ad720-90

ট্রেসিং অ্যাপের জন্য সাহায্য মেলেনি, অ্যাপলকে দুষছে ফ্রান্স


সংবাদমাধ্যম রয়টার্সের প্রতিবেদন বলছে, মঙ্গলবার অ্যাপলকে দোষারোপ করে ওই অভিযোগ তুলেছেন ফরাসী ডিজিটাল অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রী সেড্রিক ও।

করোনাভাইরাস মহামারীর সময়টিতে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব নজরে রাখতে এবং ধীরে ধীরে অর্থনীতির চাকা সচল করতে কনট্যাক্ট ট্রেসিং অ্যাপের দিকে ঝুঁকছে বিশ্বের অসংখ্য দেশ। ব্লুটুথ প্রযুক্তিনির্ভর এ ধরনের অ্যাপের মাধ্যমে সহজেই জানা সম্ভব হবে কেউ করোনাভাইরাস রোগীর সংস্পর্শে এসেছেন কিনা এবং যাদের সংস্পর্শে আগে এসেছেন, তাদের মধ্যে নতুন করে কারও করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে কিনা।

অ্যাপ তৈরিতে নিজ নিজ পন্থা প্রয়োগ করছে দেশগুলো। কোনো দেশ কেন্দ্রীভূক্ত প্রক্রিয়ায় বা কেন্দ্রীয় সার্ভারে ডেটা জমা রাখার কথা জানিয়েছে। আবার কোনো দেশ কেন্দ্রবিমুখ বা ব্যবহারকারীদের ডিভাইসেই ডেটা রাখার কথা বলছে।

এ ধরনের অ্যাপের জন্য প্রযুক্তি তৈরিতে জোট বেঁধেছে অ্যাপল-গুগল-ও। অ্যাপল-গুগলের তৈরি প্রযুক্তি অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএস ডিভাইস লকড অবস্থাতে থাকলেও কাজ করবে, আবার ডিভাইসও চার্জ বাঁচাতে নিজ থেকে ব্লুটুথ সংযোগ বন্ধ করে দেবে না।

গোপনতা নিশ্চিত করতে অ্যাপল-গুগল বেশ কিছু নিয়মও বেঁধে দিয়েছে। শুধু নিয়ম মেনে তৈরি হওয়া কনট্যাক্ট ট্রেসিং অ্যাপকে নিজেদের প্রযুক্তি ব্যবহার করতে দেবে প্রতিষ্ঠান দুটি।

ফ্রান্স ও অ্যাপলের সমস্যা বেঁধেছে আইফোনে ব্লুটুথ তরঙ্গ চালু রাখা নিয়ে। নিজেদের অ্যাপের ট্রেসিং সেবার জন্য আইফোনে নিরবচ্ছিন্ন ব্লুটুথ তরঙ্গ চালু রাখার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য অ্যাপলকে আহবান জানিয়েছিল ফ্রান্স। কিন্তু সে আহবানে সাড়া দেয়নি এই প্রযুক্তি জায়ান্ট।

ফ্রান্সের ট্রেসিং অ্যাপ অনেকদিক থেকেই অ্যাপল-গুগল জোটের বেঁধে দেওয়া নিয়মের বাইরে। অ্যাপল-গুগল জোট যেখানে বিকেন্দ্রীকরণ প্রক্রিয়ায় ডেটা সংরক্ষণের ব্যাপারে বলে আসছে, সেখানে কেন্দ্রীভূত প্রক্রিয়ায় বা কেন্দ্রীয় সার্ভারে ডেটা জমা রাখার ব্যাপারে জানিয়েছে ফ্রান্স। তবে, অ্যাপল ঠিক এ কারণেই ফ্রান্সের আবেদনে সাড়া দেয়নি কিনা তা এখনও জানা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি অ্যাপলের ফ্রান্স মুখপাত্র।        

তবে, তাই বলে চুপ করে বসে নেই ফ্রান্সের ডিজিটাল অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রী সেড্রিক ও। “অ্যাপল চাইলেই আমাদের অ্যাপ্লিকেশনকে আইফোনে আরও ভালোভাবে চলার ব্যবস্থা করে দিতে পারতো। কিন্তু তারা তা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে”। – বলেছেন ও।            

তিনি আরও বলেছেন, “আমার দুঃখ হচ্ছে যে এরকম একটি সময়ে যখন আমরা মহামারী ঠেকানোর লড়াইয়ে একত্র হচ্ছি, তখন আর্থিকভাবে স্বচ্ছ্বল একটি প্রতিষ্ঠান একটি সরকারকে এই সংকট পারি দিতে সহায়তা করছে না”।

অ্যাপলের এই রাজি না হওয়ার কারণ সম্পর্কে কিছু বলতে পারেননি ফ্রান্সের এই ডিজিটাল অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রীও। তিনি বলেন, “আমরা ধরে নিয়েছি যে স্বাস্থ্যসেবা সিস্টেমের সতর্কতা, করোনাভাইরাসের বিপক্ষে লড়াই আদতে সরকারের কাজ এবং বড় আমেরিকান প্রতিষ্ঠানগুলোর নয়”।

জুনের ২ তারিখ থেকে অ্যাপ মাঠে নামছে, অ্যাপল সহযোগিতা করুক বা না-ই করুক – বলেছেন ফরাসী মন্ত্রী ও। আর মে মাসের ১১ তারিখ থেকে শুরু হওয়া সপ্তাহে পরীক্ষামূলক পর্যায়ে নামানো হবে অ্যাপটি।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যানটার রিসার্চের তথ্য অনুযায়ী, প্রথম প্রান্তিকের হিসেবে ফ্রান্সের মোট বাজারের ২১.২ শতাংশ অপারেটিং সিস্টেম আইওএস, আর ৭৮.৮ শতাংশ জুড়ে রয়েছে অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম। 

এদিকে, ফ্রান্সের মতো কেন্দ্রীভূত প্রক্রিয়ায় ডেটা সংরক্ষণ করবে বলে ঘোষণা দিয়েছিল যুক্তরাজ্য-ও। অ্যাপল-গুগলের প্রযুক্তিতে ‘না’ বলে দিয়েছে দেশটি।  মঙ্গলবার থেকে নিজস্ব কোভিড-১৯ অ্যাপ ‘আইল অব ওয়াইট’ দ্বীপে পরীক্ষা করাও শুরু করেছে দেশটি।  





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar