ad720-90

বাসা থেকে কাজ: সুরক্ষিত থাকুন সাইবার আক্রমণ থেকে


বাসা থেকে কাজ করার একটি সমস্যা হলো সাইবার আক্রমণের ঝুঁকি। অফিস নেটওয়ার্কের বাইরে তুলনামুলক অরক্ষিত অবস্থায় কাজ করতে হচ্ছে কর্মীদের। এই নিরাপত্তা দূর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে সাইবার অপরাধীরা। আক্রমণ করে ডেটা হাতিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি ঘটাচ্ছে নানা বিপত্তি। সাইবারআক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকার বেশ কিছু উপায় এক নিবন্ধে  বাতলেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

চলুন জেনে নেওয়া যাক ওই উপায়গুলোর ব্যাপারে — 

১. ডিভাইস আপগ্রেড ও আপডেট করুন

অনেক প্রতিষ্ঠানই কর্মীদেরকে কাজের জন্য পৃথক ডিভাইস দিচ্ছে। আবার অনেক প্রতিষ্ঠান এ ধরনের কোনো ডিভাইস দেয়নি। এ কারণে দেখা দিচ্ছে নিরাপত্তা দূর্বলতা। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে ডিভাইসগুলো ঠিকভাবে আপডেট করা নেই এবং অনেক ক্ষেত্রেই একের অধিক ব্যবহারকারী সেগুলো ব্যবহার করছেন। “একটি প্রতিষ্ঠান যথেষ্ট যত্ন নিয়ে নিশ্চিত করে আপনার ডেস্কের কম্পিউটারটিতে প্যাচ ইনস্টল করা রয়েছে এবং সর্বশেষ বা সঠিক অপারেটিং সিস্টেম আছে, সব কি  এবং অন্যান্য সবকিছু ঠিক আছে” –  বলেছেন সাইবার সুরক্ষা ইউনিসিসের প্রধান ট্রাস্ট কর্মকর্তা টম প্যাটারসন।

“আপনার পুরোনো ল্যাপটপ যেটিকে আলমারী থেকে বের করে এখন জুম কলের কাজে লাগাচ্ছেন, সেটির জন্য কিন্তু কেউ এতো কিছু খেয়াল রাখছে না”।  – যোগ করেছেন প্যাটারসন।

আর তাই ডিভাইস সুরক্ষার প্রথম পদক্ষেপটিই হচ্ছে পুরোনো ডিভাইস ব্যবহার করলেও তা আপডেটেড রাখা বা কাজের জন্য আলাদা ডিভাইস ব্যবহার করলে সেটিতে সর্বশেষ সফটওয়্যার, নিরাপত্তা প্যাচ ইনস্টল করে রাখা।

২. বদলে ফেলুন ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড

অনেকেই হয়তো নিয়ম করে সামাজিক মাধ্যম অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ডগুলো পাল্টাচ্ছেন, ইমেইল এবং অনলাইন সেবার পাসওয়ার্ড বদলে নিচ্ছেন, কিন্তু সহজে বাসার ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের পাসওয়ার্ড পাল্টাচ্ছেন না। অনেক সময় আপনার ওয়াইফাই পাসওয়ার্ডও কিন্তু ফাঁস হয়ে যেতে পারে। আবার রাউটারে ছড়িয়ে দেওয়া হতে পারে ম্যালওয়্যার। এজন্য নিয়ম করে পাসওয়ার্ড বদলে ফেলুন। রাউটার রিসেট করুন সময় পেলেই। এতে করে অনেক সাইবার ঝুঁকি এড়াতে পারবেন।

“শুধু আনপ্লাগ করুন, কয়েক মিনিটের জন্য আনপ্লাগ অবস্থায় রেখে দিন এবং ফের চালু করুন। এভাবে বেশ কিছু ঝুঁকি দূর করা সম্ভব হবে”। — বলেছেন প্যাটারসন।

৩. কাজ শেষে ল্যাপটপটি বন্ধ রাখুন

দিনশেষে ল্যাপটপ বা পিসি আপনিও যদি অন রেখে দেন তবে এই দলে আপনি একাই নন। প্যাটারসন বলেছেন, “অনেকেই দিন, সপ্তাহ এবং অনেকদিন ডিভাইস চালু রাখে এবং কোনো কারণে ডিভাইস ধীরগতির হয়ে গেলে তখনই শুধু বন্ধ করার চিন্তা করে”।

অপ্রয়োজনে ডিভাইস চালু না রাখার অভ্যাসটির মাধ্যমেই কিন্তু নিজেকে অনেকটাই নিরাপদ রাখা সম্ভব। কাজের জন্য ব্যবহৃত ল্যাপটপটি বন্ধ করা এবং পুনরায় চালানোর মাধ্যমে বেশ কিছু ভাইরাস ও ম্যালওয়্যার আটকানো সম্ভব। ডিভাইস বন্ধ করা হলে নিজেকে ডিভাইসে ভালোমতো এমবেড করতে পারে না অনেক ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার।

সুতরাং কাজ শেষে বন্ধ রাখুন আপনার ডিভাইসটি। শুধু ল্যাপটপই নয়, চেষ্টা করুন দিনশেষে আপনার মোবাইলটিও বন্ধ রাখতে। তাহলে সেটিও নিরাপদ থাকবে।

৪. ফেশিয়াল রিকগনিশন, ফিঙ্গারপ্রিন্ট লগইন এবং অন্যান্য

নিরাপত্তার চর্চা শুধু কর্মীর উপরে নয়, অফিসের উপরেও বর্তায়। কোনো একজনের ল্যাপটপে ‘অননুমোদিত’ প্রবেশাধিকার অর্থ হচ্ছে, পুরো অপারেশনই ঝুঁকিতে রয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠান আবার ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্কের উপর নির্ভর করছে, এটিও খুব বেশি করা ঠিক নয়। কারণ, অনেক প্রতিষ্ঠানই বিনামূল্যের ভিপিএন ব্যবহার করছে। আর এ ধরনের ভিপিএনে সবচেয়ে বড় সমস্যাই হলো গোপনতা, কারণ সার্ভারে এনক্রিপ্ট হওয়ার আগে ডেটায় প্রবেশাধিকার পাচ্ছে ভিপিএন সেবাদাতা, ফলে তৈরি হচ্ছে আরেকটি সম্ভাব্য ঝুঁকি।

এ প্রসঙ্গে প্যাটারসনের পরামর্শ হচ্ছে ‘শূন্য বিশ্বাস’ সাইবার নিরাপত্তা প্রক্রিয়া প্রয়োগ করা উচিত প্রতিষ্ঠানগুলোর। কোনো ডিভাইস ও নেটওয়ার্ক যে নিরাপদ নয়, তা বুঝতে হবে অফিসগুলোকে। এটি বুঝে কর্মীদেরকে মাল্টি ফ্যাক্টর অথেনটিকেশনের মতো বাড়তি নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ দিতে হবে কর্তৃপক্ষের। প্রয়োজনে অফিসের পক্ষ থেকে ফেশিয়াল রিকগনিশন বা ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানের মতো বায়োমেট্রিক লগইনের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।

“আমার মনে হয় বাসা থেকে কাজ করা কর্মীরা এতে আগে থেকেই মোটামুটি অভ্যস্ত। তারা এর মধ্যেই অন্যান্য বেশ কিছু অ্যাপে প্রবেশের জন্য এটি ব্যবহার করে থাকে”। – বলেছেন প্যাটারসন।





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar