ad720-90

ফোর্টনাইট মুছে দেওয়ায় বিপাকে শিশুরা!


ফোর্টনাইট মুছে দেওয়ার ঘটনাটিকে এভাবেই জানিয়েছেন ভারতের ব্যাঙ্গালুরুর বাসিন্দা ১১ বছর বয়সী জ্যাক এরিকা। “আমি শুধু এই গেইমটাই খেলি।” – বলেছেন তিনি। “আমি মোটেও খুশি নই, আমার মনে হয় না এটা ভালো পদক্ষেপ।”

ফোর্টনাইট খেলার কাজে আইপ্যাড ব্যবহার করেন ক্ষুদে এ গেইমার। শুধু জ্যাক এরিকা নন, অ্যাপল, গুগল ও ফোর্টনাইট বিতণ্ডতার কারণে বিশ্বব্যাপী আরও অনেক শিশু-কিশোর বয়সী গেইমারের বিনোদন ও সামাজিকতার একমাত্র পথ আটকে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।    

গোটা বিশ্বে ফোর্টনাইটের ৩৫ কোটিরও বেশি খেলোয়াড় রয়েছেন। গেইমটি স্বল্পবয়সীদের মধ্যে বেশি জনপ্রিয়। করোনাভাইরাস মহামারীর এ সময়টিতে বড়দের মতো শিশুদেরও ঘরে থাকতে হচ্ছে। তাদের সময় কাটানোর মূল অবলম্বন হয়ে উঠেছে গেইমস।

ফোর্টনাইট দুনিয়ায় বন্ধুর সঙ্গে খেলার পাশাপাশি গল্প করার সুযোগটি আগের চেয়েও অনেক বেশি মূল্যবান হয়ে উঠেছে স্বল্পবয়সীদের কাছে। প্রায় সব ডিভাইস থেকে বিনামূল্যে ফোর্টনাইট খেলতে পারার ব্যাপারটিও বড় একটি সুবিধা।

বৃহস্পতিবার অ্যাপল ও গুগল নিজ নিজ অ্যাপ স্টোর থেকে ফোর্টনাইট মুছে দিয়েছে। ফোর্টনাইটের বিরুদ্ধে অভিযোগ, অ্যাপ স্টোরের ‘ইন-অ্যাপ পারচেস’ নীতি মানেনি গেইমটি। সিএনএন, বিবিসি, নিউ ইয়র্ক টাইমসের মতো বড় বড় সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে এ নিয়ে।

শিশুরা ওই শিরোনাম বুঝতে না পারলেও, খবর ঠিকই পেয়েছে ফোর্টনাইট বন্ধ হওয়ার। বুঝতে পেরেছে গেইম অ্যাপ স্টোরে না থাকার মানে নতুন করে ডাউনলোড করা যাবে না, আপডেট আসবে না। স্বল্পবয়সীদের জন্য সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা পালন করেছে ইউটিউব।

লন্ডনের আট বছর বয়সী বাসিন্দা ক্যালকাম জ্যাক ফোর্টনাইট বন্ধের খবর পান সকাল ৬টায়, এশিয়া অঞ্চলের বন্ধুদের কাছ থেকে। তিনি বলেছেন, “পুরো ইউটিউব জুড়েই” ছিল ফোর্টনাইট বন্ধের খবর।

করোনাভাইরাস মহামারী শুরু হওয়ার পর থেকেই প্রতিদিন ১০ ঘণ্টা করে অনলাইনে ফোর্টনাইট খেলছিলেন ক্যালকাম জ্যাক। কানাডা ও ভারতের মতো স্থানে থাকা বন্ধুদের সঙ্গে মিলে কোনো কিছু তৈরি করা ও গল্প করায় ব্যস্ত থাকতেন তারা। কিন্তু বর্তমান অবস্থায় ফোর্টনাইট না থাকায় জ্যাকের সামাজিক জীবন ও যোগাযোগ ব্যহত হচ্ছে।

“ছুটিতে আসার পর থেকে এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। আমরা সবসময় খেলতাম।” – বলেছেন জ্যাক।

এরই মধ্যে ফোর্টনাইট মালিক এপিক গেইমস অ্যাপলের নীতিমালা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ও আইনের আশ্রয় নিয়েছে, অ্যাপের “ইন-অ্যাপ পারচেস” আয়ের ৩০ শতাংশ নিয়ে যাওয়ায় সমালোচনা করেছে। ব্যবহারকারীদেরকে স্বল্প খরচে সরাসরি এপিক থেকে কেনার সুযোগ করে দিয়েছিল ফোর্টনাইট মারিক। আর এতেই চটেছে প্রথমে অ্যাপল, পরে গুগল।

“এপিক অ্যাপলের মুনাফা কমিয়ে দিচ্ছিল।” – বলেছেন ভারতের বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা ১৩ বছর বয়সী জোরান কামাল।

বৃহস্পতিবার অ্যাপলের ১৯৮৪ সালের বিখ্যাত বিজ্ঞাপনকে কটক্ষ করে ফোর্টনাইটের ভেতরে, ইউটিউবে ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপন ছেড়েছে এপিক, সঙ্গে জুড়ে দিয়েছে হ্যাশট্যাগ “ফ্রিফোর্টনাইট”। সামাজিক মাধ্যমে ট্রেন্ডিংয়ে চলে এসেছিল হ্যাশট্যাগটি। টিকটকে প্রায় দুই কোটি ৬০ লাখ ভিউ পেয়েছে ভিডিওটি।

“আমার বন্ধুদের ধারণা, তর্কে ফোর্টনাইট-ই জিতবে। অনেক মানুষ ফোর্টনাইট খেলে, তারা অ্যাপলের বিপক্ষে দাঁড়াবে।” – বলেছেন এরিকার।

আর আইপ্যাডে গেইম কাজ না করলে বিকল্প খুঁজে নেওয়ার কথা বলেছেন জ্যাক। তিনি বলেছেন, “আমি আমার পিএস৪ এ গেইম খেলবো”।





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar