ad720-90

‘অতি গোপনীয়’ আইপড তৈরিতে সহায়তা করেছিল অ্যাপল


সাবেক অ্যাপল সফটওয়্যার প্রকৌশলী ডেভিড শায়ার জানিয়েছেন, অ্যাপলের শুধু চার জন জানতেন ওই প্রকল্প সম্পর্কে। বিবিসি প্রতিবেদন বলছে, ২০০৫ সালে ‘ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ এনার্জি’ থেকে দুই জন প্রতিরক্ষা ঠিকাদার এসে হাজির হন অ্যাপলের দোরগোড়ায়। তারা এমন একটি আইপড তৈরির কাজে সাহায্য চেয়েছিলেন যা দেখতে আর দশটি সাধারণ আইপডের মতোই হবে, কিন্তু ভেতরে লুকোনো হার্ডওয়্যার দিয়ে গোপনে ডেটা রেকর্ড করতে পারবে।

শায়ার জানিয়েছেন, গোপন ওই ডিভাইসের জন্য আইপডের কাস্টম সংস্করণের সফটওয়্যার বানাতে প্রকৌশলীদের সাহায্য করেছিল অ্যাপল। “তারা সতর্ক ছিল যাতে আমি হার্ডওয়্যারটি কখনও না দেখি। আমিও কখনও দেখিনি।” – অ্যাপল নিউজলেটার টিডবিটসের জন্য লেখা দীর্ঘ এক পোস্টে বলেছেন শায়ার।

শায়ারের দেওয়া তথ্য অনুসারে, প্রতিরক্ষা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বেকটেল থেকে এসেছিলেন ওই দুই প্রকৌশলী। অ্যাপলের ভবনে কয়েক মাস ধরে কাজ করেছেন তারা। “তারা আইপডে কিছু কাস্টম হার্ডওয়্যার যোগ করতে চেয়েছিলেন এবং ওই কাস্টম হার্ডওয়্যার থেকে আইপড ডিস্কে এমনভাবে ডেটা রেকর্ড করতে চেয়েছিলেন যা সহজে শনাক্ত করা যাবে না।”

“তারপরও ডিভাইসটিকে সাধারণ আইপডের মতোই দেখতে এবং কাজ করতে হতো।” – বলেছেন শায়ার।

ওই দুইজনকে ডিভিডিতে আইপড সিস্টেমের সোর্স কোড দেওয়া হয়েছিল এবং তারা নিজেদের ডিভাইস নিয়ে এসেছিলেন পরীক্ষা চালানোর জন্য। “ব্যাপারটি বেকটেলের সঙ্গে কোনো চুক্তি ও লেনদেনের বিনিময়ে সহযোগিতা ছিল না। এটি ছিল ডিপার্টমেন্ট অফ এনার্জিকে অ্যাপলের গোপনে দেওয়া একটি সুবিধা।” 

শায়ার অবশ্য কখনই জানতে পারেননি ঠিক কী তৈরি করেছিলেন ওই প্রকৌশলীরা। তবে, তার সন্দেহ “নিঃশব্দ গাইগার কাউন্টারের মতো কিছু একটা” তৈরি করেছিলেন তারা যা দিয়ে নজর এড়িয়ে বিকিরণ পরিমাপ সম্ভব হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘ডিপার্টমেন্ট অফ এনার্জি’ অন্যান্য কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি পরমাণবিক শক্তি নিয়ে কাজ করে।                      

ওই সময়ের অন্যান্য অ্যাপল কর্মীও ঘটনাটি সত্য বলে জানিয়েছেন। অ্যাপলের আইপড বিভাগের প্রধান ছিলেন টনি ফ্যাডেল এবং শুরুর দিকে আইপড বিষয়ে গবেষণা ও উন্নয়নের পুরোটাই তার তত্ত্বাবধানে হয়েছিল বলে তার আরেক পরিচয় ফাদার অফ দ্য আইপড। অ্যাপলের সেই সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট টনি ফ্যাডেল এক টুইটে লিখেছেন, ঘটনাটি “একদম সত্য” এবং এতে “কোনো সন্দেহ নেই”।

তিনি আরও বলেছেন, “ওই সময়ে মারাত্মক আকর্ষণীয় প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছিল সরকার … এখন শুধু কল্পনা করতে পারি বর্তমানে কী হচ্ছে।”   

অ্যাপল এখনও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেনি।

আইফোনের প্রধান বাজারজাতকরণ নীতির একটি হচ্ছে ‘গোপনতা’। বিগত কয়েক বছরে এ ব্যাপারে বেশ কয়েকবার বিতণ্ডতাতেও জড়িয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের ‘ডিপার্টেমেন্ট অফ জাস্টিস’-এর সঙ্গেও অনেক ব্যাপারে একমত হতে পারেনি অ্যাপল।

যে চারজন ঘটনাটি জানতেন, তাদের একজনও আর অ্যাপলে নেই। শায়ার বলছেন, “পিআর (জন সংযোগ) বিভাগে থাকা সবাই আপনাকে সততার সঙ্গে জানাবে অ্যাপলের এরকম কোনো প্রকল্পের রেকর্ড নেই।”





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar