ad720-90

সাফল্যের কথা শোনালো ডিজিটাল ওয়েজেস সামিট ২০১৯


তৈরি পোশাক শিল্প খাতে বর্তমানে কর্মীর সংখ্যা প্রায় ২৫ লাখ। এই কর্মীদের মধ্যে ১৬ লাখ ইতোমধ্যেই ডিজিটাল ব্যবস্থায় মজুরি পাচ্ছেন। এখন তাগিদ রয়েছে বাকী কর্মীদেরও ডিজিটাল পদ্ধতিতে মজুরির আওতায় নিয়ে আসার।

আইসিটি বিভাগের আওতাধীন এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও ইউএনডিপি এর সহায়তায় পরিচালিত এটুআই, জাতিসংঘভিত্তিক বেটার দ্যান ক্যাশ অ্যালায়েন্স, বিজনেস ফর সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি (বিএসআর) এবং বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) ছিল এক দিনের এই সামিটের আয়োজক। ২০ নভেম্বর, বুধবার রাজধানীর রেডিসন ব্লু হোটেলে আয়োজিত বাংলাদেশ ডিজিটাল ওয়েজেস সামিট ২০১৯-এ প্যানেল আলোচনায় এ প্রকল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

দিনে প্রথমার্ধে উদ্বোধনী প্যানেল আলোচনায় শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি ডিজিটাল পেমেন্ট পদ্ধতি বাস্তবায়নে এই মূহুর্তে গার্মেন্টস শ্রমিকদের আর্থিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন।

“ডিজিটাল ফিনানন্সিয়াল ইকোসিস্টেম তৈরি করা ছাড়া আমাদের প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে না।”

ডিজিটাইজেশন পদ্ধতির সকল উদ্যোগকে একটি প্ল্যাটফর্মে অন্তর্ভুক্ত করতে পারলে শ্রমিকদের আর্থিক ও সামাজিক উন্নতির ধাপে নিয়ে যেতে সহায়তা করবে বলে মত প্রকাশ করেন বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক।

উদ্বোধনী এই প্যানেল আলোচনায় আরো ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ-এর প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি, বাংলাদেশ ব্যাংক-এর ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল, জাতিসংঘের বেটার দ্যান ক্যাশ অ্যালায়েন্স-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. রুথ গুডউন-গ্রয়েন, ইউএনডিপি-বাংলাদেশ-এর আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি, আইএলও-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর এবং জাতিসংঘের প্রতিনিধি তওমো পওটিআইনেন এবং মার্কস এ্যান্ড স্পেন্সার বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ম্যানেজার স্বপ্না ভৌমিক।

উদ্বোধনী প্যানেল আলোচনা সঞ্চালনা করেন এটুআই-এর পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী।

বিভিন্ন প্যানেল আলোচনায় উঠে এসেছে নানামুখী প্রস্তবনা। বিএসআর-এর পরিচালক (এইচইআর প্রজেক্ট) ক্রিস্টিন সভেরার ডিজিটাইজেশনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সেবা গ্রহণে “শ্রমিকদের, বিশেষত নারী শ্রমিকদের দক্ষতা উন্নয়ন ও জ্ঞান বৃদ্ধির লক্ষ্যে” কাজ করে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন।

নগদ থেকে ডিজিটাল অর্থপ্রদানের পদক্ষেপটি পোশাক শ্রমিকদের, বিশেষত মহিলাদের, যারা বেশিরভাগ শ্রমশক্তির প্রতিনিধিত্ব করে তাদের ক্ষমতায়নে সহায়তা করবে বলে মত প্রকাশ করেন এইচ অ্যান্ড এম এর রিজিওনাল সাসটেইনেবিলিটি ম্যানেজার কিরণ গোকাথোথি।

গ্যাপ ইনকর্পোরেডেট বাংলাদেশের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার তামান্না সরোয়ার জানান, প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে সরবরাহকারীদের ৮০ শতাংশকেই ডিজিটাল ব্যবস্থায় মজুরি দিচ্ছে। ডিজিটাল মজুরি পোশাক খাত জুড়ে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা বাড়াতে সহায়তা করবে বলেও মত প্রকাশ করেন তিনি।

মজুরি ব্যবস্থা ডিজিটাইজড হওয়ার পর, গার্মেন্টস কারখানাগুলো তাদের প্রশাসন এবং আর্থিক বিভাগের কর্মকর্তাদের শতকরা ৫৩ ভাগ সময় বাঁচিয়েছে বলে উঠে এসেছে আলোচনায়। মজুরি ডিজিটাইজেশনে নারীদের ব্যয় এবং সঞ্চয় সম্পর্কিত গৃহীত সিদ্ধান্তগুলোতে অংশ নেওয়ার সম্ভাবনাও ১৫ শতাংশ বেড়েছে। তবে, এই ইতিবাচক প্রভাবগুলো অনুধাবন করার জন্য বাংলাদেশের গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেশিরভাগ প্রতিনিধিত্বকারী মহিলাদের চাহিদা বিবেচনা করে মজুরি ডিজিটাইজেশন নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেও মত এসেছে আলোচনায়।

সম্মেলনে তিনটি পৃথক প্যানেল আলোচনার মধ্যে বিএসআর এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি স্মিতা নিমিলিতার সঞ্চালনায় প্রথম আলোচনা-‘দায়বদ্ধতার সঙ্গে ডিজিটাইজ করার সুবিধা: ব্যবসায়িক পরিস্থিতি এবং মহিলা শ্রমিকদের উপর প্রভাব’ অনুষ্ঠিত হয়। এই অধিবেশনে প্যানেল সদস্য হিসেবে ছিলেন, আইসিটি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা টিনা জাবীন, স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের মানবসম্পদ বিভাগের আহসানুজ্জামান, এসকিউ গ্রুপের চিফ পিপল অফিসার ওয়ারিসুল আবিদ, এবং এইচএন্ডএম বাংলাদেশের আঞ্চলিক টেকসই পরিচালক কিরণ গোকাথোথি।

‘মজুরি ডিজিটাইজেশন বৃদ্ধির জন্য একটি অন্তর্ভুক্ত ডিজিটাল ইকোসিস্টেমের গুরুত্ব’ মীর্ষক দ্বিতীয় আলোচনা বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন-এর সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার মারিয়া মে-এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়। প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. মেজবাউল হক, ডিবিবিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো. শিরিন, গ্যাপ ইনকর্পেরেটেডের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার তামান্না সরোয়ার, বিকাশের সিইও কামাল কাদির এবং ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরফান আলী।

চূড়ান্ত আলোচনা-‘মজুরির ডিজিটাইজেশন করার রোডম্যাপ: স্টেকহোল্ডারদের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা এটুআই-এর পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী, জাতিসংঘ ভিত্তিক সংস্থা বেটার দ্যান ক্যাশ অ্যালায়েন্স-এর এশিয়া প্যাসিফিক লিড মিসেস কিজম নগডাপ ম্যাসালি এবং প্রাইভেট সেক্টর লিড মিজ মার্জোলাইন চেইন্ট্রিউয় সঞ্চালনা করেন।





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar