ad720-90

চন্দ্র বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী আজ


১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই চাঁদে পা ফেলে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন প্রয়াত মার্কিন মহাকাশচারী নীল আর্মস্ট্রং। এরপর ৫০ বছর পার হয়ে গেছে। ১৯৬৯ সালের এই দিনটাতে ‘স্যাটার্ন ৫’ রকেটে চেপে চাঁদে পাড়ি দিয়েছিল ‘অ্যাপোলো ১১’। যদিও তার পর থেকে একাধিক বার সফল চন্দ্র অভিযান হয়েছে, কিন্তু মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার নীল আর্মস্ট্রং এর নেতৃত্বাধীন “অ্যাপোলো ১১” এর চন্দ্রাভিযান মানব সভ্যতার ইতিহাসে চিরকাল এক বিস্ময়কর সফলতা হিসেবেই বিবেচিত হবে।

১৬ জুলাই ১৯৬৯। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় ভোর ৬টা ৪৫ মিনিটে তিন জন তাঁদের নাশতা সারেন। এরপর নভোচারীর পোশাক পরেন। পেছনে ফিরে সবার উদ্দেশে হাত নেড়ে ধীরে ধীরে রকেটের ভেতর অদৃশ্য হয়ে যান। গোটা দুনিয়ার মানুষ টেলিভিশনে এই দৃশ্য সরাসরি দেখে। সকাল ৯টা ৩২ মিনিটে ৭৬ লাখ পাউন্ড জ্বালানি ভরা নাসার ‘স্যাটার্ন ৫’ রকেটের ইঞ্জিনের অংশ প্রজ্বলিত হয়। এরপর উড়াল দেয় মহাকাশের দিকে। চাঁদের মাটিতে পৌঁছাতে তাঁদের সময় লেগেছিল ৪ দিন। ২০ জুলাই চাঁদের কক্ষপথে প্রদক্ষিণের পর এই উপগ্রহের মাটিতে নামেন তিন মহাকাশচারী। প্রথম পা রাখেন মার্কিন মহাকাশচারী নীল আর্মস্ট্রং। তাঁর পরে এডুইন অলড্রিন। সবশেষে নামেন পাইলট মাইকেল কলিন্স।

ফেরার সময় একটি ব্যাগে নমুনা হিসেবে সাড়ে ২১ কিলোগ্রাম চাঁদের মাটি এবং পাথর ভরে ফিরে এসেছিলেন তাঁরা। পরে জানা গিয়েছিল, সেই ব্যাগটি হারিয়ে ফেলেছিল নাসা। তবে ২০১৩ সালে সেটির খোঁজ মেলে। যে রকেটে চেপে উড়েছিল অ্যাপোলো ১১, তার উচ্চতা ছিল ৩৬৪ ফুট। ওজন ছিল ২ লাখ ৩৯ হাজার ৭২৫ কিলোগ্রাম। আর অ্যাপোলো ১১-র ওজন ছিল ৪৫ হাজার ৭০২ কিলোগ্রাম। পৃথিবী থেকে উেক্ষপণ এবং ফের পৃথিবীতে অবতরণ, এই মিশনটা সম্পূর্ণ হতে মোট সময় লেগেছিল আট দিন তিন ঘণ্টা এবং ১৮ মিনিট।

তবে এই অভিযান বিতর্কমুক্ত থাকেনি। অনেক মহল থেকে এই অভিযান ও চাঁদে পা রাখার বিষয়টাতে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। তবে ওই চন্দ্রাভিযান নিয়ে যত বিতর্কই থাকুক না কেন, এ বছর সারা বিশ্বই সফল ঐ অভিযানের ৫০ বছর পূর্তি উদ্যাপন করবে।

চাঁদে অভিযানের চেষ্টা এখনো থেমে নেই। চলতি বছরের প্রথম মাসেই চীনের একটি মহাকাশযান চাঁদ ঘুরে এসেছে। চন্দ্রপৃষ্ঠের সবচেয়ে দুরূহ স্থানে মহাকাশযানটি অবতরণ করেছে বলেও দাবি করেছে চীন। গত জানুয়ারিতে চীনের জাতীয় মহাকাশ প্রশাসন (সিএনএসএ) ঘোষণা করে, পৃথিবী থেকে চাঁদের যে পাশটি দেখা যায় না, সে পাশেই তাঁদের পাঠানো মহাকাশযান চ্যাং ই-৪ অবতরণ করেছে। মহাকাশে আধিপত্য বিস্তারে উঠেপড়ে লেগেছে পরাশক্তিগুলো। চন্দ্রাভিযানের চেষ্টায় আছে ভারত। চলতি সপ্তাহে একবার চাঁদের উদ্দেশে উড়াল দেওয়ার চেষ্টা করে ভারতের চন্দ্রযান-২। তবে কারিগরি ত্রুটির কারণে সেটি স্থগিত হয়েছে। এ মাসে আবার চেষ্টা চালাবে ভারত।

‘একজন মানুষের জন্য একটি ছোটো পদক্ষেপ, কিন্তু মানবতার জন্য এক বিশাল অগ্রযাত্রা।’ চাঁদে অবতরণের পর এই বিখ্যাত উক্তির মাধ্যমে নিল আর্মস্ট্রং বোঝাতে চেয়েছিলেন, ৫০ বছর আগে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কী অসামান্য অগ্রগতি অর্জিত হয়েছিল। সফল চন্দ্রাভিযানের ঐ ঘটনা তখন থেকে আমাদের প্রতিদিনের জীবনকেও প্রভাবিত করছে।

অ্যাপোলো কর্মসূচিতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়েছিল। কিন্তু সেই অর্থ কোনোভাবেই অপচয় হয়নি। কারণ মানুষের জীবনে বিজ্ঞানের পথে নবযাত্রার শুরুটা এসেছিল ঐ দিনটি থেকে। সূত্র:সিএনএন ও বিবিসি।





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar