ad720-90

নিয়নবাতি [পর্ব-৫১] :: আসুন খুব সহজেই তৈরী করি শক্তিশালী সুপার সিকিউরিটি সিস্টেম; চোর পালানোর আগেই বুদ্ধি বাড়ান!!!


যদি আপনি Doom2 মুভি দেখে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই ঋত্বিক এবং ঐশ্বরিয়ার তলোয়ার চুরির সীনটি মনে আছে, যেখানে তলোয়ারটি লেজার লাইট সিকিউরিটিতে সুরক্ষিত ছিলো….তবুও ধুম্মা চলে ধুম্মা চলে করতে করতে চুরিটা হয়েই গেল!

আজ আমরা এমনই শক্তিশালী সুপার সিকিউরিটি লেজার সিস্টেম সম্পর্কে জানবে; চাইলে আপনি নিজেও এমন সিকিউরিটি সিস্টেম নিজের হাতে বানাতে পারবেন অতি সহজেই!

প্রয়োজনীয় ইলিমেন্ট:
(১) একটি লেজার লাইট
(২) একটি এনড্রোয়েড ফোন
(৩) Motion Detector Pro [App]

গঠন:
মুখে বলার আগে বিষয়টা একটি চিত্রতে দেখি→

মনে করুন আপনি লেজার সিকিউরিটি সিস্টেম’টি আপনার দরজার সামনে সেট করলেন যাতে অযাচিত কেউ প্রবেশ করলে আপনি সেটা জানতে পারেন এবং উক্ত মানুষটির ফটো এভিডিয়েন্স হিসেবে সংরক্ষণ করতে পারেন। সবার আগে আপনি আপনার দরজা পার্শ্ববর্তী দেয়ালে কিংবা কোন স্ট্যান্ডে একটি লেজার লাইট নির্দিষ্ট উচ্চতায় সেট করুন এবং দরজাটির দৈর্ঘ্যের বেশী দুরত্বে অপর পাশে একটি দৃঢ় স্ট্যান্ডে মোবাইলটি সেট করবেন। এবার আপনার মোবাইলে Motion Detector Pro App টি ওপেন করুন [ এপ্লিকেশনটির যাবতীয় ইনস্ট্রাকশন আপনি শুরুতেই পেয়ে যাবেন; যা খুবই সহজ এবং ইফেক্টিভ]। লেজার লাইটের ফোকাস যেন আপনার এনড্রোয়েড ক্যামেরার ফ্রেমের ভেতর হয় সেটা খেয়াল রাখবেন।

এখন কেউ যদি দরজা দিয়ে প্রবেশ করে এবং লেজার রশ্মী অতিক্রম করে তাহলে এপ্সটি অটোমেটিক সেটা ট্রিগার করবে এবং আপনার সেট করা মোবাইল নাম্বার/ ইমেইলে এলার্ম নোটিফিকেশন পেয়ে যাবেন[ আপনার সেটে সংযুক্ত সীম হতেই মেসেজ চার্জ কাটবে; ইমেইলের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট সংযোগ আবশ্যক]।
যদি মোবাইলে ডাটা কানেকশন চালু থাকে তবে [মোবাইল/নাম্বার সেট না করা হলেও] তাদের সার্ভারে Cloud Image হিসেবে উক্ত সময়ে প্রবেশকৃত মানুষটির ফটো সংরক্ষিত থাকবে [ ক্লিয়ার ফটো পেতে আপনার ক্যামেরা সেটিংস-পজিশন ঠিক রাখবেন] যা surveillance photo অপশন হতে আপনি দেখতে এবং প্রয়োজনে ডাউনলোড করতে পারবেন, আর মোবাইল বা ইমেইল যুক্ত থাকলে সরাসরি cloud image এর লিংকও পেয়ে যাবেন।

হ্যাকিং:
প্রতিটি সিকিউরিটির পেছনের একটা সিক্রেট লুপ থাকে যেটার দ্বারাই হ্যাকারেরা হ্যাকিং সম্পন্ন করে; এটিও শতভাগ হ্যাকিং প্রুফ নয়। ধরুন আপনি আপনার দরজা হতে ২ ফিট উপরে লেজার এবং মোবাইল সেটা করলেন তাহলে কোন ব্যক্তি অনায়েসেই হামাগুড়ি দিয়ে লেজার বিম টাচ না করেই অতিক্রম করতে পারবেন।
তাহলে উপায়??
ঠিক এমনই সমস্যা সমাধানে দুইটা উপায় আছে (১) একাধিক লেজার এবং মোবাইল দ্বারা ঘন সন্নিবেশ করে সিকিউরটি সিস্টেম এ্যারেঞ্জ করা; যা সত্যিই অযৌক্তিক কেননা আপনি ১০ লেজার লাইট কিনতে পারলেও ১০ টা এনড্রোয়েড ফোন তো কিনতে পারবেন না। (২) মিরর বা আয়না ব্যবহার করা যাতে নিচে থাকা লেজারের মূল বিম আয়নাতে প্রতিফলিত হয়ে [আপতন কোণ = প্রতিফলন কোণ হিসাবে] আপনার মোশন ডিটেক্টরের উপরে পৌঁছায়, তাতে যেকোন একটা বিম বিচ্ছিন্ন হলেই ট্রিগার করবে।
আসুন পুরো বিষয়টা আরও একটা চিত্রে দেখি→

সুপার হ্যাকিং:
সুপার সিকিউরিটির পেছনেও আছে সুপার হ্যাকিং; যেমন আপনি যদি একটি কাগজ দ্বারা লেজার বিম বিচ্ছিন্ন করেন তাহলে পরবর্তী ট্রিগার হতে নূন্যতম ২০ সেকেন্ড সময় হাতে পাবেন; সেই সমটুকু সেন্সর ইমেইজ আপলোড এবং প্রসেসিং করার কাজে ব্যায় করবে আর এই ২০ সেকেন্ড সময় একজন মানুষের জন্য প্রবেশ করা এবং বেরিয়ে যাবার জন্য এনাফ যেখানে ক্যামেরা আপনার ফটো তুলতে পারবে না। এমনকি ঐ সময়ে যদি উক্ত মোবাইলে কল দেওয়া হয় তাহলেও সেন্সর কার্যত ঐ সময়ের জন্য ডিএক্টিভ থাকবে ফলে সিকিউরিটি সিস্টেম আপনাকে ট্রাক করতে ব্যর্থ হবে।

সুপার ডুপার সিকিউরিটি:
আপনি যদি Dhoom2 সিনেমা দেখে থাকেন তাহলে তলোয়ার চুরির সময়ে অদৃশ্য লেজার সিকিউরিটি নিশ্চয়ই দেখেছেন; এমন আলো হলো ইনফ্রারেড লাইট যা আমরা চোখে দেখতে পাইনা। আপনার রিমোট কনট্রোলের এলইডি এর আলো যেমন আপনি চোখে দেখতে পান না ঠিক তেমনি….আমরা এমন আলো দেখতে না পারলেও মোবাইলের ক্যামেরা কিন্তুু ঠিকই সেটা দেখতে পায় তাই আপনি লেজারের পরিবর্তে ঐরকম ইনফ্রারেড লাইট ইমিটিং এলইডি ব্যবহার করতে পারেন। যদি আপনি সরাসরি রিমোট ব্যবহার করতে চান তাহলে ২ টা সমস্যা হবে (১) লাইট ব্লিকিং করবে যেটা কিনা রিমোটের ইনট্রিগেটেড সার্কিটের কারনে হয়ে থাকে, আসলে এই জন্যই রিমোটের বিভিন্ন বাটন বিভিন্ন কমান্ডে কাজ করে (২) আলো ফোকাস পাবে না; কেননা এই আলো একটু দূরত্ব অতিক্রম করার পরই চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে; এটার জন্য আপনি অবতল লেন্স ব্যবহার করতে পারেন।

ইট্টু খানি এক্সট্রা:
যদি আপনার এমন মোশন সেন্সর ভালো না লাগে তবে আপনি এই Motion Detector এপটি ব্যবহার করতে পারেন তাতে ক্যামেরা কোন গতিবিধি পেলেই সাউন্ড এলার্ম দিবে যা আপনি হেডফোন জ্যাকে স্পিকার যুক্ত করে Large Alarm Signal তৈরী করতে পারেন।

শেষকথা: হয়তো আমি পুরো বিষয়টা সহজ করে বোঝাতে পারিনি আগেই “সরি” শব্দটা বলে নিলাম; তবে আপনি যদি একটু মাথা খাটান তবে আপনিও হয়ে যেতে পারেন সুপার সিকিউরিটি এক্সপার্ট কিংবা সুপার হ্যাকার;বিলিভ ইট অর নট শুধুমাত্র আপনার ইচ্ছাশক্তি আপনাকে সুপার হিউম্যান তৈরী করে দিতে পারে।

ইনশাল্লাহ নিয়নবাতি ১০০তম পর্ব হবে এমনই একটা সফটওয়ার যা কিনা যে করো গোপন বিষয় যেমন পাসওয়ার্ড, পিন কোড ইত্যাদি হ্যাক করতে পারবে; মজার কথা হলো এটি অনেকাংশে অজান্তেই ব্রেইনের পাওয়ারকে ব্যবহার করবে।

ফেসবুকে আমি→ নিশান আহম্মেদ নিয়ন
যাই হউক ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, শুভকামনা রইলো…আল্লাহ হাফেজ





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar