ad720-90

জাতিসংঘকেও মিয়ানমারের অপরাধের তথ্য দিল না ফেসবুক


ফেসবুকমিয়ানমার নিয়ে জাতিসংঘের তদন্ত কমিটির প্রধান অভিযোগ করেছেন, ভয়াবহ আন্তর্জাতিক অপরাধের তথ্য–প্রমাণ দেয়নি ফেসবুক। রোহিঙ্গা মুসলমান সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন নিয়ে তারা তদন্ত কর্মকর্তাদের সহায়তা করার কথা বললেও কোনো তথ্য–প্রমাণ তারা দিতে অস্বীকার করছে।

জাতিসংঘের ইনডিপেনডেন্ট ইনভেস্টিগেটিভ মেকানিজম অন মিয়ানমারের (আইআইএমএম) প্রধান নিকোলাস কোমজিয়ান বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্ট ফেসবুকের কাছে এমন সব উপাদান আছে, যা মারাত্মক আন্তর্জাতিক অপরাধের জন্য অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক এবং সম্ভাবনাময়। কিন্তু বছরব্যাপী আলোচনার পরেও তারা কোনো তথ্য দেয়নি।

আইআইএমএমের পক্ষ থেকে ফেসবুকের কাছে কী ধরনের তথ্য চাওয়া হয়েছে, সে বিষয়টি বিস্তারিত বলেননি তিনি। এ বিষয়ে ফেসবুকের পক্ষ থেকেও কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

রোহিঙ্গা গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) মুখোমুখি হতে হচ্ছে মিয়ানমারকে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ করে ৭ লাখ ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে। মিয়ানমার গণহত্যার বিষয়টি অস্বীকার করেছে। তারা বলছে, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সেনারা অভিযান চালিয়েছে।

জাতিসংঘের তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, ফেসবুক মিয়ানমারে ঘৃণ্য বক্তব্য ছড়াতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল, যাতে সহিংসতা বেড়ে গিয়েছিল।

ফেসবুকের ভাষ্য, তারা ঘৃণ্য বক্তব্য ছড়ানো ঠেকাতে কাজ করছে এবং সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত জ্যেষ্ঠ সেনাদের অ্যাকাউন্ট মুছে দিয়েছে। কিন্তু ওই তথ্য সংরক্ষণ করে রেখেছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল ২০১৮ সালে আইআইএমএম প্রতিষ্ঠা করে, যাতে মিয়ানমারের আন্তর্জাতিক অপরাধের প্রমাণ জোগাড় করে ভবিষ্যৎ শুনানিতে ব্যবহার করা যায়।

নিকোলাস কোমজিয়ান অভিযোগ করেন, ‘এ পর্যন্ত জাতিসংঘের মেকানিজম ফেসবুকের পক্ষ থেকে কোনো তথ্য পায়নি। কিন্তু এ নিয়ে আলোচনা চালিয়েই যাচ্ছে ফেসবুক। আশা করব, ফেসবুকের কাছ থেকে মেকানিজম গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ পাবে।’

গত সপ্তাহে গাম্বিয়ার একটি দাবি ফেসবুক কর্তৃক আটকে দেওয়ার প্রচেষ্টা দেখে নিকোলাস কোমজিয়ান এ মন্তব্য করেছেন। গাম্বিয়ার পক্ষ থেকে মিয়ানমার সেনা ও পুলিশের বিভিন্ন পোস্ট ও যোগাযোগের তথ্য চাওয়া হয়। ফেসবুক ওই তথ্য দিতে অনীহা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ডিসট্রিক্ট কোর্টে ওই আবেদন বাতিল করার দাবি করে। ফেসবুকের ভাষ্য, আইসিজে যে আদেশ দিয়েছেন, তা যুক্তরাষ্ট্রের আইনের পরিপন্থী। যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী ইলেকট্রনিক যোগাযোগের সেবাগুলো ব্যবহারকারীর যোগাযোগের তথ্য প্রকাশ করতে পারবে না।

গত সপ্তাহে ফেসবুক জানায়, তারা গাম্বিয়ার অনুরোধ রাখতে বাধ্য নয়, তবে তারা আইআইএমএমের সঙ্গে কাজ করবে।

রোহিঙ্গাদের গণহত্যার বিপদ থেকে সুরক্ষায় আইসিজে গত ২৩ জানুয়ারি সর্বসম্মতভাবে মিয়ানমারের প্রতি চার দফা অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এগুলো মেনে চলা মিয়ানমারের জন্য বাধ্যতামূলক। তারা আইসিজের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবে না। নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) আদেশ প্রত্যাখ্যান করেছে মিয়ানমার।

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর মিয়ানমার সরকারের দীর্ঘ কয়েক দশকের জাতিগত বৈষম্য ও নিপীড়ন এবং ২০১৭ সালের সেনা অভিযানের পটভূমিতে গাম্বিয়া আইসিজেতে সুরক্ষার আবেদন করে।





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar