ad720-90

বিদ্যুতের অপচয় রোধে ‘দুর্লভ’ পদার্থের খোঁজ


কেবলের মধ্যে দিয়ে চলাচলে আর বাধা পেতে হবে না বিদ্যুৎকে। ফলে, বিদ্যুতের অপচয় হবে না বিন্দুমাত্র। যতটা বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে, তার পুরোটাই পৌঁছে দেওয়া যাবে বহু দূর-দূরান্তরের প্রত্যন্ত এলাকার গ্রাহকদের কাছে। অপচয় হবে না বলে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচও অনেকটা কমে যাবে। এমনকি, মরুভূমিতে সূর্যালোক বেশি বলে সেখানে বানানো সস্তার সৌর বিদ্যুৎও এ বার বহু বহু দূরের এলাকায় পৌঁছে দেওয়া যাবে। কোনও অপচয় ছাড়াই। যা জলবিদ্যুৎ ও তাপবিদ্যুতের উৎপাদন কমাতে সহায়ক হবে। তার ফলে, যেমন চাপ কমবে নদীর উপর, তেমনই তা কমাবে উষ্ণায়নের আশঙ্কাও।

সেই সম্ভাবনাই জোরালো হয়ে উঠল এক নজরকাড়া আবিষ্কারে। প্রায় এক শতাব্দীর তন্নতন্ন তল্লাশের পর খোঁজ মিলল একটি অতিপরিবাহী পদার্থের। যা ঘরের তাপমাত্রাতেই হয়ে উঠবে অতিপরিবাহী।

যা দিয়ে বিদ্যুৎ পরিবহণের জন্য কেব্ল বানালে বিদ্যুতের কোনও অপচয় হবে না। কারণ, ওই অতিপরিবাহী পদার্থ দিয়ে বানানো কেব্ল তার ভিতর দিয়ে বিদ্যুৎ চলাচলে কোনও বাধা দেবে না।

ওই আবিষ্কারের গবেষণাপত্রটি বেরতে চলেছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘ফিজিক্যাল রিভিউ লেটার্স’-এ। গবেষকদলের নেতৃত্বে রয়েছেন জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূপদার্থবিজ্ঞানী রাসেল হেমলে।

ল্যান্থানাম মৌলের সঙ্গে হাইড্রোজেন মৌলের হাতে হাতে জোড় বেঁধেই তাঁরা ওই অতিপরিবাহী পদার্থটি বানিয়েছেন। যার নাম- ‘ল্যান্থানাম হাইড্রাইড’। যা ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রাতেও অতিপরিবাহী হয়ে ওঠে। গত ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চেষ্টার পরেও এমন পদার্থ বানানো সম্ভব হয়নি।

কী ভাবে বানানো হয়েছে ওই ‘দুর্লভ’ পদার্থটি?
ওই অতিপরিবাহী পদার্থ ল্যান্থানাম হাইড্রাইড বানানো হয়েছে ল্যান্থানাম মৌলের সঙ্গে হাইড্রোজেনের জোড় বাঁধিয়ে। যেখানে একটি ল্যান্থানাম পরমাণুর ১০টি হাতের সঙ্গে হ্যান্ডশেক করেছে ১০টি হাইড্রোজেন পরমাণুর একটি করে হাত।

কাজটা খুব সহজে করা যায়নি। ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ল্যান্থানাম পরমাণুর সঙ্গে হাইড্রোজেন পরমাণুগুলিকে জোড় বাঁধানোর জন্য বাইরে থেকে প্রচুর চাপ প্রয়োগ করতে হয়েছে। যে চাপের পরিমাণ ২০০ গিগা-পাসকাল বা বায়ুমণ্ডলের স্বাভাবিক চাপের ২০ লক্ষ গুণ! ওই প্রচণ্ড চাপে ল্যান্থানাম হাইড্রাইডের অণুকে এত জোরে ঠেসে ধরা হয়েছে যে, সেই যৌগে ল্যান্থানাম ও হাইড্রোজেনের হাতগুলি আকারে ছোট হয়ে গিয়েছে। তার ফলেই যৌগটি হয়ে উঠেছে অতিপরিবাহী। তাতে দেখা গিয়েছে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে (যাকে আমরা ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বলি) ওই পদার্থটি হয়ে ওঠে আক্ষরিক অর্থেই, অতিপরিবাহী।





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar