ad720-90

যেসব সামুদ্রিক প্রাণি অদৃশ্য হতে পারে


কিছু সামুদ্রিক প্রাণি আছে যারা বিপদ দেখলে পানিতে রং ছড়িয়ে দিতে পারে, কিংবা আলোর বিভ্রম সৃষ্টি করে বিপদ থেকে নিজেদের বাঁচাতে পারে। এদের মধ্যে স্কুইড কিংবা অক্টোপাসের কথা আমরা জানি। কিন্তু সম্পূর্ণরূপে অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে, এমন প্রাণিও আছে সমুদ্রে !  

গ্লাস অক্টোপাস
সমুদ্রে দুটি উপায়ে নিজেদের লুকায় সামুদ্রিক প্রাণিরা। সাগরের তলদেশে বসবাসকারী প্রাণি বালি বা পাথরের সঙ্গে  মিশে যেতে পারে কিংবা লুকিয়ে পড়তে পারে প্রবালের আড়ালে। এ সময় এটি প্রায়শই কালো হয়ে যায়। অতএব অদৃশ্য হওয়ার প্রয়োজন হয় না।

সমুদ্র পৃষ্ঠের কাছাকাছি যখন এই প্রাণিগুলো চলে আসে তখন শিকারীর কাছ থেকে লুকাতে চাইলে এক বিশেষ প্রক্রিয়ায় আলোর ঝলকানি প্রদর্শন করে। বায়োলিউমিনিসেন্স নামে পরিচিত এই প্রক্রিয়ায় প্রাণিগুলো তখন শিকারীদের সামনে বিভ্রম সৃষ্টি করে। আর শিকারীরা ভাবে সূর্যের রঙিন আলো পৃষ্ঠভাগে পড়েছে যেখানে আদৌ তার শিকারটি নেই। 

এই উপায়ে নিজেকে অদৃশ্য করার ক্ষমতাসম্পন্ন প্রাণির একটি গ্লাস অক্টোপাস (ভিত্রেলেলোনেলা রিচার্ডি)। প্রাণিটি তার জেলির মতো নরম-আঠালো শরীরকে প্রয়োজনে ৪৫ সেন্টিমিটার (১৮ ইঞ্চি) পর্যন্ত প্রসারিত করে। বিপদ দেখলে এটি পরিপাকতন্ত্র এবং চোখ ও এর অপটিক স্নায়ু ছাড়া সম্পূর্ণ শরীরটিকে শত্রুদের কাছে প্রায় অদৃশ্য করে ফেলে।

এ ক্ষেত্রে এটি শিকারিদের চোখে খুব প্রবলভাবে পড়ার সম্ভাবনায় থাকা তার পেরিফেরিয়াল দৃষ্টিকে হ্রাস করে। কিন্তু শরীরকে এমনভাবে সাজায় যেন ছায়াটিকে ছোট করা যায়। ফলে নিজেরা শিকারিদের শনাক্ত করতে পারলেও শিকারিরা তাদেরকে দেখতে পায় না।

গ্লাস স্কুইড

গ্লাস পরিবারের অন্তর্ভুক্ত প্রায় ৬০ প্রজাতির স্কুইড  রয়েছে। সমুদ্রের ২০০ থেকে ১০০০ মিটারের মধ্যে ‘মহাজাগতিক’ অঞ্চলে বসবাস করে এরা।

গ্লাস স্কুইডের শরীর পুরোপুরি স্বচ্ছ, তবে এদের বড় চোখগুলি অপ্রকাশিত। এটি তাদের জন্য একটি সমস্যা। যেহেতু নিচের সাঁতার কাটা শিকারীরা সহজেই তাদের ছায়া দেখতে পারে। তবে গ্লাস স্কুইড তাদের লুকানোর জন্য ছদ্মবেশের একটি চতুর রূপ ব্যবহার করে। চোখের নিচে একটি বিশেষ কৌশলে এরা আলো তৈরি করতে পারে।

সেই আলো সূর্যালোক থেকে নিচে ফিল্টারিং হয়ে আসা আলোর অনুরূপ দেখায়, তাই এটি সম্পূর্ণরূপে নিচে সাঁতার কাটা শিকারীদের কাছে তখন অদৃশ্য করে তোলে।

পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা দেখেছেন, স্কুইড বিশেষ প্রক্রিয়ায় যে আলো সৃষ্টি করে তা বিস্ময়করভাবে চারদিকের অন্য আলোর সঙ্গে মিশে যায়। তখন এমন একটি বিভ্রম তৈরি করে যা দেখে মনে হয় আলোটি চতুর্দিক থেকে আসছে। এতে প্রাণিটির একটি ছদ্মবেশ তৈরি হয়। 





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar