ad720-90

স্মার্টফোন হারানোর আগে ও পরে কী করবেন


যেকোনো মুহূর্তে হারিয়ে বা চুরি হয়ে যেতে পারে প্রিয় স্মার্টফোনটি। এ জন্য বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। ছবিটি প্রতীকী। ছবি: এএফপিহাতের মুঠোয় থাকা স্মার্টফোন যেন আমাদের জীবনেরই প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠছে। দৈনন্দিন কাজের বড় অংশ এখন সম্পন্ন হচ্ছে স্মার্টফোনের পর্দায়, হাতের আলতো স্পর্শে। এখন অনেকেই স্মার্টফোনে রাখছেন অধিকাংশ তথ্য। তাই স্মার্টফোন চুরি হলে বা হারিয়ে গেলে ব্যবহারকারীরা পড়ে যান উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায়। স্মার্টফোন চুরি বা হারিয়ে যাওয়ার আগে ও পরে কী করা উচিত—চলুন, এক নজরে জেনে নেওয়া যাক।

ফোন হারানোর আগের সতর্কতা

ট্র্যাকার চালু রাখুন
আপনার ব্যবহৃত স্মার্টফোনটি অ্যান্ড্রয়েড হোক বা আইফোন হোক—এটায় এমন কিছু সুবিধা থাকে, যার মাধ্যমে দূর থেকেই ফোনটির অবস্থান শনাক্ত করা যায়। অ্যান্ড্রয়েডে এই সুবিধার নাম ‘ফাইন্ড মাই ডিভাইস’। আর আইফোনে এর নাম ‘ফাইন্ড মাই আইফোন’। অ্যান্ড্রয়েডের সেটিংসে গিয়ে ‘সিকিউরিটি অ্যান্ড লোকেশন’ মেনুতে পাওয়া যাবে ‘ফাইন্ড মাই ডিভাইস’ অপশন। আইফোনের ক্ষেত্রে সেটিংস মেনুতে গিয়ে লগ ইন করার অ্যাকাউন্টের ছবিতে ক্লিক করতে হবে।

একবার এই অপশন চালু করে দিলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার স্মার্টফোনের সর্বশেষ ‘লোকেশন’সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণ করে রাখবে। যদি ফোনটি হারিয়ে বা চুরি হয়ে যায়, তাহলে অন্য একটি ডিভাইসের মাধ্যমে চুরি হওয়া মোবাইলে লগ ইন থাকা গুগল বা অ্যাপল অ্যাকাউন্টে ঢুকতে হবে। সেখানেই চুরি যাওয়া ফোনটির সর্বশেষ অবস্থান জানা যাবে।

‘ফাইন্ড মাই ডিভাইস’ অপশনের মাধ্যমে আরও কিছু সুবিধা পাওয়া যায়। যেমন দূর থেকে ফোনটি স্থায়ীভাবে ‘লক’ করে দেওয়া যায়। এমনকি ফোনে থাকা সব তথ্যও মুছে দেওয়া যাবে।

লক স্ক্রিনে অতিরিক্ত সুরক্ষা যোগ করা
স্মার্টফোনের ব৵ক্তিগত তথ্য সবচেয়ে বেশি থাকে ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ ও জিমেইলের মতো অ্যাপগুলোতে। আর এই অ্যাপগুলোতে প্রায় সবাই সাধারণত স্বয়ংক্রিয়ভাবে ‘লগ ইন’ করার অনুমতি দিয়ে রাখেন। অর্থাৎ একবার পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ ইন করার পর ফের লগ ইন করার জন্য পাসওয়ার্ডের দরকার হয় না। ফলে অন্য কোনো ব্যক্তির হাতে যদি স্মার্টফোনটি চলে যায়, তখন আপনার ব্যক্তিগত গোপনীয়তা প্রাথমিকভাবে রক্ষা করে ফোনের ‘লক স্ক্রিন’। তাই সব সময় ফোনের লক স্ক্রিনে বাড়তি নিরাপত্তা দিয়ে রাখতে হবে। পাসওয়ার্ডের পাশাপাশি প্যাটার্ন, ফেস লক, ফিঙ্গার প্রিন্ট লকসহ নানা ধরনের নিরাপত্তা স্তর থাকে। এর যেকোনো একটি ব্যবহার করা যেতে পারে। অ্যান্ড্রয়েডের ক্ষেত্রে এসব অপশন পাওয়া যাবে ‘সিকিউরিটি অ্যান্ড লোকেশন’-এ। আইফোনে পাওয়া যায় ‘ফেস আইডি অ্যান্ড পাসকোর্ড’। ব্যক্তিগত তথ্য থাকা অ্যাপগুলো (ফেসবুক, জিমেইল) আলাদাভাবে লক করে রাখলে আরও ভালো হয়।

সব তথ্যের ব্যাকআপ রাখতে হবে
স্মার্টফোন যদি চুরি না–ও হয়, তাহলেও মাঝেমধ্যে সব তথ্য মুছে ফেলার প্রয়োজন দেখা দেয়। বিশেষ করে যখন ফোন ‘ফ্যাক্টরি রিসেট’ দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। এ ক্ষেত্রে ফোনে থাকা সব তথ্য ক্লাউডে ব্যাকআপ রাখা যায়। বর্তমানে গুগলসহ অন্যান্য অনেক প্রতিষ্ঠান কয়েক গিগাবাইট পর্যন্ত তথ্য-উপাত্ত বিনা মূল্যে ক্লাউডে জমা রাখার সুযোগ দেয়। অন্যদিকে নিয়মিত ফি দিয়েও ইচ্ছামতো উপাত্ত সংরক্ষণের সুযোগ রয়েছে। অ্যান্ড্রয়েডে তথ্যের ব্যাকআপ রাখার জন্য সেটিংসে গিয়ে ‘সিস্টেম সেটিংস’ থেকে ‘অ্যাডভান্স সেটিংস’-এ ঢুকলেই ব্যাকআপ অপশন পাওয়া যাবে। অন্যদিকে আইফোনে সেটিংস থেকে অ্যাকাউন্টের নামের ওপর ক্লিক করে ‘আইক্লাউড ব্যাকআপ’ অপশনে যেতে হবে।

ডিজিটাল দুনিয়ায় চূড়ান্ত নিরাপত্তা বলে কিছু নেই। তাই গুগল ও ফেসবুকের মতো অনলাইন অ্যাকাউন্টের কার্যক্রমগুলো নিয়মিত যাচাই করা উচিত। ছবিটি প্রতীকী। ছবি: এএফপিফোন হারিয়ে গেলে যা করবেন

পুলিশ বা মোবাইল অপারেটরে যোগাযোগ
ফোন হারিয়ে বা চুরি গেলে প্রথম কাজটি হবে, যে অপারেটরের সিম কার্ড ব্যবহার করতেন সেই অপারেটরের সঙ্গে যোগাযোগ করা। তারা আপনার সিমটি বন্ধ করে দিতে পারবে। এতে করে ওই সিম ব্যবহার করে কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঘটানোর উপায় থাকবে না। থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা উচিত।

অনলাইন অ্যাকাউন্টে চোখ
হারিয়ে যাওয়া বা চুরি হওয়া ফোনে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা থাকলেও নিজের অনলাইন অ্যাকাউন্টে (ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদি) নিয়মিত নজর রাখতে হবে। কারণ, অনলাইন দুনিয়ায় চূড়ান্ত নিরাপত্তা বলে কিছু নেই। অ্যাকাউন্টের কার্যক্রমের মধ্যে আপনি কোন কোন যন্ত্র থেকে লগ ইন করেছেন, কখন করেছেন—এসব তথ্যের ওপর নজর দিতে হবে। এতে করে জানা যাবে, ওই অ্যাকাউন্টে অন্য কেউ ঢোকার চেষ্টা করছে কি না।

তথ্যসূত্র: ওয়্যারড





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar