ad720-90

করোনা গত বছর থেকেই দ্রুত ছড়ায়: যুক্তরাজ্যের বিশ্লেষণ


করোনাভাইরাস গত বছরের শেষ থেকে মানুষের মধ্যে ছড়াচ্ছিল। প্রথম সংক্রমণের পর এটি দ্রুত বিস্তার লাভ করে। ভাইরাসটির সাম্প্রতিক জিনগত বিশ্লেষণে এই নতুন তথ্য পেয়েছেন বলে   দাবি করেছেন যুক্তরাজ্যের গবেষকেরা। বিশ্বজুড়ে ৭ হাজার ৬০০ রোগীর কাছ থেকে নেওয়া নমুনা থেকে কোভিড-১৯ সৃষ্টিকারী ভাইরাসটির জিনগত বিশ্লেষণ করা হয়।

সিএনএনের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, যুক্তরাজ্যের গবেষকেরা ভাইরাসের রূপান্তর দেখে দ্রুত সংক্রমণের প্রমাণ পেয়েছেন। তবে ভাইরাসটি থেকে সহজেই সংক্রমণ ঘটা বা গুরুতর রোগ হওয়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন জেনেটিকস ইনস্টিটিউটের জিনবিষয়ক গবেষক ফ্রাসোয়া ব্যালো সিএনএনকে বলেন, ভাইরাসটি পরিবর্তিত হচ্ছে, তবে এটি নিজে থেকে বোঝা যাচ্ছে না যে এটি আরও খারাপ হচ্ছে।

ব্যালো এবং সহকর্মীরা একটি বিশাল বৈশ্বিক ডেটাবেইস থেকে ভাইরাল সিকোয়েন্স ব্যবহার করেছেন। তাঁরা বিভিন্ন সময়ে এবং বিভিন্ন স্থান থেকে নেওয়া নমুনা দেখে বলেছেন, এসব তথ্য ইঙ্গিত দেয় যে ভাইরাসটি গত বছরের শেষের দিকে প্রথমে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হতে শুরু করে।

‘ইনফেকশন, জেনেটিকস অ্যান্ড ইভ্যুলিউশ’ সাময়িকীতে ব্যালোর গবেষণা দল তাদের গবেষণাবিষয়ক নিবন্ধ প্রকাশ করে। গবেষক দলের দাবি, অনেকেই ধারণা করছিলেন ভাইরাসটি অজান্তেই আগে থেকে মানুষকে সংক্রমিত করে আসছে। এতে অনেকের মধ্যে হয়তো রোগ প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি হয়েছে। কিন্তু এ গবেষণা তাঁদের ধারণার ওপর পানি ঢেলে দিল।

ব্যালো বলেন, বিশ্বের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ মানুষ এই ভাইরাসের জন্য উন্মুক্ত হতে পারে।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, নতুন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাদুড় থেক। তবে এটি মানুষের মধ্যে ঝাঁপ দেওয়ার আগে অন্য একটি প্রাণীতে সংক্রমিত হয়েছিল। গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে প্রথম মানবশরীরে সংক্রমণের ঘটনা ঘটে।

ভাইরাস প্রতিবার নিজের প্রতিলিপি তৈরি করার সময় ভুল করে এবং এই রূপান্তরগুলো বিজ্ঞানীরা ধরতে পারেন।

গবেষক দলের দাবি, তাঁদের গবেষণার ফল আগের অনুমানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং ভাইরাসের সব রূপান্তর গত বছরের শেষের দিকে একই উৎস থেকে উৎপত্তির বিষয়টির দিকে ইঙ্গিত করে। এটি খুব সাম্প্রতিক।

গবেষকেরা বলেন, ‘আমরা সত্যিই আত্মবিশ্বাসী যে গত বছরের শেষের দিকে এটি বিস্তার লাভ করে। কারণ, পৃথিবীর সব কোণ থেকে নেওয়া ভাইরাল নমুনাগুলোয় একাধিক রূপান্তর দেখা যায় এবং সেগুলোতে একই রকম পরিবর্তন হয়েছে। সবখানেই একই রকম চিত্র দেখা যায়।’

ব্যালো দাবি করেন, তাঁদের গবেষণা থেকে প্রমাণিত হয়, ‘প্যাশেন্ট জিরো’ খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা অর্থহীন, কারণ অনেক প্যাশেন্ট জিরো থাকতে পারে।

যুক্তরাজ্যের এই গবেষক বলেন, ভাইরাস স্বাভাবিকভাবেই পরিবর্তিত হয়। তবে রূপান্তর কোনো খারাপ জিনিস নয়। সার্স কোভ-২ প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত বা ধীরে ধীরে রূপান্তরিত হয়েছে কি না, তা এতে বলা যায় না।

জনস হপকিন্স সেন্টার ফর হেলথ সিকিউরিটির বিশ্লেষক লেন ওয়ার্মব্রোদ বলেন, ভাইরাসের জিনগত রূপান্তরে তা আরও সংক্রামক বা ভয়াবহ হয়েছে কি না, এর প্রমাণ পেতে ব্যাপক গবেষণা প্রয়োজন।





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar