ad720-90

ছোট মাইক্রন বিশাল চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল ইনটেলকে


সলিড স্টেট ড্রাইভ বা এসএসডি থাকায় দুটি সুবিধা পাওয়া যায়- এক কম্পিউটারের কাজের গতি বেড়ে যায় আর দুই হার্ড ডিস্কের সবচেয়ে পুরোনো এবং সবচেয়ে পীড়াদায়ক যে সমস্যা ‘ব্যাড সেক্টর’ যার ফলে এক সময় অকার্যকর হয়ে পড়ে হার্ড ড্রাইভটি সেটি এসএসডিতে নেই। সমস্যা একটিই- এসএসডি’র দাম এখনও প্রচলিত হার্ড ড্রাইভের চেয়ে বেশি।

এই যখন বাস্তবতা তখন বাজেট একটু বেশি থাকলে আপনি এসএসডি আছে এমন ল্যাপটপ কিনবেন আর নইলে হার্ড ড্রাইভ যুক্ত ল্যাপটপ নেবেন। ল্যাপটপের দাম অবশ্য আরও অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে, কিন্তু স্টোরেজের মূল বিষয় এটিই।

আপনার ল্যাপটপের জন্য চাইলে আপনি বাজেটের সঙ্গে মিলিয়ে কোন ড্রাইভ নেবেন সেটি ঠিক করে নিতে পারেন। কিন্তু এমন সব ক্ষেত্র আছে যেখানে বাজেট নিয়ে চিন্তা করার চেয়ে খরচ বেশি হলেও সবচেয়ে দ্রুতগতির ড্রাইভ নিতে হয়- যেমন ডেটা সেন্টার। প্রতিটি ডেটা সেন্টার চায় যতো দ্রুত সম্ভব ডেটা সরবরাহ করতে। ফলে ডেটা সেন্টারের জন্য দ্রুততম গতির ড্রাইভ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

এখন আসা যাক মূল খবরে। ডেটা সেন্টারের জন্য নতুন প্রযুক্তির সলিড স্টেট ড্রাইভ নিয়ে এসেছে মার্কিন চিপ নির্মাতা মাইক্রন।

ঘোষণা দেওয়ার সময় মাইক্রন বলেছে তাদের নতুন এক্স১০০ সলিড স্টেট ড্রাইভের ক্ষমতা প্রায় আড়াই মিলিয়ন আইওপস (IOPS) যা বাজারের অন্য প্রতিযোগীদের তুলনায় অন্তত তিনগুন দ্রত। এখানে বহুবচনে “প্রতিযোগীদের” বলা হলেও বাজারে প্রতিযোগী আছে একটিই- ইনটেল।

মাইক্রনের তৈরি নতুন এক্স১০০ নামের ওই সলিড স্টেট ড্রাইভটিকে সরাসরি সার্ভারের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া যাবে। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, নতুন ওই সলিড স্টেট ড্রাইভটি ইনটেল পণ্যের চেয়েও ভালো সেবা দিতে পারবে। — খবর রয়টার্সের।

মাইক্রনের এ্ই আত্মবিশ্বাসের পেছনে রয়েছে ‘ড্রাইভে ব্যবহার করা নতুন প্রযুক্তি’। ওই প্রযুক্তির সাহায্যে কোন ডেটা পড়তে বা লিখতে হবে তা সার্ভারের কম্পিউটিং অংশ থেকে বুঝে নিতে পারবে ড্রাইভটি। নিজেদের প্রযুক্তি প্রসঙ্গে মাইক্রন প্রধান সঞ্জয় মেহরোতরা বলেন, “এটি একেবারেই শুরুর দিকে রয়েছে। আর এ ধরনের প্রযুক্তিকে বিশাল ব্যপ্তিতে ছড়িয়ে দিতে কয়েক বছর লেগে যায়।”

যতো নতুন চিপে তৈরি এসএসডি আসছে ততোই দ্রুততর হচ্ছে ড্রাইভগুলো আর ডেটা সেস্টার মালিকদের নজরও সেই দিকেই। বিশেষ করে যে সব ডেটা সেন্টার ডিপ লার্নিংয়ের মতো কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এই ধরনের কাজে কৃত্রিম বুদ্ধমত্তাসংশ্লিষ্ট সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয় এবং নতুন কাজ ‘শেখার জন্য’ বিপুল পরিমাণ ডেটা প্রসেস করার দরকার হয়।

এই দরকারের বিষয়টি ইনটেলও বোঝে। এ বছরের শুরুতেই অনেকটা একই ধরনের প্রযুক্তির নিজস্ব সংস্করণ বাজারে ছেড়েছে তারাও। তবে সেটিতে এক্স১০০-এর মতো ‘কন্ট্রোলার’ প্রযুক্তি নেই।

বলে রাখা ভালো, ২০০৬ সাল থেকে ‘থ্রিডি ক্রস পয়েন্ট মেমোরি প্রযুক্তি’ উদ্ভাবনে একত্রে কাজ করেছে মাইক্রন ও ইনটেল, প্রতিষ্ঠা করেছে আইএম ফ্ল্যাশ টেকনোলজিস নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এখন এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা ওই ‘যৌথ সম্পর্ক’ চুকিয়ে ফেলার পর্যায়ে আছে প্রতিষ্ঠান দুটি। বছরখানেক আগে আইএম ফ্ল্যাশ টেকনোলজিসে থাকা ইনটেলের শেয়ারগুলো কিনে নেওয়ার উদ্যোগ নেয় মাইক্রন। এ মাসেই ওই চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। চুক্তিটি সম্পন্ন হলে যুক্তরাষ্ট্রের ইউটায় অবস্থিত চিপ নির্মাণ কারখানার পুরো নিয়ন্ত্রণ পাবে প্রতিষ্ঠানটি।

ইনটেলের তুলনায় মাইক্রোন অনেক ছোট প্রতিষ্ঠান, কিন্তু দেখা যাচ্ছে এই ছোট প্রতিষ্ঠানটিই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে চিপ মহারথী ইনটেলের দিকে। ভবিষ্যতই বলতে পারবে মাইক্রনের এই প্রযুক্তি ডেটা সেন্টার বাজারের মোড় ঘুড়িয়ে দেয় কি না।





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar