মাথাব্যথার কারণ ও উপশমের উপায় সম্পর্কে জেনে নিন
মাথাব্যথা (Headache) সাধারণত মানুষের একটি সাধারণ শারীরিক সমস্যা। স্বাভাবিকভাবেই শরীরে বিভিন্ন ইনফেকশন থেকে শুরু করে মস্তিষ্কের অভ্যন্তরের বহু রোগের কারণে মানুষের মাথাব্যাথার সমস্যায় ভুগতে পারে।প্রত্যেক মানুষই জীবনের কোনো না কোনো সময় মাথাব্যথায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন। মাথাব্যথা আসলে কোনো রোগ নয় বরং একটি উপসর্গ মাত্র। জীবনে কোন না কোন সময় মাথা ব্যাথায় পড়েননি এমন লোক খুবই কম পাওয়া যাবে বা নেই বললেই খুব একটা ভুল হবে না। কারণ মাথা থাকলে যে মাথা ব্যাথাও থাকবে এটা খুবই স্বাভাবিক একটা বিষয়। প্রতিরোধমূলক কিছু সম্পর্কে জানা থাকলে মাথাব্যাথা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারেন এবং সুস্থ থাকতে পারেন।
এখন জানা যাক কি কারণে মাথাব্যথা হয়-মাথাব্যথার অনেক কারণ থাকতে পারে। মাথাব্যথার খুব সাধারণ কারণগুলো হলো ক্লান্তি, পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব, মানসিক চাপ, ঔষধের প্রতিক্রিয়া, সর্দি ,সাইনুসাইটিস, মাথায় আঘাত, দাঁতের রোগ, খুবই ঠাণ্ডা পানীয় বা খাবার খুব দ্রুত খেয়ে ফেলা ইত্যাদি। রোগ নির্ণয়ের সুবিধার্থে মাথাব্যথাকে প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি এই ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়। মাইগ্রেন, টেনশন মাথাব্যথা ইত্যাদি প্রাইমারি ক্যাটাগরিতে পড়ে অপরদিকে মাথায় আঘাত বা টিউমার, ইনফেকশন ইত্যাদি সেকেন্ডারি ক্যাটাগরিতে পড়ে।
প্রতিরোধমূলক কিছু টিপস-
১) টেনশন, দুশ্চিন্তা, উদ্বিগ্নতা এসব মনের ওপরে অনেকটা চাপ ফেলে, যা আমাদের জন্য অনেক ক্ষতিকর। সারাক্ষণ মানসিক অস্থিরতার মাঝে থাকলে মাথা ব্যথা তো হবেই, এটা খুবই স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। দুশ্চিন্তা কমাতে হবে, পেশাগত মানসিক চাপ ঘরে বয়ে আনা যাবে না কখনই। মনকে একটু বিশ্রাম দিন, ঘরে ফিরে মাথা থেকে কাজের কথা সম্পূর্ণ বাদ দিয়ে একান্ত বা প্রিয়জনের সাথে কিছু সময় কাটান।
২) বিশ্রাম নিন পর্যাপ্ত পরিমাণে। গবেষকেরা দেখেছেন ঠিকমতো ঘুম না হলে মাথায় ব্যথা হওয়ার সম্বভনা থাকতে পারে। কমপক্ষে ছয় ঘণ্টা ঘুম দরকার পূর্ণবয়স্ক মানুষের জন্য। কম ঘুমানো, ঘুমের মাঝে বাধা, সাউন্ড স্লিপ না হওয়া থেকে বাঁচতে কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। অন্ধকার শব্দহীন ঘরে একটা আরামের ঘুম দিন, দেখবেন পরের দিন আর মাথা ধরা থাকবে না।
৩) লালসবজি পালংশাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে রিবোফ্লাভিন, এক ধরণের ভিটামিন বি যা মাইগ্রেনজনিত মাথাব্যাথায় কাজে দেয়।
৪) তৈলাক্ত মাছ এবং সামুদ্রিক মাছে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড আমাদের শরীরের জন্য ভীষণ উপকারি। এ সকল মাছের অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্যের কারণে ব্যাথা কমে আসে।
৫) মাথাব্যাথার জন্য পটাসিয়াম বেশ উপকারি। পাকা কলায় প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম থাকে আমরা জানি, কিন্তু আলুও এর কম যায় না। মাঝারী আকৃতির একটি সেদ্ধ আলুতে থাকে ৯২৬ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম, যা একটি কলায় থাকা পটাসিয়ামের প্রায় দ্বিগুণ।
৬) কফি বা চায়ের ক্যাফেইনে আসক্তি হয়ে যাবার ভয় থাকলেও, পরিমিত পরিমাণে ক্যাফেইন মাথাব্যাথা কমাতে কার্যকরী। অনেক মাথাব্যাথার ওষুধেই অল্প পরিমাণে ক্যাফেইন থাকে। তবে ক্যাফেইনের ওপর বেশী নির্ভরশীল হয়ে পড়লে সমস্যা, তখন ক্যাফেইন গ্রহণ ছেড়ে দিলে দেখা দিতে পারে মাথাব্যাথা।
৭) গবেষকদের কিছু কিছু গবেষণায় বলা হয় ম্যাগনেসিয়াম মাথাব্যাথার জন্য ভালো, যদিও এ ব্যাপারে শক্ত প্রমান নেই। কাঠবাদাম ম্যাগনেসিয়ামের একটি ভালো উৎস হতে পারে।
৮) সিগারেটের অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে মাইগ্রেনের ব্যাথার পেছনে। যারা নিয়মিত ধুমপানে আসক্ত এবং তাদের আশে পাশে যারা থাকেন তাদের মাথাব্যাথা বেশি হয় এটা খুবই স্বাভাবিক একটা বিষয়। তাই ধূমপান ও ধূমপায়ী থেকে সবসময় দূরে থাকার চেষ্টা করুন।
Comments
So empty here ... leave a comment!