ad720-90

দুই অ্যান্টিট্রাস্ট মামলায় জয়, ফেইসবুক এখন ট্রিলিয়ন ডলারে


সামাজিক মাধ্যম জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ফেডারেল ট্রেড কমিশনের আনা (এফটিসি) অ্যান্টিট্রাস্ট অভিযোগটিকে বিচারক জেমস বোজবার্গ রায়ে “খুবই ধোঁয়াশা” বলে উল্লেখ করেছেন বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।

মার্কিন অঙ্গরাজ্যগুলির একটি জোটের দায়ের করা অপর এক পৃথক অ্যান্টিট্রাস্ট মামলাও একই আদালত খারিজ করে দিয়েছে। কারণ হিসেবে আদালত বলছে, সংশ্লিষ্ট ঘটনা “অনেক আগের”।

আদালতের এই রায়ের পরপরই ফেইসবুকের শেয়ার মূল্য শতকরা ৪.২ ভাগ বেড়ে ৩৫৫.৬৪ ডলারে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে সামাজিক মাধ্যম জায়ান্টটির বাজার মূল্য প্রথমবারের মতো এক ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের মাইলফলক পেরোলো।

মার্কিন ডিস্ট্রিক্ট অফ কলম্বিয়ার ইউএস ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের রায়ে বিচারক বোজবার্গ লিখেছেন, এফটিসির অভিযোগ “আইনগতভাবে অপর্যাপ্ত” এবং তাকে খারিজ করতে হয়েছে, কারণ এফটিসি তার দাবির সমর্থনে এমন “যথেষ্ট তথ্য দিতে ব্যর্থ” হয়েছে যে, ফেইসবুক প্রতিযোগিতাকে দমিয়ে রেখেছে।

মামলায় এফটিসির দাবি ছিল, প্রযুক্তি জায়ান্ট ফেইসবুককে, যা ইনস্টাগ্রাম এবং হোয়াটসঅ্যাপের মালিক, ভেঙে ফেলা হোক।

রায়ে বিচারক বোজবার্গ লেখেন, “অ্যান্টিট্রাস্ট আইনের আওতাভূক্ত পণ্য বাজারটি সঠিকভাবে সংজ্ঞায়িত এবং ফেইসবুকের আসলে কতটা ক্ষমতা ছিল এবং এখনও আছে সেটি এই মামলায় মূল প্রশ্ন। অভিযোগে এফটিসি এ বিষয়ে প্রায় কিছুই বলেনি।”

“ভাবটি এমন যে, এজেন্সি আশা করছে, আদালত কেবল প্রচলিত প্রজ্ঞার আলোকে বলে দেবে যে, ফেইসবুক একচেটিয়া সুবিধা ভোগ করছে।”

এই রায়কে এফটিসির জন্য একটি বড় আঘাত হিসেবেই দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি, কিছু বিশ্লেষক বলছেন, এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অ্যান্টিট্রাস্ট আইনের ভবিষ্যত প্রয়োগেও প্রভাব ফেলতে পারে। এই মামলায় এফটিসি অভিযোগগুলো পুনরায় দায়ের করতে পারে এবং এর জন্য সংস্থাটির হাতে ২৮ জুলাই পর্যন্ত সময় রয়েছে।

‘গত অর্ধ দশকে কিছুই করা হয়নি’

বিচারক বোজবার্গ পৃথক এক মামলায় এফটিসির সঙ্গে ৪৫টি মার্কিন অঙ্গরাজ্যের একটি জোটের আনা অ্যান্টিট্রাস্ট মামলাও খারিজ করে দিয়েছেন।

ওই মামলায় দাবি ছিল ফেইসবুককে ইনস্টাগ্রাম এবং হোয়াটসঅ্যাপ বিক্রি করে দিতে বাধ্য করা হোক। ফেইসবুক ২০১২ এবং ২০১৪ সালে অ্যাপ দুটি অধিগ্রহণ করে।

মার্চ মাসে, ফেইসবুক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আদালতে মামলাটি খারিজের আবেদন করে। সে সময় এফটিসির অভিযোগকে “অর্থহীন” হিসাবে বর্ণনা করে ফেইসবুক।

“ফেইসবুক যে তীব্র প্রতিযোগিতামূলক, গতিশীল ও উচ্চ-প্রযুক্তি শিল্পে কাজ করে, এফটিসির মামলাটি সেই বাস্তবতা বিবেচনায় নেয়নি।”

মামলার রায়ে বিচারক বোজবার্গ বলেন, কেন তারা (এফটিসি এবং ৪৫টি অঙ্গরাজ্য) ফেইসবুকের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিতে ছয় থেকে আট বছর অপেক্ষা করল, সে বিষয়ে তারা “যুক্তিসঙ্গত কারণ” দেখায়নি – যে যুক্তিটি ফেইসবুক আগেই তুলে ধরেছে।

তিনি আরও বলেন, অঙ্গরাজ্যগুলি “তথ্যভিত্তিক বক্তব্য” দিতে ব্যর্থ হয়েছে এবং কেবল দায়সারা যুক্তি দিয়েছে যে, ফেইসবুক পক্ষপাতদুষ্ট নয় বরং যেহেতু এটি একটি খুবই লাভজনক একটি প্রতিষ্ঠান ছিল এবং এখনও আছে, তার মানে হচ্ছে মামলা দেরিতে হওয়ায় ফেইসবুক উপকৃত হয়েছে।”

রায়ে বিচারক বোজবার্গ লেখেন, “এই হাই প্রোফাইল কাজগুলোর প্রায় সবগুলোই ছয় বছর আগে ঘটেছে – যখন অ্যাপল ওয়াচ বা অ্যালেক্সা বা পেরিস্কোপ বাজারে আসেনি, কেভিন ডুরান্ট তখনও ওকলাহোমা সিটি থান্ডারের হয়ে খেলেছিলেন এবং যখন ভাইরাস জগতে আধিপত্য ছিল ইবোলার।”

তিনি আরও বলেন, মামলাটি সহজেই ২০১২ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে দায়ের করা যেতে পারত।

“কংগ্রেস যে অ্যান্টিট্রাস্ট কাঠামো প্রতিষ্ঠা করেছে তাতে গত অর্ধ দশকে কিছুই না করার দায় বাদীরা এড়াতে পারেন না।”





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar