ad720-90

উইচ্যাট: ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ আটকে দিলেন বিচারক


মার্কিন ম্যাজিস্ট্রেট বিচারক লরেল বিলার জানিয়েছেন, উইচ্যাট নিষিদ্ধের বিষয়টি সংবিধানের প্রথম সংশোধনী সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন সামনে নিয়ে আসছে। মার্কিন সংবিধানের প্রথম সংশোধনী মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে।

পূর্ব নির্ধারিত সিদ্ধান্ত অনুসারে, রোববার যুক্তরাষ্ট্রে উইচ্যাট নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। ট্রাম্প প্রশাসন অ্যাপটির বিরুদ্ধে নিরাপত্তা ঝুঁকির অভিযোগ এনেছে। তাদের ভাষ্যে, অ্যাপটি রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাকে হুমকির সম্মুখীন করছে।

মার্কিন কর্তাব্যক্তিদের উদ্বেগ, অ্যাপটির মাধ্যমে মার্কিন ব্যবহারকারীদের ডেটা চীন সরকারের হাতে চলে যেতে পারে।

এ অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেছে উইচ্যাট এবং চীন। যুক্তরাষ্ট্রে নিষেধাজ্ঞার পুরো ব্যাপারটিকে “দূর্ভাগ্যজনক” বলে অভিহিত করেছিল উইচ্যাটের মালিক প্রতিষ্ঠান টেনসেন্ট।

যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ হওয়ার কথা ছিল টিকটকেরও। নিজেদের মার্কিন ব্যবসা বাঁচাতে ওরাকল ও ওয়ালমার্টের সঙ্গে অংশীদারিত্বে যেতে চাইছে প্রতিষ্ঠানটি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প অনেকটা হুট করেই জানান, টিকটকের নতুন চুক্তিতে ‘আশীর্বাদ’ রয়েছে তার। এর পরপরই টিকটককে নতুন করে সাত দিন সময় বাড়িয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। 

বিবিসি প্রতিবেদন বলছে, ওই ঘটনার পরপরই উইচ্যাটের পক্ষে রায় দিয়েছেন বিচারক।

উইচ্যাট প্রশ্নে আদালতে যা হলো

যুক্তরাষ্ট্রে উইচ্যাট নিষিদ্ধে নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। পরে ওই নির্বাহী আদেশকে আদালতে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল উইচ্যাট।

মার্কিন বিচার বিভাগ আদালতে বলেছিল, নির্বাহী আদেশ আটকে দিলে তা “রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা হুমকি নিরসনে রাষ্ট্রপতির সংকল্পে আঘাত হানতে পারে ও হতাশ করতে পারে।”

কিন্তু স্যান ফ্রান্সিসকোর আদালতে বিচারক বিলার বলেন, “চীন সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রীয় হুমকির ব্যাপারে আসা সাধারণ প্রমাণগুলো আমলে নেওয়ার মতো, তবে উইচ্যাটের কাছ থেকে আসা সুনির্দিষ্ট প্রমাণও ফেলে দেওয়ার মতো নয়।”

উইচ্যাটকে কেন নিষিদ্ধ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র?

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ, উইচ্যাট “ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে নেটওয়ার্ক কর্মকাণ্ড, অবস্থান ডেটা, ব্রাউজিং ও সার্চ হিস্টোরিসহ প্রচুর পরিমাণে ডেটা সংগ্রহ করে।”

কিন্তু অভিযোগ অস্বীকার করেছে টেনসেন্ট। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, উইচ্যাট অ্যাপের সব মেসেজই ব্যক্তিগত।

উইচ্যাট কতোটা জনপ্রিয় যুক্তরাষ্ট্রে?

সবমিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উইচ্যাটের প্রায় দুই কোটি ব্যবহারকারী রয়েছে। ব্যবহারকারীদের মধ্যে চীন এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ানদের সংখ্যাই বেশি। এদের অনেকের জন্যই উইচ্যাট ফোনের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। এটি অনেকটা একই প্ল্যাটফর্মে ফেইসবুক, অ্যামাজন, হোয়াটসঅ্যাপ, টিন্ডার এবং অন্যান্য আরও অনেক অ্যাপ ব্যবহার করার মতো।

নিজ দেশে যোগাযোগ থেকে শুরু করে অর্থ লেনদেনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজে উইচ্যাটের উপর নির্ভর করতে হয় অ্যাপটির ব্যবহারকারীদেরকে। 

উইচ্যাট কী আসলেই চীনের নির্দেশে চলে?    

উইচ্যাট ২০১১ সালে যাত্রা শুরু করেছে। চীনে এটি “সবকিছুর জন্য একক অ্যাপ” হিসেবে পরিচিত। সবমিলিয়ে উইচ্যাটের শতকোটি মাসিক ব্যবহারকারী রয়েছে। অন্যান্য চীনা সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্মের মতো উইচ্যাটকেও চীন সরকার অবৈধ মনে করে এমন কনটেন্ট সেন্সর করতে হয়।

মার্চের এক প্রতিবেদন জানিয়েছিল, জানুয়ারির এক তারিখ থেকে করোনাভাইরাস মহামারীর মতো ‘কি ওয়ার্ড’ সেন্সর করছিলো উইচ্যাট।

কিন্তু উইচ্যাট এনক্রিপশন ব্যবহার করে বলে দাবি করেছে। উইচ্যাটের দাবি, এনক্রিপশনের কারণে অন্য কেউ ব্যবহারকারীর মেসেজ পড়তে পারেন না। প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের সার্ভারে লেখা, অডিও এবং ছবি সংরক্ষণ করে না বলেও জানিয়েছে।

উইচ্যাট বলছে, প্রাপকের পড়া হয়ে গেলেই সব মুছে দেওয়া হয়।   





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar