ad720-90

দশকদীর্ঘ মামলায় ওরাকলের বিরুদ্ধে বড় জয় গুগলের


গুগলের বিরুদ্ধে ওরাকল মামলাটি ঠুকেছিল ২০১০ সালে। প্রতিষ্ঠানটির অভিযোগ ছিল, কোড কপি করে অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে ব্যবহার করে কপিরাইট লঙ্ঘন করেছে গুগল।

বর্তমানে গোটা বিশ্বের স্মার্টফোনের প্রায় ৭০ শতাংশই অ্যান্ড্রয়েড চালিত। মামলার রায় ওরাকলের পক্ষে গেলে শত শত কোটি মানুষ ক্ষতির মুখে পড়তেন।

এর আগে ওরাকলের পক্ষে রায় দিয়েছিল মার্কিন এক নিম্ন আদালত। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট সাম্প্রতিক রায়ে গুগলকে রেহাই দিয়েছে অভিযোগ থেকে। গুগলের পক্ষে রায়ে ৬-২ ভোটে সিদ্ধান্ত দিয়েছে আদালত।

ওরাকলের কোড কপি করার বিষয়টিকে মার্কিন কপিরাইট আইনের অধীনে “ন্যায্য ব্যবহার” হিসেবে গণ্য করেছে আদালত। উল্লেখ্য, গুগলের বিরুদ্ধে ১১ হাজারেরও বেশি কোড কপি করার অভিযোগ তুলেছিল ওরাকল।

নিজ লিখিত মতামতে বিচারক স্টিফেন ব্রেয়ার লিখেছেন, “ওরাকলের কপিরাইট এখানে প্রয়োগ করলে জনসাধারণ ঝুঁকির মুখে পড়বে।” অনেক প্রোগ্রামার ওরাকলের বিল্ডিং ব্লক ব্যবহার করেছেন এবং এ ব্যাপারে গভীরভাবে জানেন। এখন এ ধরনের পদক্ষেপে কম্পিউটার কোড “নতুন গ্রোগ্রামারদের ভবিষ্যত সৃজনশীলতাতে আবদ্ধ করে ফেলবে।” বিচারক সতর্ক করেন, সে ক্ষেত্রে “শুধু ওরাকলের হাতেই চাবি থাকবে।”

ওরাকল অবশ্য রায় নিয়ে একমত হতে পারেনি আদালতের সঙ্গে। তারা যে আদালতে রায়ের সঙ্গে গভীরভাবে দ্বিমত পোষণ করছে তা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ভাষ্যে, এটি গুগলের ক্ষমতাকে আরও বৃদ্ধি করবে এবং অন্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিযোগিতা করার ক্ষমতাকে কমিয়ে দেবে।

ওরাকলের মূখ্য আইনজীবি ডোরিয়ান ডালে এক বিবৃতিতে বলেছেন, “তারা জাভা চুরি করেছে এবং একটি দশক এ নিয়ে আইনি লড়াইয়ে পার করেছে, যেমনটা শুধু একজন একচেটিয়া সমর্থকই করতে পারে।”

“ঠিক এ ধরনের আচরণের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের এবং যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষরা গুগলের ব্যবসা অনুশীলন খতিয়ে দেখছেন।”

গুগল অবশ্য রায়টিকে গোটা সফটওয়্যার শিল্পের বিজয় হিসেবে অভিহিত করছে। “আজকে গুগল বনাম ওরাকলের মামলায় সুপ্রিম কো্র্টের সিদ্ধান্তটি উদ্ভাবন, আন্তঃব্যবহার্যতা এবং কম্পিউটিংয়ের জন্য বড় একটি বিজয়।” – লিখেছেন গুগলের বৈশ্বিক কর্মকাণ্ডের জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট কেন ওয়াকার।

তিনি আরও লিখেছেন, “দেশের নেতৃস্থানীয় উদ্ভাবক, সফটওয়্যার প্রকৌশলী এবং কপিরাইট স্কলারদের তাদের সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানাই।”

গুগলের জাভা কোড কপি করার বিষয়টি যে “ন্যায্য ব্যবহারের” অধীনে পড়েছে তা নিয়ে অধিকাংশ বিচারকই একমত। কিন্তু গতানুগিতক কপিরাইট আইনকে কীভাবে কম্পিউটার কোডে প্রয়োগ করা যায়, তা নিয়ে দ্বিমত পোষণ করেছেন তারা।

বিচারক ব্রেয়ার অধিকাংশের পক্ষে লেখার সময় স্বীকার করে নেন যে “গতানুগতিক কপিরাইট ধারণা প্রযুক্তিগত বিশ্বে প্রয়োগ করা কঠিন।”  

অন্যদিকে, বিরোধী মতামতে বিচারক ক্লেরেন্স টমাস লিখেছেন যে শুধু নতুন পণ্য তৈরি হচ্ছে এ ধারণা থেকে ন্যায্য ব্যবহারে অনুমোদন দেওয়া কার্যকরীভাবে গোটা ধারণাটিকেই নতুন করে সংজ্ঞায়িত করছে।

“নতুন সংজ্ঞাটি কপিরাইটকে বিদ্রুপ করছে।” – সতর্ক করেছেন টমাস।

তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, আদৌ কোড কপিরাইট যোগ্য কি না তা বিবেচনায় নিয়ে রায় দেননি অধিকাংশই। এর বদলে প্রশ্নটিকে তুলে রেখেছেন তারা এবং ন্যায্য ব্যবহারের উপর নির্ভর করেছেন।





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar