ad720-90

পেন্টাগনের জেডাই: পুনঃমূল্যায়নেও চুক্তি মাইক্রোসফটের


মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভাষ্যে, পুনঃমূল্যায়নেও সরকারের জন্য সেরা হিসেবে বিবেচিত হয়েছে মাইক্রোসফটের প্রস্তাব। রয়টার্স উল্লেখ করেছে, পুনঃমূল্যায়নের ফলাফল যা-ই বলুক না কেন, সামনে এগোচ্ছে না জেডাই চুক্তি। কারণ অ্যামাজনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ফেব্রুয়ারিতেই সাময়িকভাবে চুক্তিটিকে আটকে দিয়েছেন এক ফেডারেল বিচারক।

পুনঃমূল্যায়নে সন্তুষ্ট হতে পারেনি অ্যামাজন। শুক্রবার প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, “উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রাজনৈতিক স্বজনপ্রীতি ও কাল্পনিক সংশোধনী পদক্ষেপের মুখে হার মানবো না, এবং আমরা একটি সুষ্ঠু, বস্তুনিষ্ঠ এবং নিরপেক্ষ পর্যালোচনার জন্য লড়াই চালিয়ে যাব।”

প্রতিষ্ঠানটি আরও বলেছে, “পুনঃমূল্যায়নটি একটি ত্রুটিপূর্ণ, পক্ষপাতমূলক এবং রাজনৈতিকভাবে দূর্নীতিগ্রস্থ সিদ্ধান্তকে জায়েজ করার প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয়।” গত পর্যালোচনায় অ্যামাজন “বেশ কয়েক কোটি কোটি ডলার খরচ কম হবে এমন” প্রস্তাব দিয়েছে বলেও উল্লেখ করেছে।

হাজার কোটি ডলার মূল্যের ১০ বছর মেয়াদী ওই ক্লাউড কম্পিউটিং চুক্তিটির পুরো নাম ‘জয়েন্ট এন্টারপ্রাইজ ডিফেন্স ইনফাস্ট্রাকচার’, সংক্ষেপে জেডাই। নিজেদের সব কম্পিউটার নেটওয়ার্ককে একটি ক্লাউড সিস্টেমের অধীনে নিয়ে আসার লক্ষ্যেই বিশাল উদ্যোগ নিয়েছে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। কার্যাদেশ পাওয়া প্রতিষ্ঠানটির কাজ হবে ওই উদ্যোগের বাস্তবায়ন করা।

শুরুতে সবাই ধরেই নিয়েছিল যে জেডাই চুক্তি অ্যামাজনের ঘরে আসছে। কিন্তু গত বছরের অক্টোবরে সবাইকে অনেকটা অবাক করে দিয়ে চুক্তি জিতে নিয়েছিল মাইক্রোসফট। পরে আইনের আশ্রয় নেয় অ্যামাজন। 

চুক্তি অনুসারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিশ্লেষণ ও সেনাবাহিনীর গোপন তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে মাইক্রোসফটকে। জেডাই প্রকল্প সম্পন্ন হলে যুদ্ধক্ষেত্র থেকেই গুরুত্বপূর্ণ ডেটা ও ক্লাউডে প্রবেশাধিকার পাবে মার্কিন সেনাবাহিনী।

বিশাল অর্থমূল্যের এই চুক্তিটি বরাবরই ছিল আলোচনায়। শুরুতেই এর বাছাই প্রক্রিয়ার স্বচ্ছ্বতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে ওরাকল। তাদের অভিযোগ ছিল, এতে “বাড়তি খাতির” পাচ্ছে অ্যামাজন। বিচার চেয়ে ফেডারেল আদালতে মামলাও ঠুকে দিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। আদালতে টেকেনি সে অভিযোগ।

অ্যামাজন যখন চুক্তির দৌড়ে এগিয়ে সে সময় অনেকটা হুট করেই চুক্তি প্রক্রিয়ার স্বচ্ছ্বতা বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। এর মধ্যেই বেশ অনেকবার অ্যামাজন এবং প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস-এর সমালোচনাও করেছেন তিনি। আর অ্যামাজনের মালিকানাধীন প্রভাবশালী দৈনিক পত্রিকা ওয়াশিংটন পোস্ট যে ডনাল্ড ট্রাম্পের চক্ষুশুল সেটি অবশ্য পুরোনো খবর। ট্রাম্প এক পর্যায়ে বলে বসেন, “চুক্তি বিষয়ে অ্যামাজন ও পেন্টাগনের ব্যাপারে অসংখ্য অভিযোগ এসেছে”। আর সে কারণেই, প্রয়োজনে বিষয়টিতে ‘নাক গলাবে’ তার প্রশাসন।

সাম্প্রতিক পুনঃমূল্যায়ন ফলাফলকে স্বাগত জানিয়ে মাইক্রোসফট বলেছে, “সতর্ক পর্যালোচনার পর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে যে আমরাই সঠিক প্রযুক্তি এবং সেরা মূল্যায়ন দিতে পারব। আমরা কাজে নামতে প্রস্তুত।”

গত বছরের নভেম্বরে জেডাই চুক্তি নিয়ে মামলা করেছিল অ্যামাজন। প্রতিষ্ঠানটি অভিযোগ করেছিল, “মারাত্মক ভুল” করছে পেন্টাগন। “ট্রাম্পের অনুচিত চাপের জন্য” বেজোসের ক্ষতির লক্ষ্যে চুক্তিটি অ্যামাজনের কাছ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মার্ক এসপার অবশ্য ওই সময়ই জানিয়েছিলেন, মাইক্রোসফটকে ‘জেডাই’ চুক্তিটি দেওয়ার পেছনে পেন্টাগনের “পক্ষপাত” বিষয়ক কোনো কারণ নেই, ন্যায়সঙ্গতভাবেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পেন্টাগন।





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar