ad720-90

‘চ্যালেঞ্জের’ মুখে স্মার্টফোন আমদানিকারকরা


লাস্টনিউজবিডি, ১৬জুন: বাজেটে বাড়তি শুল্কে ‘ব্যবসায়িক চ্যালেঞ্জের’ মুখে পড়ছে স্মার্টফোন আমদানিকারকরা। এবার ১৫ শতাংশ বাড়তি আমদানি শুল্কের কারণে স্থানীয়ভাবে সংযোজিত স্মার্টফোনের বিপরীতে আমদানিকৃত স্মার্টফোনের মোট কর দাঁড়াচ্ছে তিনগুণ বেশি।

টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার টেকশহরডটকমকে বলছেন, এখন পরিস্থিতি এমন করা হয়েছে যে হুয়াওয়ে, শাওমি, অপো হতে শুর করে নোকিয়া পর্যন্ত সব ব্র্যান্ডেরই নিশ্চিতভাবে লোকাল প্রোডাকশন এসেনশিয়াল হয়ে গেছে। অন্যথায় তারা লোকাল বাজারের সাথে টিকবে না।আমদানিকারকরাও বলছেন ব্যয়বহুল আমদানিতে গ্রাহক পর্যায়ে বাড়তি দামের বোঝা ও সংযোজনের সঙ্গে এত বেশি পার্থক্যের কারণে তাদের টিকে থাকা চ্যালেঞ্জের হবে। একবারে এত করের বোঝা দেয়ার আগে আরও সময় চান তারা।

আমদানিকারকদের এমন দাবির বিষয়টি তুললে মন্ত্রী বলছেন, ‘আর কেনো এদের সময় দেয়া হবে? কারণ কি? ছয় মাসে যদি দেখা যেত পারা যাচ্ছে না, লোকাল প্রোডাকশন হচ্ছে না, চাহিদা মেটানো যাচ্ছে না- তাহলে সময়ের কথা চিন্তা করা যেতো। কিন্তু সফলভাবে এগিয়ে গেছে খাত। ‌‌’এখন দেশে মোট মোবাইল বাজার হলো তিন কোটি ইউনিটের। আটটি কারখানা দিয়ে মোট চাহিদার ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কাভার করা গেছে। যেখানে এই কোম্পানিগুলো প্রোডাকশনের ইনিশিয়াল স্টেইজে আছে, কেউ বাজারে আসছে আসছে করছে। তাহলে এই বছরের মধ্যে দেখা যাবে এরা বাজারের ৫০ শতাংশ দখল করে ফেলেছে’ বলছিলেন মোস্তাফা জব্বার।

কোয়ালিটির প্রশ্নে মন্ত্রী বলছেন, অনেকেই বলে ‘লো কোয়ালিটি’ লোকাল ব্র্যান্ড। স্যামসাং কি লোকাল ব্র্যান্ড ? স্যামসাং তো প্রমাণ করে দিয়েছে বাংলাদেশের বাজার লুক্রেটিভ এবং এই বাজারে প্রোডাকশন কন্টিনিউ করা যায়। তিনি বলেন, দেশে ফিচার ফোনের দখল ৭০ শতাংশ, যার অধিকাংশ কম সামর্থ্যের মানুষ ব্যবহার করে। সেখানে কোনো দাম বাড়ানো হয়নি। সে হিসেবে স্মার্টফোন নিয়ে বাড়তি চাপও হওয়ার কথা নায়।

‘আর হাইটেক পার্কে ট্যাক্স হলিডে দেয়া হচ্ছে, বাইরে জায়গা নিলে সেখানে হাইটেক পার্ক ঘোষণা দেয়া হবে, ক্যাশ ইনসেনটিভ রয়েছে। বুঝতে পারা যাচ্ছে না, বাংলাদেশে কারখানা করতে কোম্পানিগুলোর সমস্যা কোথায় ? প্রশ্ন করেন মন্ত্রী।
দেশে হুয়াওয়ে, শাওমি, আইফোন, আসুস, অপো, ভিভো, নোকিয়া , মটোরোলা, ওয়ানপ্লাস, ম্যাক্সিমাস, অনার রিয়েলমির মতো ব্র্যান্ডগুলো আমদানিনির্ভর। বিপরীতে দেশে সংযোজিত হচ্ছে স্যামসাং, আইটেল-টেকনো, ওয়ালটন, সিম্ফনি, লাভা, উই, ওকে মোবাইল, উইনস্টার ব্র্যান্ড। স্যামসাং ফ্লাগশিপ মডেলগুলো ছাড়া সব হ্যান্ডসেটই দেশে সংযোজন করে।

টেকনোও চাহিদার বড় একটি অংশ এখানে সংযোজন করে। অপো বাংলাদেশের প্রশাসনিক প্রধান জন লি গণমাধ্যমকে বলেন, এমন করে কর বাড়ানোর বিষয়টি আগে জানানো প্রয়োজন ছিল। এতে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে প্রস্তুতি নেয়া যেতো। ‘তিনগুণ বেশি করে বাড়তি দামের স্মার্টফোন তো কেউ কিনবে না। আমদানি আটকে যাবে এখন।

দেশে নোকিয়া, আইফোন, ম্যাক্সিমাস ও রিয়েলমি স্মার্টফোনের আমদানিকারক ইউনিয়ন গ্রুপ। ইউনিয়ন গ্রুপের মোবাইল ডিভিশনের বিজনেস কন্ট্রোলার মোহাম্মদ আসিফ আলমগীর জানান, স্থানীয় ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে সরকারের যে মনযোগ তা ঠিক আছে। ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের অবশ্যই যাওয়া উচিত। কিন্তু অবকাঠামো এখনও তৈরি নয়। ‘কয়েকটি কোম্পানি-ইম্পোর্টার ম্যানুফ্যাকচারিং করছে। কিন্তু অধিকাংশ ইম্পোর্টারই ম্যানুফ্যাকচারিং করছে না। যেভাবে কর বেড়েছে তা দুশ্চিন্তার কারণ। নতুন করে দাম বেড়ে যাবে ২৫ শতাংশের মতো, এটা মিনিমাম বাড়বেই’ বলছিলেন তিনি।

উল্লেখ্য, বর্তমানে আমদানি করা স্মার্টফোনে মোট কর ৩২ শতাংশ। এই ৩২ শতাংশের মধ্যে আমদানি শুল্ক ছিল ১০ শতাংশ। ২০১৯-২০ বাজটে যা ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে হিসাব অনুয়ায়ী আমদানির সময় সব মিলিয়ে ৫০ শতাংশের বেশি কর ধার্য হবে। অন্যদিকে দেশে সংযোজিত স্মার্টফোনের মোট কর ১৭ শতাংশের মতো। ২০১৯-২০ বাজেটে তা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। সঙ্গে স্মার্টফোনের গুরুত্বপূর্ণ কিছু যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্ক ছাড়ের প্রস্তাব রয়েছে এতে। আর দেশে উৎপাদন করলে হ্যান্ডসেটের কর হবে মাত্র ৫ শতাংশ, যা নতুন বাজটে আগের মতোই আছে।

লাস্টনিউজবিডি/ওবায়দুর

সর্বশেষ খবর



সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar