ad720-90

ডেটা গোপনতা দিবস: ব্যক্তিগত তথ্য অর্থের মতোই মূল্যবান


বর্তমান বিশ্বে বেশিরভাগ মানুষের দিনের অনেকেটা সময় কাটে অনলাইনে। বেশিরভাগ কাজও হচ্ছে অনলাইনে। আর এই অনলাইন জগতের পুরোটাই ডেটা নির্ভর। প্রতিদিন অনলাইনে আদান প্রদান হচ্ছে অসংখ্য তথ্য। অনলাইনে তাই নিজের ডেটা সুরক্ষিত রাখাটাও একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

এই দিবসের উৎপত্তি কোথায়?

২০০৮ সালের জানুয়ারিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় প্রথম শুরু হয় ডেটা গোপনতা দিবস। ইউরোপের ‘ডেটা প্রোটেকশন ডে’ উদাযাপনের বিস্তারের মাধ্যমে ডেটা গোপনতা দিবস চালু করে যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডা।

১৯৮১ সালের ২৮ জানুয়ারিতে কনভেনশন ১০৮-এ স্বাক্ষরের মাধ্যমে স্বীকৃতি পায় ডেটা প্রোটেকশন ডে। আইনি প্রক্রিয়া মেনে গোপনতা এবং ডেটা সুরক্ষা বিষয়ে এটিই প্রথম আন্তর্জাতিক চুক্তি ছিলো।

ডেটা গোপনতা দিবসও উদযাপিত হয় প্রতি বছরের ২৮ জানুয়ারি। ২০১৪ সালের ২৭ জানুয়ারি দিনটিকে “ন্যাশনাল ডেটা প্রাইভেসি ডে” হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ১১৩তম মার্কিন কংগ্রেস। ইউরোপে এই দিনটিকে বলা হয় ‘ডেটা প্রোটেকশন ডে’

আনুষ্ঠানিকভাবে এই দিনটির প্রচারণা চালায় ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি অ্যালায়েন্স (এনসিএসএ)।

এক নজরে এই দিনের মাহাত্ম

কীভাবে গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার হচ্ছে, মজুদ করা হচ্ছে বা শেয়ার করা হচ্ছে সে বিষয়ে অনেকেই সচেতন নন। গ্রাহককে শক্তিশালী করা এবং প্রতিষ্ঠান যাতে ডেটা সুরক্ষায় পদক্ষেপ নেয় সে বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেওয়াই এই দিনের মূল লক্ষ্য।

এসিএসএ’র নির্বাহী পরিচালক কেলভিন কোলম্যান বলেছেন, “সাম্প্রতিক বছরে, গ্রাহকের ডেটার অপব্যবহারের বিষয়ে আমরা আরও বেশি বৈশ্বিক সচেতনতা দেখতে পেয়েছি, জিডিপিআর এবং সিপিআরএ’র মতো গোপনতা রক্ষা পদক্ষেপকে ধন্যবাদ।”

এ বছরের উপাত্ত

ডেটা গোপনতা দিবসের এ বছরের লক্ষ্য তথ্যের মূল্যে আলোকপাত করা। আপনি যদি ব্যক্তিগতভাবে নিজের গোপনতা আরও ভালোভাবে ব্যবস্থাপনা করতে চান এবং আপনার ডেটা কীভাবে সংগ্রহ হচ্ছে তা জানতে চান বা কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ডেটা সংগ্রহ করছে, মজুদ করছে ও সেগুলো ব্যবহার করছে, সব সময়ই মনে রাখবেন ব্যক্তিগত তথ্য অর্থের মতোই মূল্যবান। সুরক্ষিত রাখুন।

ব্যক্তিগতভাবে ডেটা সুরক্ষায় কী করা যেতে পারে?

>>> কেনাকাটার হিস্ট্রি, আইপি অ্যাড্রেস বা লোকেশন ব্যবসার ক্ষেত্রে মহামূল্যবান, অর্থের মতো। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সেবায় নিজের তথ্য দেওয়ার আগে বিবেচনা করে দেখুন কাকে তথ্য দিচ্ছেন। এই তথ্য দেওয়ার বদলে আপনি যে সেবা পাচ্ছেন তা যথেষ্ট কিনা ভেবে দেখুন।

>>> সেবা ব্যবহার করতে দেওয়ার আগেই লোকেশন, কন্টাক্টস লিস্ট এবং ছবি অ্যালবামের মতো তথ্য চায় অনেক অ্যাপ। এই তথ্যগুলো কাদের হাতে যাচ্ছে সে বিষয়ে সচেতন হন। ইন্টারনেটে সংযুক্ত ডিভাইসগুলো থেকে অব্যবহৃত অ্যাপ মুছে ফেলুন এবং অন্য অ্যাপগুলো আপডেটের মাধ্যমে নিরাপদ রাখুন।

>>> ওয়েব সেবা এবং অ্যাপের গোপনতা ও নিরাপত্তা সেটিংস দেখুন এবং তথ্য শেয়ারের ফিচারগুলো আপনার স্বস্তি থাকবে, এমন পর্যায়ে রাখুন। আলাদা আলাদা অ্যাপ ও সেবার গোপনতা ফিচার আলাদা। কিছুটা সময় নিয়ে এগুলো ঠিক করে নিন।

ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কী করণীয়?

>>> ডেটা সংগ্রহ করলে, তা সুরক্ষিত করুন। ডেটা ফাঁস হলে শুধু আর্থিক ক্ষতিই নয়, সম্মান এবং গ্রাহকের আস্থাও ক্ষতিগ্রস্থ হয়। গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত রাখতে যৌক্তিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিন। গ্রাহকের ডেটা ন্যায্য উপায়ে সংগ্রহ করা হচ্ছে এবং বৈধ কারণে সংগ্রহ করার বিষয়টি নিশ্চিত করুন।

>>>  গোপনতার একটি কর্মকাঠামো তৈরির পরিকল্পনা করুন। গবেষণা এবং নীতিমালা অবলম্বনের মাধ্যমে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি কর্মকাঠামো তৈরি করুন। প্রতিষ্ঠানের মধ্যে গোপনতার সংস্কৃতি গড়ে তুলুন।

>>> নিজ প্রতিষ্ঠানের তথ্য সংগ্রহের চর্চা যাচাই করে দেখুন। বোঝার চেষ্টা করুন আপনার ব্যবসায়ের ওপর কোন নীতিমালা আরোপ হয়। ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা বিষয়ে আপনার কর্মীদেরকে শিক্ষা দিন।

>>> কীভাবে গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ, ব্যবহার ও শেয়ার করা হচ্ছে, সে বিষয়ে স্বচ্ছ থাকুন। আপনার প্রতিষ্ঠানের কাছে গোপনতার বিষয়টি কেমন সে বিষয়ে সাধারণ মানুষের কাছে খোলাখুলি কথা বলুন।

>>> কেউ যদি আপনার হয়ে সেবা দিয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে তারা কীভাবে গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য জোগাড় ও ব্যবহার করছে, সে বিষয়ে আপনি নিজেও দায়বদ্ধ।

চলতি বছর ওয়েব কনফারেন্সের মাধ্যমে ডেটা গোপনতা দিবস উদযাপন করবে এনসিএসএ। এতে ডেটা সুরক্ষার বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরবেন এই খাতের বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিরা।





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar