ad720-90

স্মার্ট বাড়ি স্মার্ট ঘর


স্মার্ট বাড়ির নিয়ন্ত্রণ থাকে হাতের মুঠোয়, মানে স্মার্টফোনে। ত্রিমাত্রিক ছবি: বিটিআইপ্রযুক্তির ছোঁয়ায় দৈনন্দিন ব্যবহারের অনেক কিছুই স্মার্ট হয়ে উঠছে। নিত্যনতুন প্রযুক্তিপণ্যের দিকে ঝুঁকে পড়া বা প্রযুক্তিবান্ধব পরিবেশে বসবাস এখন আর বিলাসিতা নয়। বরং জীবনযাপনের মান উন্নয়নের ক্ষেত্রে বেশ সহায়ক। স্মার্টহোম তেমনই একটি বিষয়। যা আধুনিক জীবনে ধীরে ধীের স্থান করে িনচ্ছে।

স্মার্ট হোম কী

বাড়ির কি বুদ্ধি কমে গেল যে আরও স্মার্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে! সরাসরি ইট–পাথরের বাড়ির বুদ্ধি না বাড়লেও স্মার্ট বাড়িতে বিভিন্ন ধরনের ‘বুদ্ধিমান’ যন্ত্র সংযোজন করে দৈনন্দিন কাজ আরও সহজ করা যেতে পারে। এখানে বাড়ির সব স্মার্ট যন্ত্রই একটি ওয়াই–ফাই নেটওয়ার্কের আওতায় থেকে যুক্ত থাকে এবং প্রয়োজনে এক যন্ত্র আরেকটির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। যন্ত্রগুলোর তথ্য জানা ও নিয়ন্ত্রণের কাজটিও করা হয়ে থাকে স্মাটফোন বা ট্যাব থেকে। কখনো কখনো কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য আলাদা যন্ত্র থাকতে পারে। নিরাপত্তা যন্ত্রগুলো, গ্যাস, বিদ্যুতের মতো সেবা কী মাত্রায় বা কী পরিমাণে ব্যবহৃত হচ্ছে, সেগুলোও স্মার্ট হোমের আওতায় থাকে।

স্মার্ট হোমের আরও বিশেষ কিছু সুবিধা হলো, নিয়মিত করা হয় এমন কাজগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন করা। যেমন ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা, ঘর পরিষ্কার করা, বাগানের গাছে
পানি দেওয়ার মতো কাজগুলো নিয়ন্ত্রণ এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন করা
সম্ভব।

আবাসন নির্মাণ প্রতিষ্ঠান বিল্ডিং টেকনোলজি ও আইডিয়া (বিটিআই) লিমিটেড সম্প্রতি দেশে তাদের স্মার্ট হোম প্রকল্পটি উন্মুক্ত করেছে। আগে থেকে তৈরি কোনো প্রকল্পের সঙ্গে স্মার্ট প্রযুক্তি যুক্ত করা নয়, বরং বাড়ি নির্মাণের শুরু থেকে প্রতিটি ধাপে স্মার্ট হোম ধারণাটি প্রয়োগের চেষ্টা করছে। বিটিআইয়ের বিক্রয় ও বিপণন বিভাগের নির্বাহী পরিচালক মাহ্​মুদুল কবিরের সঙ্গে ‘থ্রি’ নামের এই প্রকল্পের বিষয়ে কথা হয়। তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির যে প্রসার এবং প্রয়োজনীয়তা, তা এ রকম প্রকল্প শুরু করার ব্যাপারে সাহস দিয়েছে। মূল ভবনের সঙ্গে সঠিক প্রযুক্তির সমন্বয় জীবনমান উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে। আর বিষয়টি সামনে রেখেই তারা এই প্রকল্প সব দিক থেকে একটি কার্যকর একটি স্মার্ট হোম তৈরি করেছেন।

প্রকল্পের প্রকৌশলী সাফায়েতুল ইসলাম জানালেন, ভবনের নকশা এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যেখানে নিরাপত্তায় বিশেষ কিছু সুবিধা পাওয়া যাবে। পার্কিং, মূল প্রবেশপথ এবং প্রতিটি তলায় প্রবেশের জন্য নিরাপত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার থেকে শুরু করে প্রতিটি ফ্ল্যাটের সবকিছুই প্রায় স্মার্ট হাবের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আর এটি শুধু ঘরে থাকা অবস্থায় নয়, বরং স্মার্টফোনের মাধ্যমে বিশ্বের যেকোনো স্থান থেকেই এটি একইভাবে ব্যবহার করা যায়।

স্মার্ট পরিবেশের যন্ত্র

আমাজন, অ্যাপল, গুগলের মতো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো সাম্প্রতিক সময়ে স্মার্ট হোমের উপযোগী যন্ত্র ও সামগ্রিক পরিবেশের মান উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। নতুন যেকোনো স্মার্ট যন্ত্র কেনার সময় খেয়াল রাখা জরুরি—আগের যন্ত্রগুলো এবং সামগ্রিক পরিবেশের সঙ্গে তা সমন্বিতভাবে কাজ করছে কি না। সাধারণ অধিকাংশ স্মার্ট হোম ইকোসিস্টেমের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে এমনভাবেই তৈরি করা হয়ে থাকে স্মার্ট ডিভাইসগুলো।

আগামী বছরগুলোতে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি অন্যান্য আরও প্রায় সব ধরনের প্রতিষ্ঠান এ ক্ষেত্রে যুক্ত হবে। পাশাপাশি সাধারণ ব্যবহারকারী ও ক্রেতার সংখ্যাও বাড়বে বহুগুণ। ২০২৩ সালের মধ্যে সারা বিশ্বে এই বাজার ১০ হাজার কোটি ডলার অতিক্রম করবে।

স্মার্ট স্পিকার

বর্তমানে অনেক প্রতিষ্ঠানই স্মার্ট হোমের উপযোগী স্মার্ট স্পিকার তৈরি করছে। যদিও এসবের মধ্যে আমাজনের ইকো স্পিকারটি প্রথম জনপ্রিয়তা পায়। কথা বলে নিয়ন্ত্রণ উপযোগী এই যন্ত্রের মাধ্যমে দৈনন্দিন কাজের অনেক তথ্য জানার সুযোগ রয়েছে। একই ধরনের অপর একটি যন্ত্র হলো গুগল হোম। দেখতে সাধারণ স্পিকারের মতো হলেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন এই যন্ত্র হয়ে উঠতে পারে স্মার্ট হোমের কেন্দ্রবিন্দু।

তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ

কেন্দ্রীয়ভাবে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা হোক অথবা আলাদাভাবে নিয়ন্ত্রিত হোক। স্মার্ট হোম ব্যবস্থার মাধ্যমে তা একই জায়গা থেকে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। শুধু যে নিজে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এমন নয়। বাসায় মানুষের উপস্থিতি বা কোন কক্ষে কে আছেন, তার ওপর নির্ভর করেও স্বয়ংক্রিয়ভাবে কক্ষের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।

নিরাপত্তা

স্মার্ট হোম ব্যবস্থা, বাড়ির নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সব থেকে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে। ভবনে মূল প্রবেশপথ, গাড়ি পার্কিং থেকে শুরু করে বাড়িতে প্রবেশ এমনকি প্রতিটি কক্ষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করা যেতে পারে।

স্মার্ট হোম চাই, এর অর্থ এমন নয় যে বাড়ির সবকিছু পরিবর্তন করে ফেলতে হবে বা বর্তমান বাড়ি বিক্রি করে নতুন বাড়ি কেনার লক্ষ্যে দৌড়াতে হবে। স্মার্ট হোমের মূল উদ্দেশ্য হলো জীবনযাপনের পদ্ধতি আরও সহজ করা, সেটি একেবারে সম্পূর্ণ অংশ হতে পারে অথবা ধাপে ধাপে প্রয়োজন অনুযায়ী পরিবর্তন হতে পারে। তবে নিজের বাড়িকে পুরোপুরি ‘স্মার্ট’ করতে চাইলে তা একটু ব্যয়বহুল হবে বৈকি।





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar