ad720-90

প্রাথমিক অবস্থায় ধরা যাবে পারকিনসন


পারকিনসন রোগের ক্ষেত্রে মস্তিষ্কে সেরোটোনিন কমে যায়। ছবি: কিংস কলেজ লন্ডনের সৌজন্যেমস্তিষ্কে পারকিনসন রোগের পূর্বলক্ষণ প্রাথমিক অবস্থায় শনাক্ত করার দাবি করেছেন যুক্তরাজ্যের গবেষকেরা। তাঁরা বলছেন, পারকিনসন রোগের উপসর্গ হাজির হওয়ার ১৫ থেকে ২০ বছর আগেই তা ধরা যাবে। উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন রোগীকে স্ক্যান করে তাঁর মস্তিষ্কে মেজাজ, ঘুম ও নড়াচড়া নিয়ন্ত্রণকারী সেরোটোনিন সিস্টেমে ত্রুটি পাওয়া গেছে।

যুক্তরাজ্যের কিংস কলেজ লন্ডনের গবেষকেরা দাবি করছেন, তাঁদের এ আবিষ্কার পারকিনসন শনাক্তকরণ ও চিকিৎসায় নতুন উপকরণ হিসেবে যুক্ত হবে। অবশ্য এ ক্ষেত্রে আরও বিস্তারিত গবেষণা ও সাশ্রয়ী স্ক্যান পদ্ধতি সহজলভ্য হতে হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

পারকিনসন একধরনের নিউরো ডিজেনারাটিভ বা স্নায়বিক রোগ। এর কারণে মস্তিস্কের স্নায়ু ক্ষয়ে যায়। এর উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছে কাঁপুনি, মাংসপেশি শক্ত হয়ে যাওয়া, বিষণ্নতা, স্মৃতি ও ঘুমানোর সমস্যা।

সাধারণত পারকিনসন রোগের সঙ্গে ডোপামিন নামের একধরনের রাসায়নিকের সঙ্গে যোগসূত্র আছে বলে মনে করা হয়। মস্তিষ্কে ডোপামিনের স্বল্পতা হলে এ সমস্যা হতে পারে।

এ রোগের পরিপূর্ণ কোনো চিকিৎসা নেই। তবে উপসর্গ কমানোর জন্য চিকিৎসকেরা ব্যবস্থা নেন। তাঁরা ডোপামিনের স্তর ঠিক রাখার চেষ্টা চালান।

কিংস কলেজ লন্ডনের গবেষকদের করা গবেষণা–সংক্রান্ত নিবন্ধ ‘ল্যানসেট নিউরোলজি’ সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। ওই নিবন্ধে বলা হয়েছে, মস্তিষ্কে সেরোটোনিন স্তরে প্রথমে পরিবর্তন আসে, যা প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে ধরা যেতে পারে।

গবেষকেরা গ্রিস ও ইতালির ১৪ জন রোগীকে নিয়ে গবেষণা চালান। রোগীদের মধ্যে অর্ধেক পারকিনসনের চিকিৎসা নিয়েছেন আর অন্যদের এখনো কোনো উপসর্গ দেখা যায়নি। যাঁরা এখনো আক্রান্ত হননি, তাঁরাই গবেষণার জন্য আদর্শ বলে ধরে নেওয়া হয়। তাঁদের মস্তিষ্কের সঙ্গে আলাদা ৬৫ জন পারকিনসন রোগী ও ২৫ জন সুস্থ ব্যক্তির মস্তিষ্কের তুলনা করা হয়। গবেষকেরা রোগীদের ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যেই রোগ ধরতে পারা সম্ভব বলে মনে করেন।

গবেষক ম্যারিওস পলিটিস বলেন, নড়াচড়া সীমিত ও ডোপামিনের স্তর কমে যাওয়ার অনেক আগেই সমস্যা শনাক্ত করা যায়। সেরোটোনিন সিস্টেমের পরিবর্তন শুরুতেই শনাক্ত করার বিষয়টি পারকিনসন রোগের ক্ষেত্রে নতুন থেরাপি উন্নয়নের পথ খুলে দেবে।

গবেষক ড্রেক হিল বলেন, গবেষণায় মূল্যবান কিছু তথ্য পাওয়া গেলেও এর কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত গবেষণা প্রয়োজন। তাঁরা যে স্ক্যান পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন, তা বিশেষায়িত ও খুব কম রিসার্চ সেন্টারে এ সুবিধা আছে। তাই এখনই পারকিনসন রোগ শনাক্তকরণে এ পদ্ধতি ব্যবহার উপযোগী হবে। তবে একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে এ রোগ ধরার একটি পদ্ধতি বের করা সম্ভব হয়েছে, এটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar