ad720-90

সিইএস ২০২০: ফাইভ–জি কত দূর?


৫জি প্রযুক্তি। ছবি: রয়টার্সশোরগোলে মনে হয়েছিল ২০১৯ সালটা বুঝি ফাইভ–জির বছর হতে যাচ্ছে। গত বছরের শুরুতে ফাইভ–জিকে ঘিরে দ্রুততর নেটওয়ার্ক, চমৎকার ফোন আর দুর্দান্ত ব্যবহারিক প্রয়োগ মিলে নতুন যুগের যে স্বপ্ন দেখানো হয়েছিল, তা স্বপ্নই থেকে গেছে। সাফ বুঝিয়ে দিয়েছে, বাস্তবে পরিণত হতে খানিকটা সময় লাগবে। পরিবর্তনের পরিবর্তে সেটি মূলত ছিল ভিত্তি ঠিক করার বছর।

যুক্তরাষ্ট্রে ভেরাইজোন, টি-মোবাইল, এটিঅ্যান্ডটি এবং স্প্রিন্টের ফাইভ–জি হয়তো কিছু ব্যবহারকারীর কাজে লেগেছে। তবে ফাইভ–জি ফোনের দাম ছিল নাগালের বাইরে। তা ছাড়া নেটওয়ার্কের বিস্তৃতি কিছুটা সীমিত পর্যায়ের পরীক্ষামূলক স্তরেই আছে এখনো। আর গতির বেলায় অনেকে তো ফোর–জি আর ফাইভ–জির ফারাকই করতে পারেননি।

বলা যেতে পারে, ফাইভ–জির শোরগোল কিছুটা স্তিমিত হয়ে গেছে। অবশ্য ২০২০ সালটা আলাদা হওয়ার বেশ কিছু কারণ আছে। স্মার্টফোন আর নেটওয়ার্ক নিয়ে বড় বড় সব ঘোষণা সম্ভবত ফেব্রুয়ারিতে আসবে। স্যামসাংও তা-ই জানিয়েছে। তা ছাড়া স্পেনের বার্সেলোনায় মুঠোফোন–সংক্রান্ত প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় মেলা মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসও রয়েছে ফেব্রুয়ারিতে। তবে উচ্চগতির ভবিষ্যতের শুরুটা হয়তো কালই হচ্ছে। মানে কনজ্যুমার ইলেকট্রনিকস শো (সিইএস) ২০২০-এ। যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসে মঙ্গলবার থেকে অনুষ্ঠেয় চার দিনের এই মেলায় যে ধরনের প্রযুক্তিপণ্য ও ধারা দেখানো হয়, বছরজুড়ে তাই চলে বলে জনশ্রুতি আছে। ব্যাপারটা যদি তা হয় তবে ফাইভ–জির এবারও আরাধ্য থাকার সম্ভাবনাই বেশি।

মেলায় ফাইভ–জি নিয়ে আলোচনা কম
এবারের সিইএস মেলায় ওয়ানপ্লাস এরই মধ্যে নতুন স্মার্টফোনের ধারণা দেখানোর ইঙ্গিত দিয়েছে। স্যামসাং, হুয়াওয়ে, এলজি এবং লেনোভোর মতো বড় প্রতিষ্ঠানগুলোরও মেলায় সরব উপস্থিতি থাকবে বলে ধরে নেওয়া যায়। এলজি জানিয়েছে, নতুন কোনো ফাইভ–জি স্মার্টফোনের ঘোষণা না দিলেও ফাইভ–জি প্রযুক্তির ভি৫০এস দেখাবে তারা। এখন সেটি শুধু দক্ষিণ কোরিয়ায় পাওয়া যায়। বেশ কিছু স্মার্টফোনের ঘোষণা দিতে পারে টিসিএল। তবে ফাইভ–জি নিয়ে হুয়াওয়ে কোনো ঘোষণা দিচ্ছে না এবার। জানিয়েছে সাফ। একই কথা বড় নেটওয়ার্ক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোরও।

ফাইভ–জির ব্যবহার ফোনে সীমাবদ্ধ নয়
ফোন ও নেটওয়ার্কের বাইরেও ফাইভ–জির অনেক ব্যবহার রয়েছে। ইন্টারনেট অব থিংস সেগুলোর অন্যতম। সেটা চালকবিহীন গাড়ি হতে পারে, ঘরে ব্যবহারের স্মার্ট ইলেকট্রনিকস হতে পারে, আবার স্মার্ট শহরের ধারণা বাস্তবায়নেও ফাইভ–জি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে শোনা যাচ্ছে। বিশেষ করে যোগাযোগ বা ডেটার আদান–প্রদানে।

ফাইভ–জি প্রযুক্তির সবচেয়ে বেশি স্মার্টফোন স্যামসাংয়ের। তবে এবারের সিইএসে তারা ফাইভ–জি নিয়ে শোরগোল পাকাবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। বড়জোর প্রতিষ্ঠানটির সহপ্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এইচ এস কিম ফাইভ–জি নিয়ে কথা বলতে পারেন। বিশেষ করে তাঁদের ২০২০ সালের পরিকল্পনা তুলে ধরার সময়। এরই মধ্যে এক ব্লগ পোস্টে তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ইন্টারনেট অব থিংসের সঙ্গে ফাইভ–জির সমন্বয়ের উল্লেখ করেছেন। তবে সেটা ফাইভ–জির সক্ষমতার জন্য। কারণ, শুধু বেশি গতি দেবে না, আগের চেয়ে একসঙ্গে অনেক ডিভাইসে নেটওয়ার্ক সংযোগও দেবে। ফাইভ–জি নিয়ে হাজির হচ্ছে আইবিএম। সেটাও ইন্টারনেট অব থিংসের প্রায়োগিক ব্যবহারে ডেটা প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রসঙ্গে।

তবে সিইএসে একটা ব্যাপার থাকবে। আর তা হলো ভবিষ্যতের প্রযুক্তি ও যন্ত্রের ধারণা। যার অনেকগুলোই হয়তো কখনোই শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখবে না। তবে সে ধারণাগুলোর অস্তিত্ব সাধারণত অন্য কোনো পণ্যে খুঁজে পাওয়া যায়।

সে যা-ই হোক, এবারও সিইএসে ফাইভ–জি নিয়ে হইচই হতে পারে। কিছু কিছু শিরোনামও হয়তো হবে। তবে গত বছরের শুরুর তুলনায় ফাইভ–জি যেন কিছুটা আড়ালেই চলে গেছে। হয় ফাইভ–জি প্রযুক্তি তৈরি নয়। না হয় ফাইভ–জির জন্য বিশ্ব তৈরি হয়নি এখনো। সূত্র: সিনেট





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar