কোভিড-১৯ রোগী নজরদারিতে দেশে দেশে মোবাইল অ্যাপ
২২
মার্চ উন্মুক্ত হওয়া ওই অ্যাপটি ১৫ লাখের বেশি ইসরায়েলি নাগরিক স্বেচ্ছায় নিজের মোবাইল
ফোনে চালু করেছে বলে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের
উপ-মহাপরিচালক মরিস ডর্ফম্যান জানান, হিব্রু ভাষায় ‘হামাজেন’- বাংলায় বললে ‘ঢাল’- নামে
ওই অ্যাপটি পাওয়ার জন্য জার্মানি, ইটালি, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া ও চিলির অনুরোধসহ বিদেশে
ব্যাপক আগ্রহ তৈরি করেছে।
রয়টার্সকে
তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে অপেন সোর্স টুলস ব্যবহার করে ডেভেলপাররা অ্যাপটি তৈরি
করেছে, যাতে যে কোনো দেশে কোনো খরচ ছাড়াই দ্রত তা ব্যবহার করতে পারেন।
প্রযুক্তির
এই ব্যবহার করোনাভাইরাসের মহামারী ছড়ানো ঠেকাতে সহায়ক হবে বলে মনে
করছেন বিজ্ঞানীরা।
করোনাভাইরাসের আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নেওয়ার পর ঘরে থাকতে বলা
হয়েছে রাজধানী মস্কোতে এমন লোকদের চলাচলের উপর নজরদারি চালাতে রাশিয়ার
গত বৃহস্পতিবার একটি অ্যাপ অনলাইনে ছাড়ার কথা ছিল।
মস্কোতে গত সোমবার থেকে
অনির্দিষ্টকালের জন্য শহরজুড়ে কোয়ারেন্টিন ঘোষণা করা হয়। তবে মস্কোর অ্যাপটি শুরুতে
কেবল তারাই ব্যবহার করবেন যাদের কোভিড-১৯ পজিটিভ এসেছে এবং যাদের হাসপাতালে
থাকতে হচ্ছে না।
দক্ষিণ কোরিয়াতে সংক্রমণ বাড়তে থাকার সময় তারাও
এ ধরনের ট্র্যাকিং অ্যাপ চালু করে। যদি ১০০ মিটারের মধ্যে কোনো কোভিড-১৯ আক্রান্ত
ব্যক্তি থাকে তবে এই অ্যাপ সঙ্গে সঙ্গে সতর্ক বার্তা জানিয়ে দিতে পারে বলে
গার্ডিয়ান জানিয়েছে।
বিবিসি বলছে,
ইউরোপীয় ইউনিয়নও করোনাভাইরাসের চিকিৎসা নেওয়া রোগীদের শনাক্তে একটি অ্যাপ তৈরির
কাজ করছে। এটা তৈরি হলে সীমান্তে কড়াকড়ি
কমতে পারে। জার্মানি নিজে এমন একটি অ্যাপ শিগগিরই ছাড়ছে।
তবে যুক্তরাজ্যের প্রযুক্তি বিভাগের
প্রধান ম্যাথিউ গোল্ড বিবিসিকে বলেছেন, তারা এখনও এই প্রযুক্তির বিভিন্ন দিক খতিয়ে
দেখছেন।
কীভাবে কাজ করে অ্যাপ?
ইসরায়েলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ডর্ফম্যান
বলেন, এই প্রযুক্তি নিয়ে বেশি একটা প্রশ্ন নেই। মানুষ জানতে চায় অ্যাপপি স্বেচ্ছায়
মানুষ ডাউনলোড করবে কিনা অর্থাৎ মানুষকে এটা ব্যবহারে রাজি করানো হবে কীভাবে?
হামাজেন অ্যাপ ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত ও অবস্থানগত ডেটা
তাদের ফোনেই সীমাবদ্ধ থাকবে, অন্য কেউ পাবে না। তাই ব্যক্তির অগোচরে অ্যাপের
অপারেটর তাদের উপর নজরদারি করতে পারবে না।
করোনাভাইরাসের সংস্পর্শে আসার বিষয়টি মন্ত্রণালয়কে জানানো
হবে কিনা তা নির্ধারণের পুরো স্বাধীনতা ব্যক্তির থাকবে।
অ্যাপটি অনলাইনে ছাড়ার প্রথম সপ্তাহে ৫০ হাজার মানুষ নিজেরা
কোয়ারেন্টিনে থাকার বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে।
করোনাভাইরাসে
শনাক্ত হওয়ার আগের ১৪ দিনের মধ্যে রোগীর সংস্পর্শে কেউ এসেছিল কি না তা শনাক্ত করবে
এই অ্যাপ।
করোনাভাইরাসে
শনাক্ত কারও সংস্পর্শে এলে অ্যাপটি তার সময় ও স্থান তুলে ধরে সতর্কবার্তা পাঠাবে।
শুধু
ফোনের জিপিএস ডেটা নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের রোগীদের ডেটার সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে।
তারপর দ্রুত ও নিয়মিত ব্যবহারকারীকে বার্তা পাঠানো হবে। এবং শুধু ব্যবহারকারীকেই পাঠানো
হবে।
কোনো
রোগীর স্পর্শে আসার তথ্য মিললে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি লিংক থেকে নির্দেশনা জানতে
পারবেন অ্যাপ ব্যবহারকারী।
অ্যাপটি
ব্র্যাকগ্রাউন্ডে চলবে এবং যে কোনো আনইন্সটল করা যাবে।
তবে মস্কোর অ্যাপটি ব্যবহারকারীর
ফোনকল, অবস্থান,
ক্যামেরা ইত্যাদি তথ্য ও সুবিধা ব্যবহার করে যাচাই করে দেখবে
নির্দেশনা অনুযায়ী ওই ব্যক্তি ঘরেই অবস্থান করছেন কি না।
তবে এই লোকেশন-ট্র্যাকিং অ্যাপ বা ব্যক্তির
অবস্থান নির্ণয় করতে পারা এই প্রযুক্তি ব্যবহারে কাউকে বাধ্য করা হলে তা নৈতিক হবে
না বলে হুঁশিয়ার করছেন বিশেষজ্ঞরা।
Comments
So empty here ... leave a comment!