ad720-90

গুগল ছেড়ে তিনি প্রশ্ন তুললেন মানবাধিকার চর্চা নিয়ে


গুগলের বৈশ্বিক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক প্রধান রস লাউনিজ বলেন, প্রতিষ্ঠানকে মানবাধিকার বিষয়ে শক্তিশালী অবস্থানে নিতে তিনি যখন উদ্যোগ নিচ্ছিলেন তখনই তাকে “মাঠের বাইরে” পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে– খবর বিবিসি’র।

এর জবাবে আত্মপক্ষ সমর্থনে গুগলের এক বিবৃতিতে বলা হয়, মানবাধিকার বিষয়ে তাদের “অটল প্রতিশ্রুতি” রয়েছে।

বর্তমানে মার্কিন সিনেটে নির্বাচনের জন্য প্রচারণা চালাচ্ছেন লাউনিজ।

লাউনিজ বলেন, গুগলে কাজের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বুঝতে পারছেন যে, প্রযুক্তির জন্য আরও কঠোর নীতিমালা দরকার।

“গুগলের মতো বিশাল প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি নজরদারির বাইরে ব্যবসা করতে থাকবে এমনটা চলতে পারে না।”– বলেন লাউনিজ।

সেন্সরশিপ আইন এবং সরকারি হ্যাকিংয়ে গুগলকে দায়ী করার প্রতিবাদে ২০১০ সালে চীনে মূল সার্চ ব্যবসা বন্ধ করে প্রতিষ্ঠানটি। এরপর থেকেই অবশ্য বড় এই বাজারটিতে ফেরার উপায় খুঁজে বেড়াচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এতে বেড়েছে সমালোচনাও।

চলতি বছর জুলাই মাসে গুগলের পক্ষ থেকে বলা হয়, চীনের জন্য একটি সেন্সরড সার্চ ইঞ্জিন বানানোর কাজ বন্ধ করা হয়েছে। ড্রাগনফ্লাই নামের ওই প্রকল্পে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন মার্কিন রাজনীতিবিদ এবং লাউনিজসহ বেশ কিছু কর্মকর্তা।

লাউনিজ বলেন, প্রতিষ্ঠানজুড়ে মানবাধিকার যাচাই প্রকল্পে তার পদক্ষেপ নাকচ করেছে গুগল। এমনকি চীন এবং সৌদি আরবে ব্যবসা বাড়াতে কাজও করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

“যখনই আমি মানবাধিকার প্রকল্পের প্রস্তাব করেছি, জেষ্ঠ্য নির্বাহী কর্মকর্তারা সঙ্গে সঙ্গে না বলা জন্য একটি অজুহাত নিয়ে এসেছেন” যোগ করেন লাউনিজ।

“আমি তখন বুঝতে পেরেছি ব্যবসা এবং পণ্যের সিদ্ধান্তে মানবাধিকার নীতিমালা বিবেচনা করার পরিকল্পনা প্রতিষ্ঠানের কখনোই ছিল না। যখন মানবাধিকার অঙ্গীকারে গুগলের দ্বিগুণ নজর দেওয়া দরকার ছিল, তখনই তারা এর বদলে আরও বেশি লাভ এবং আরও বেশি শেয়ার মূল্যের পেছনে ছুটেছে।”

২০০৮ সালে গুগলে যোগ দেন লাউনিজ এবং গত বছর মে মাস পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন তিনি।

প্রতিষ্ঠানে নারী এবং সংখ্যালঘুদের প্রতি আচরণ নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। ফলে প্রতিষ্ঠানের কাছে একজন ঝামেলাদায়ক কর্মী হিসেবেই পরিচিতি পেয়েছেন লাউনিজ।

জবাবে অবশ্য গুগলের পক্ষ থেকে বলা হয়, অনুপযুক্ত আচরণের দাবি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হয় এবং অভিযোগ প্রক্রিয়া উন্নত করতে কাজ করা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটি আরও জানায়, তাদের সেবায় মানবাধিকার মূল্যায়ন করা হয় এবং এর জন্য লাউনিজ যে কেন্দ্রীয় পদক্ষেপের প্রস্তাব করেছেন তা সবচেয়ে ভালো উপায় ছিল না, কারণ তাদের ভিন্ন ভিন্ন পণ্য রয়েছে।

বিবৃতিতে গুগলের এক মুখপাত্র বলেন, “মানবাধিকার সংস্থা এবং উদ্যোগকে সমর্থনে আমাদের অটল প্রতিশ্রুতি রয়েছে। রাজনৈতিক চেতনার জন্য আমরা রসকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।”

মেইন অঙ্গরাজ্যে ডেমোক্রেট প্রার্থী হিসেবে সিনেট নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন লাউনিজ। বর্তমানে এই আসনে রয়েছেন রিপাবলিকান সুজান কলিন্স।

সিলিকন ভ্যালির প্রযুক্তি জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শঙ্কা বেড়েই চলেছে। ডেমোক্রেট এলিজাবেথ ওয়ারেন এবং প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পসহ প্রযুক্তি জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সমালোচনা করেছেন অনেকেই। এমন সময় গুগলের বিষয়ে শঙ্কার কথা জানালেন লাউনিজ।

সাবেক এই গুগল কর্মী আরও বলেন, ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের মতো নতুন খাতে ব্যবসার পরিধি বাড়ায় গুগল বদলে গেছে এবং প্রতিষ্ঠানের মূল নেতাদের অন্তর্ভুক্তি কমে গেছে।

আগের মাসেই মূল প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেটের পদ ছেড়েছেন গুগল সহ-প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেইজ এবং সার্গেই ব্রিন।





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar