তৈরির লক্ষ্যে ৩ অক্টোবর ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে শুরু হয় মাইক্রোসফট-ইয়াং বাংলা ইন্টার্ন সামিট। ছবি: সংগৃহীতগরুর ডাক্তার দলের প্রধান নিজে একজন গবাদিপশুর চিকিৎসক। তাঁর নিজ সমস্যাগুলোর সমাধানে এক ভিন্নধর্মী অ্যাপস তৈরির আইডিয়া নিয়ে কাজ শুরু করেন তিনি। সামিটে অংশ নেওয়ার পর নিজ আইডিয়াকে আরও পরিপূর্ণতা দানের সুযোগ পান তিনি। একটি গবাদিপশুর অসুখ হলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে কীভাবে পৌঁছাবেন খামারি, তা ভেবে তৈরি করা হয়েছে তার স্টার্ট আপ।

নিজেদের মতো তরুণ উদ্যোক্তাদের আর্থিক সহায়তার কথা মাথায় রেখে ফিন্যান্স উইজার্ড অ্যাপস তৈরি করা হয়েছে। তাদের মূল লক্ষ্য, কোনো আইডিয়া যেন অর্থের অভাবে নষ্ট হয়ে না যায়।

বৃদ্ধদের নিয়ে কাজ করতে চায় ব্লেজ ওয়ারিয়ার্স। যেসব বৃদ্ধ একাকী জীবন কাটাচ্ছেন, হয়তো জীবিকার তাগিদে তাঁদের সন্তানেরাও থাকতে পারছেন না কাছে, তাঁদের জন্য বিশেষ সোশ্যাল মিডিয়া তৈরির পরিকল্পনা করেছে ব্লেজ ওয়ারির্স।

বাংলাদেশে ৩০ হাজারেরও বেশি বাক ও শ্রবণপ্রতিবন্ধীর জন্য শিক্ষামূলক অ্যাপস বানাতে কাজ করে যাচ্ছে বিএসএল। বাংলাদেশের প্রান্তিক পর্যায়ে এই বাক ও শ্রবণহীন শিশুদের জন্য শিক্ষা উপকরণ ও স্কুল স্থাপন খরচের পাশাপাশি সময়সাপেক্ষ বিষয়। কিন্তু বাসায় থাকা অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহার করে তারা এখন থেকে শিক্ষা লাভ করবে, এটাই বিএসএলের চাওয়া।

প্রকৃতিবান্ধব পণ্য উৎপাদন ও বণ্টন করতে চায় মাইক্রো বিটস। তাদের লক্ষ্য অপচনশীল দ্রব্য যেমন পলিথিনের বদলে পচনশীল প্যাকেজিং ব্যবস্থা এবং পণ্য সরবরাহের এমন এক প্রক্রিয়া তৈরি, যাতে প্রকৃতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।

ফাইনাল রাউন্ডে বিজয়ী গ্রুপগুলোর জন্য ব্যবসা শুরুর মূলধনের জোগান থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের সাপোর্টের ব্যবস্থা করবে মাইক্রোসফট ও ইয়াং বাংলা। দেশের সেরা পাঁচ স্টার্ট আপ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে ইয়াং বাংলা নেটওয়ার্ক। এই নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য সেই নেটওয়ার্ক ব্যবহারের সুযোগ থাকছে। তাঁরা নিজেদের উদ্যোগকে এগিয়ে নিয়ে যেতে দেশ ওগমেডিক্স, সোল শেয়ার, প্রিয়শপ, সেবা এক্সওয়াইজেড ও ই-ভিলেজের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের সুযোগ পাবে।

সমাপনী অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে অ্যাওয়ার্ড তুলে দেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, সিআরআইয়ের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সাব্বির বিন শামস এবং সিআরআইয়ের কো-অর্ডিনেটর তন্ময় আহমেদ। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ২০১৫ ও ২০১৭ সালের জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড বিজয়ীসহ, মাইক্রোসফট-ইয়াং বাংলা প্ল্যাটফর্মের সব ট্রেনার, কো-অর্ডিনেটর, ক্যাম্পাস অ্যাম্বাসেডরসহ স্বেচ্ছাসেবী ও অন্যান্যরা।





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar