ad720-90

গ্রাহক ব্যবস্থাপনা, পণ্য ব্যবস্থাপনা, গ্রাহক সেবা, ওয়েব সেলফ-কেয়ার, বিলিং অ্যান্ড রেটিং, জব্দ ব্যবস্থাপনা ইনভয়েসিং। অপারেশন সাপোর্ট সিস্টেমে (ওএসএস) রয়েছে ত্র”টি ব্যবস্থাপনা, সম্পদ ব্যবস্থাপনা, গোলযোগ ব্যবস্থাপনা, জনশক্তি ব্যবস্থাপনা এবং শৃঙ্খলা ব্যবস্থাপনা। বস সিস্টেমে নেটওয়ার্ক অপারেশন সেন্টার (এনওসি) বা ২০টি অপারেটরস চেয়ার ৯টি বড় এলসিডি পর্দাসম্বলিত একটি বড় এনওসি থাকবে যেখান থেকে সার্বণিক সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক মনিটর ও প্রয়োজনীয় নিদের্শনা প্রদান করা যাবে। এমওটিএন প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে সারাদেশব্যাপী বিটিসিএলের একটি সুবিন্যস্ত, সমন্বিত ও শক্তিশালী নেটওয়ার্ক তৈরি হবে বলে আশা করা যায় এবং আধুনিক পদ্ধতিতে গ্রাহকবান্ধব সেবা প্রদান করা সম্ভব হবে।


লাস্টনিউজবিডি, ৭ নভেম্বর: টেলিযোগাযোগ খাতের আরো আধুনিকায়নের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে । ইতোমধ্যেই বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ । এজন্য বিটিসিএলকে কাজে লাগানো হচ্ছে। বিটিসিএল এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। যার কাজও পুরোদমে এগিয়ে চলছে।

আজ বিটিসিএলের সদ্য নিযুক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলহাজ্ব ড. মো: রফিকুল মতিন তার দপ্তরে আলাপকালে এ কথা জানান। তিনি জানান মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের নেতৃত্বে বিটিসিএল ভবিষ্যত মহাপরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে । যা ইতোমধ্যেই দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। মাত্র ৪দিন হয়েছে দায়িত্ব নিলাম । আগামী ১২ নভেম্বর বোর্ডসভা ডাকা হয়েছে। তিনি মনে করেন বিটিসিএলের অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে গতিশীলতা ফিরে আসবে ।

উল্লেখ্য, নতুন এই এমডি টেলিকম ক্যাডার সার্ভিসের একজন কর্মকর্তা । প্রথম দায়িত্ব নিয়েই শুন্যপদে ৩ জনকে ডিএমডি করার লেকাল অর্ডারে স্বাক্ষার করেছেন।

তারা হলেন, মো: রফিকুল ইসলাম(২০৭৩) মুখ্য মহাব্যবস্থাপক, ট্রান্সমিশন-পশ্চিম, মহাখালি ঢাকা। প্রেষণে ডিএমডি (এম এন্ড ও) বিটিসিএল, কেন্দ্রীয়, কার্যলয় ঢাকা।
আসাদুজ্জামান চৌধুরী (২০৭৪) প্রকল্প পরিচালক এম ও টি এন প্রকল্প, বিটিসিএল।
প্রেষণে ডিএমডি (এস ও) বিটিসিএল, কেন্দ্রীয় কার্যলয় ঢাকা। অতিরিক্ত দায়িত্বে প্রকল্প পরিচালক, এম ও টি এন প্রকল্প, বিটিসিএল, ঢাকা। মো: শাহজাহান(২০৯০) মুখ্য মহাব্যবস্থাপক (সানব সম্পদ), বিটিসিএল, কেন্দ্রীয় কার্যলয়, ঢাকা। প্রেষণে ডিএমডি (কর্পোরেট এফেয়ার্স) বিটিসিএল, কেন্দ্রীয় কার্যলয় ঢাকা। ও অতিরিক্ত দায়িত্বে ডিএমডি(অর্থ), বিটিসিএল, কেন্দ্রীয় কার্যলয়, ঢাকা।

বিটিসিএল সুত্রে জানা গেছে, গৃহীত এসব প্রকল্পের মধ্যে অন্যতম ২ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার একটি প্রকল্প; যার নাম মর্ডানাইজেশন অফ টেলিকমিউনেকেশন নেটওয়ার্ক (এমওটিএন)। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে টেলিযোগাযোগ খাতে সেবা প্রদান, সেবার নির্ভরযোগ্যতা, নেটওয়ার্ক রণাবেণ ও পরিচালনা এবং ভবিষ্যৎ সম্প্রসারণ সব েেত্রই বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে।

বহুজাতিক চীনা টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি জেডটিই করপোরেশন এই প্রকল্পের কাজ করছে। পুরাতন এক্সচেঞ্জগুলো পরিবর্তন করে অত্যাধুনিক করা হচ্ছে। এতে থাকবে নানা সুবিধা। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, মাঠ পর্যায়ে কারিগরি জনবলকে পিডিএ (পারসোনাল ডিজিটাল এসিস্ট্যান্স) ডিভাইস প্রদান করা হবে। এ কার্যক্রমে কোনো গ্রাহকের আবেদন প্রক্রিয়াকরণের সঙ্গে সঙ্গেই প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পিডিএ ডিভাইসে চলে আসবে। সংযোগ নিশ্চিত করার পর তথ্য পিডিএ থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কেন্দ্রীয় সিস্টেমে স্থানান্তরিত হবে। অর্থাৎ একটি নতুন সংযোগের পুরো প্রক্রিয়া হবে পেপারলেস বা কাগজবিহীন। এতে নতুন সংযোগ প্রদানে বর্তমানে গ্রাহকরা যে ধরনের বিড়ম্বনা ভোগ করেন সে ধরনের বিড়ম্বনা আর থাকবে না বলে প্রকল্প পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান চৌধুরী স্বদেশ খবরকে জানান।
বিটিসিএল সূএ জানায়, ১৬ লাখ গ্রাহক ধারণমতার আইএমএস কোর এক্সচেঞ্জকে ৩টি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। ঢাকায় ৭ লাখ, চট্টগ্রামে ৫ লাখ এবং খুলনায় ৪ লাখ গ্রাহক এর সুবিধা পাবেন। এসব কোর এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে সারাদেশে গ্রাহক ব্যবস্থাপনা করা হবে। ভৌগোলিকভাবে ৩টি স্থান থেকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হওয়ায় যেকোনো পরিস্থিতিতে গ্রাহক সেবা অব্যাহত রাখা যাবে। বর্তমানে স্থানীয়ভাবে গ্রাহক ব্যবস্থাপনা করা হচ্ছে। তবে পর্যাপ্ত দ জনবলের অভাবে দেশের সর্বত্র উন্নত মানের সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। প্রস্তাবিত আইএমএস কোরের মাধ্যমে এ সীমাবদ্ধতা সহজে দূর করা সম্ভব হবে। তাই সারাদেশে পুরনো ডিজিটাল এক্সচেঞ্জগুলোর স্থলে ৫৬০টি এজিডব্লিউ এক্সচেঞ্জ প্রতিস্থাপন করা হবে। এজিডব্লিউ এক্সচেঞ্জের মোট মতা হবে ৪ লাখ ৩১ হাজার ১২০।

বিটিসিএলের সাম্প্রতিক প্রকল্পে ঢাকা ও চট্টগ্রামে অপটিক্যাল ফাইবারভিত্তিক গ্রাহক সংযোগের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বর্তমানে আইসিটি যুগে এরূপ চাহিদা ব্যাপক। এমওটিএন প্রকল্প দেশের বড় শহরগুলোতে (মূলত বৃহত্তর জেলা শহর) অপটিক্যাল ফাইবারভিত্তিক গ্রাহক ও অফিস সংযোগের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ ব্যবস্থা ব্রডব্যান্ড চাহিদা পূরণ করবে। গ্রাহক পর্যায়ে ২ লাখ ৮০ হাজার সংযোগ (এফটিটিএইচ জিপিওএন) এবং অফিস পর্যায়ে ৫ হাজার সংযোগের (এফটিটিও) ব্যবস্থা রয়েছে।

বিটিসিএলের বিদ্যমান ট্রান্সমিশন লিঙ্কের সমন্বয় করে নতুন স্থাপিত লিঙ্ক মিলিয়ে সারাদেশে উচ্চ মতার (ডিডব্লিউডিএম) ৮টি রিং তৈরি করা হবে। এতে দেশব্যাপী ট্রান্সমিশনের মেরুদ- হবে সম্পূর্ণ নির্ভরযোগ্য। যেকোনো দুর্যোগে লিঙ্কের কোনো অংশ তিগ্রস্ত হলেও ট্রান্সমিশন সেবা ব্যাহত হবে না। সারাদেশে যাবতীয় টেলিফোন সেবা নিরবচ্ছিন্ন থাকবে। একই কারণে ঢাকায় ৩টি মেট্রো রিং এবং চট্টগ্রামে একটি মেট্রো রিং তৈরি করা হবে। মোট ১ হাজার ২৪০ কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপন করা হবে।

ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনায় তিন জোড়া (এক+এক রিডানডেন্সি) কোর রাউটার স্থাপন করার মধ্য দিয়ে সারাদেশে আইপি নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হবে। এর ফলে দেশের সব অংশ থেকে চাহিদা মোতাবেক ইন্টারনেট ও আইসিটিভিত্তিক ব্রডব্যান্ড সেবা পাওয়া যাবে। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনায় আইআইজি (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে) থাকায়, কক্সবাজার কুয়াকাটার মাধ্যমে সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগ এবং বেনাপোল হয়ে ভারতের মাধ্যমে সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগ স্থাপিত হবে। ৩টি স্বতন্ত্র ভৌগোলিক সংযোগ থাকায় যেকোনো দুর্যোগে আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট ও ডেটা সংযোগ নিরবচ্ছিন্ন থাকবে। ইন্টারনেট সংযোগে নিরবচ্ছিন্ন ব্যবস্থা অত্যন্ত জরুরি ও অপরিহার্য।

যাবতীয় গ্রাহকসেবাকে অটোমেশনের আওতায় আনার ল্েয ২০ লাখ গ্রাহক মতার বস (বিজনেস অপারেশন অ্যান্ড সাপোর্ট সিস্টেম) স্থাপন করা হবে। বিজনেস সাপোর্ট সিস্টেমের অন্তর্ভুক্ত হলো: গ্রাহক ব্যবস্থাপনা, পণ্য ব্যবস্থাপনা, গ্রাহক সেবা, ওয়েব সেলফ-কেয়ার, বিলিং অ্যান্ড রেটিং, জব্দ ব্যবস্থাপনা ইনভয়েসিং। অপারেশন সাপোর্ট সিস্টেমে (ওএসএস) রয়েছে ত্র“টি ব্যবস্থাপনা, সম্পদ ব্যবস্থাপনা, গোলযোগ ব্যবস্থাপনা, জনশক্তি ব্যবস্থাপনা এবং শৃঙ্খলা ব্যবস্থাপনা।

বস সিস্টেমে নেটওয়ার্ক অপারেশন সেন্টার (এনওসি) বা ২০টি অপারেটরস চেয়ার ৯টি বড় এলসিডি পর্দাসম্বলিত একটি বড় এনওসি থাকবে যেখান থেকে সার্বণিক সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক মনিটর ও প্রয়োজনীয় নিদের্শনা প্রদান করা যাবে।

এমওটিএন প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে সারাদেশব্যাপী বিটিসিএলের একটি সুবিন্যস্ত, সমন্বিত ও শক্তিশালী নেটওয়ার্ক তৈরি হবে বলে আশা করা যায় এবং আধুনিক পদ্ধতিতে গ্রাহকবান্ধব সেবা প্রদান করা সম্ভব হবে।

Print Friendly, PDF & Email





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar