ad720-90

অ্যাপ স্টোর থেকে ‘আনরিয়েল ইঞ্জিন’ বাদ দেওয়া যাবে না: আদালত


এ ব্যাপারে আদালতের ভাষ্য হচ্ছে, “এপিক গেইমস এবং অ্যাপলের একে অপরের বিরুদ্ধে মামলা-মকদ্দমা করার স্বাধীনতা রয়েছে, কিন্তু তাদের বিতণ্ডতায় অন্যদের ক্ষতি হওয়া উচিত নয়।”

সোমবার ফেডারেল বিচারক ইয়োভেন গনজালেস রজার্সের দেওয়া সিদ্ধান্ত সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রয়টার্স।

নিজ প্ল্যাটফর্মে সব অ্যাপের ‘ইন-অ্যাপ’ পারচেসের ১৫ থেকে ৩০ শতাংশ নিয়ে নেয় অ্যাপল। এই নিয়ম মানতে রাজি নয় ফোর্টনাইট নির্মাতা এপিক গেইমস। সরাসরি এপিক স্টোর থেকে ফোর্টনাইট গেইমারদেরকে নানাবিধ গেইমিং টুল কেনার সুযোগ করে দিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। ব্যাপারটি পছন্দ হয়নি অ্যাপলের, এপিকের চ্যালেঞ্জের জবাবে অ্যাপ স্টোর থেকে ফোর্টনাইট সরিয়ে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

পরে আদালতের শরণাপন্ন হয় এপিক গেইমস। এরই মধ্যে নিজেদের ডেভেলপার কর্মসূচী থেকেও এপিক গেইমসকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানায় অ্যাপল। এতে বাদ পড়বে এপিকের গ্রাফিক্স টুল আনরিয়েল ইঞ্জিন এবং ওই গ্রাফিক্স টুল ব্যবহারকারী অসংখ্য গেইম। অ্যাপল যাতে ওই কাজ না করতে পারে, সেজন্য আদালতের নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেছিল এপিক।

অ্যাপলও আদালতে পাল্টা অনুরোধে জানিয়েছিল, এপিক বিশেষ সুবিধা চাইছে যা তাদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়, ফোর্টনাইটের এ পরিণতি এপিকের নিজের কর্মফল।

ফেডারেল বিচারক গনজালেস রজার্সও এ ব্যাপারে অ্যাপলের সঙ্গে একমত। তিনি বলেছেন, এপিকের “ফোর্টনাইটকে ঘিরে বর্তমান দুর্দশা নিজস্ব কর্মফল”। ফোর্টনাইট অ্যাপ অ্যাপল প্ল্যাটফর্মে ফিরিয়ে নেওয়ার অনুরোধে সম্মতি দিতেও রাজি হননি বিচারক। কিন্তু আনরিয়েল ইঞ্জিনকে বাদ দিতে অ্যাপলকে মানা করেছেন তিনি। কারণ হিসেবে বলেছেন, আইফোন নির্মাতার নীতি ‘ফোর্টনাইট’ ভেঙেছে, আনরিয়েল ইঞ্জিন নয়।

একটি গেইম তৈরির সময় গেইম নির্মাতা প্রতিষ্ঠান গেইম ইঞ্জিন তৈরি করেন যার ওপর গেইমটির ভিত্তি থাকে। নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো ওই ইঞ্জিন লাইসেন্সিংয়ের মাধ্যমে অন্য গেইম নির্মাতাকেও ব্যবহার করতে দেয় যার ওপর ভিত্তি করে অন্য গেইমও তৈরি হতে পারে। যেমন এপিকের ফোর্টনাইট গেইমের আনরিয়েল ইঞ্জিন ব্যবহার করে মাইক্রোসফট ‘ফোর্জা স্ট্রিট’ গেইমটি তৈরি করেছে।

সোমবারের শুনানিতে অ্যাপল আইনজীবি রিচার্ড ডোরেনের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত মতবিনিময়কালে বিচারক বলেন, আইফোনে অ্যাপল অ্যাপ স্টোরের “কোনো প্রতিযোগিতা” দেখছেন না তিনি। বিচারক অ্যাপল আইনজীবির কাছে প্রশ্ন রাখেন, “প্রতিযোগিতা ছাড়া ৩০ শতাংশ চার্জ (অ্যাপ স্টোর কমিশন) কেন আসে? কেন এটি দশ বা বিশ শতাংশ নয়? ভোক্তারা এ থেকে কীভাবে লাভবান হচ্ছেন?”

ডোরেন উত্তরে জানান, ভোক্তারা আইফোন কিনবেন না কি অ্যান্ডয়েড, সে সিদ্ধান্ত ভোক্তারাই নিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে তিনি ‘প্রতিযোগিতা পূর্ব বাজার’-এর যুক্তি তুলে প্রতিষ্ঠান প্রধান টিম কুকের উত্তরেরই পুনরাবৃত্তি করেন। মার্কিন কংগ্রেসে অ্যান্টিট্রাস্ট শুনানিতে অ্যাপল প্রধান টিম কুক বলেছিলেন, এইসব পুরো বিষয় মিলেই একটি প্যাকেজ আকারে অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস-এর প্রতিযোগিতা চলে। প্রত্যুত্তরে বিচারক গনজালেস রজার্স বলেন, ‘অসংখ্য অর্থনৈতিক তত্ত্ব’ বলছে একটি ব্র্যান্ডে যুক্ত হওয়ার পর ভোক্তা চাইলেই চট করে অন্য ব্র্যান্ডে চলে যেতে পারে না।  ব্র্যান্ড পরিবর্তন ভোক্তার খরচ বাড়ায়।

ভার্চুয়াল শুনানির এক পর্যায়ে অ্যাপল আইনজীবিকে ‘মিউট’ করে দেন বিচারক গনজালেস রজার্স। আইনজীবি ডোরেন পরে বলেছেন, মামলায় অ্যাপল প্রমাণ করবে যে “মানুষ সব সময়ই ব্র্যান্ড পরিবর্তন করে”।   





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar