ad720-90

ব্রাজিলে সিনোভেকের টিকার চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু


করোনাভাইরাসের টিকা তৈরির কাজ করছেন গবেষকেরা। ছবি: রয়টার্সকরোনা ঠেকাতে চীনের সিনোভেকের তৈরি টিকাটি গতকাল মঙ্গলবার ব্রাজিলে পরীক্ষার চূড়ান্ত পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। সেখানে স্বেচ্ছাসেবীরা টিকাটির প্রথম ডোজ পেয়েছেন। মহামারি ঠেকাতে টিকাটি দৃশ্যপট বদলে দেবে বলে কর্মকর্তারা আশা করছেন।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, সিনোভেক বায়োটেকের তৈরি ‘করোনাভেক’ নামের টিকাটি বিশ্বের তৃতীয় টিকা হিসেবে হিসেবে তৃতীয় ধাপে প্রবেশ করেছে। বড় আকারের এই পরীক্ষাটি নিয়ন্ত্রকদের টিকার অনুমোদন দেওয়ার সর্বশেষ ধাপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

ব্রাজিলে ৯ হাজার স্বাস্থ্যকর্মীকে করোনাভেক টিকাটি দেওয়া হবে। তিন মাসের এ গবেষণা পর্যায়ে দুই ডোজ করে টিকা দেওয়া হবে। পরীক্ষাটি চালানোর জন্য ব্রাজিলের জনস্বাস্থ্য গবেষণা কেন্দ্র বুটানটান ইনস্টিটিউটের সঙ্গে কাজ করছে সিনোভেক। টিকাটি নিরাপদ ও কার্যকর প্রমাণ হলে চুক্তি অনুযায়ী ব্রাজিলের প্রতিষ্ঠানটি ১২ কোটি ডোজ টিকা তৈরি করতে পারবে।

যুক্তরাষ্ট্রের পর করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ভুক্তভোগী দেশ ব্রাজিল। সোমবার দেশটিতে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৮০ হাজার ছাড়িয়েছে। সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা ২১ লাখ ছাড়িয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোতে এখনো করোনা দ্রুত ছড়াচ্ছে বলে টিকা উৎপাদনকারীদের আদর্শ পরীক্ষা কেন্দ্র হয়ে উঠছে এ অঞ্চল।

ব্রাজিল সিনোভেকের পাশাপাশি আরেকটি পরীক্ষামূলক টিকা পরীক্ষাকেন্দ্রে রূপ নিয়েছে। যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাটির তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা ব্রাজিলে হচ্ছে। ব্রাজিলে অক্সফোর্ডের টিকা কার্যকর ও নিরাপদ প্রমাণিত হলে সিনোভেকের মতোই একই চুক্তিতে তারা টিকা উৎপাদন করতে পারবে। অক্সফোর্ডের টিকাটির তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা যুক্তরাজ্য ও দক্ষিণ আফ্রিকাতেও চালানো হচ্ছে।

ব্রাজিলের স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রকেরা গত সোমবার ঘোষণা দিয়েছে, তারা আরও দুটি টিকার প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার অনুমোদন দিচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাজ্যের ফাইজার ও জার্মানির বায়ো এন টেকের টিকা।

বিশ্বব্যাপী গবেষকেরা দ্রুত টিকা বাজারে আনতে প্রতিযোগিতা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্বব্যাপী ১৫০ টির বেশি টিকা প্রকল্প চালু রয়েছে।
গত সোমবার ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল ‘দ্য ল্যানসেট’ দুটি টিকার দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষায় নিরাপদ ও প্রতিরোধী ক্ষমতা তৈরির ফল প্রকাশ করে। একটি হচ্ছে অক্সফোর্ডের টিকা ও অন্যটি ক্যানসিনো বায়োলজিকস ও বেইজিং ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজির তৈরি টিকা।
বাংলাদেশে চীনের সিনোভেক কোম্পানির তৈরি টিকার তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার (ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল) নৈতিক অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল (বিএমআরসি)।আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) এই পরীক্ষা চালাবে। এ সংস্থার পেশ করা প্রটোকলের পরিপ্রেক্ষিতে গত রোববার এই অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দেশের সাতটি হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর এ টিকার পরীক্ষা চলবে। মোট ২ হাজার ১০০ জনের ওপর এই টিকা প্রয়োগ করা হবে।

যে সাতটি প্রতিষ্ঠানে টিকার পরীক্ষা হবে, সেগুলো হলো মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বার্ন ইউনিট-১, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুয়েত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ইউনিট-২ এবং ঢাকা মহানগর হাসপাতাল।

এ মাসেই টিকার পরীক্ষা বাংলাদেশে শুরু হচ্ছে বলে গত ২৯ জুন প্রথম আলোতে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar