স্তন ক্যান্সার শনাক্তকরণে এগিয়ে গুগল এআই
মেমোগ্রাম বুঝতে পারাটা অনেক জটিল কাজ, এমনকি বিশেষজ্ঞদের জন্যও। এর মাধ্যমে প্রায়ই ভুল ফলাফল আসতে দেখা যায়।
বুধবার গুগলের পক্ষ থেকে এক ব্লগ পোস্টে বলা হয়, ভুল রিপোর্টের কারণে প্রায়ই রোগীর স্তন ক্যান্সার শনাক্তকরণ এবং চিকিৎসায় বিলম্ব হতে দেখা যায়, রোগীর দুশ্চিন্তা বেড়ে যায়। এ ছাড়াও রেডিওলজিস্ট, যাদের সংখ্যা এমনিতেই কম, তাদের কাজের চাপও বাড়ে।
এক্ষেত্রে মেমোগ্রাম দেখে স্তন ক্যান্সার শনাক্তকরণে গুগলের মডেল আরও নিখুঁত ফলাফল দেয়। এতে বিশেষজ্ঞদের তুলনায় ভুল রিপোর্ট কম আসে বলে দাবি করেছে গুগল– খবর আইএএনএস-এর।
গুগল হেলথ-এর প্রযুক্তি প্রধান শ্রাভিয়া শেটি বলেন, “এটি ভবিষ্যতের অ্যাপ্লিকেশনের জন্য প্ল্যাটফর্ম তৈরি করছে, যেখানে মডেলটি স্তন ক্যান্সার শনাক্তকরণে রেডিওলজিস্টদেরকে সহায়তা করবে।”
স্তন ক্যান্সার শনাক্তকরণে ডিজিটাল মেমোগ্রাফি বা এক্স-রে ইমেজিং সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত পরীক্ষা। প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যেই এই পরীক্ষা হয় চার কোটি ২০ লাখের বেশি।
গুগল হেলথ-এর পণ্য ব্যবস্থাপক ড্যানিয়েল সি বলেন, “বিস্তৃত পরিসরে ডিজিটাল মেমোগ্রাফির ব্যবহার হলেও প্রাথমিকভাবে স্তন ক্যান্সার শনাক্ত করা এখনও একটি চ্যালেঞ্জ।”
আরও নিখুঁতভাবে স্তন ক্যান্সার শনাক্তকরণে রেডিওলজিস্টদেরকে সহায়তা করতে গুগলে নতুন এই মডেল বানিয়েছে ডিপমাইন্ড, ক্যান্সার রিসার্চ ইউকে ইম্পেরিয়াল সেন্টার, নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি এবং রয়াল সারে কাউন্টি হসপিটালের গবেষকরা।
নেচার জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা নথিতে বলা হয়েছে স্তন ক্যান্সার শনাক্তকরণে উন্নতি করতে পারে এআই।
গুগলের এআই মডেলকে প্রশিক্ষণ দিতে যুক্তরাজ্যে ৭৬ হাজারের বেশি এবং যুক্তরাষ্ট্রের ১৫ হাজারের বেশি নারীর মেমোগ্রাম ব্যবহার করেছেন গবেষকরা।
প্রশিক্ষণের পরে যুক্তরাজ্যে আরও ২৫ হাজার নারী এবং যুক্তরাষ্ট্রের তিন হাজার নারীর মেমোগ্রাম এই মডেল দিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে।
“পরীক্ষায় দেখা গেছে, আমাদের ব্যবস্থায় স্তন ক্যান্সার নেই কিন্তু রিপোর্টে বলা হয়েছে আছে এমন ভুল ফলাফল যুক্তরাষ্ট্রে কমিয়েছে ৫.৭ শতাংশ এবং যুক্তরাজ্যে ১.২ শতাংশ। অন্যদিকে স্তন ক্যান্সার আছে কিন্তু রিপোর্টে বলা হয়েছে নেই যুক্তরাষ্ট্রে এমন ভুল ফলাফল কমিয়েছে ৯.৪ শতাংশ। আর যুক্তরাজ্যে কমিয়েছে ২.৭ শতাংশ,” জানিয়েছে গুগল।
পরবর্তীতে মডেলটি আবার শুধু যুক্তরাজ্যের নারীদের ডেটা দিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের নারীদের ডেটার ওপর পরীক্ষা চালানো হয়েছে।
এই পরীক্ষায় দেখা গেছে, ক্যান্সার নেই কিন্তু রিপোর্টে বলা হয়েছে আছে এমন ভুল কমেছে ৩.৫ শতাংশ এবং ক্যান্সার আছে কিন্তু রিপোর্টে বলা হয়েছে নেই এমন ভুল কমেছে ৮.১ শতাংশ।
সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় মডেলটি মানুষের চেয়ে কম তথ্য নিয়ে কাজ করে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
মানব বিশেষজ্ঞরা রোগীর আগের রিপোর্ট এবং মেমোগ্রাম যাচাই করতে পারেন। এক্ষেত্রে গুগলের মডেলটি শুধু সর্বশেষ মেমোগ্রামটি স্ক্যান করে সিদ্ধান্ত জানায়। এতে বাড়তি কোনো তথ্য দেওয়া হয় না।
শুধু এই এক্স-রে দেখেই স্তন ক্যান্সার শনাক্তকরণে মানব বিশেষজ্ঞদের চেয়ে এগিয়ে গেছে গুগলের এআই মডেল।
Comments
So empty here ... leave a comment!